সওয়াচ গোষ্ঠীর সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে অবস্থিত । এটি হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতঘড়ি তৈরী ও বিক্রির প্রতিষ্ঠান । এর হাতঘড়ি বিক্রির পরিমাণ বিশ্বে মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে ।
সারা বিশ্বে সওয়াচ গোষ্ঠীর ১৬০টি উত্পাদন কেন্দ্র রয়েছে । যা প্রধানত সুইজাল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানী, ইটালি, যুক্তরাষ্ট্র , ভার্জিন দ্বীপপঞ্জ, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং চীনে অবস্থিত । এই গোষ্ঠীর হাতঘড়ির প্রায় ১৬টি ট্রেডমার্ক রয়েছে । এর মধ্যে জনপ্রিয় ট্রেডমার্ক হল ওমেকা, টিসোট, লংজিনস, রেডো, সিকে, সওয়াচ, ফ্লিক ফ্লাক, মিডো, ব্রেগুয়েট, হামিল্টন ইত্যাদি ।
হাতঘড়ি ছাড়া সওয়াচ গোষ্ঠী বিজ্ঞান প্রযুক্তি গবেষণা এবং নতুন পণ্য উত্পাদন করে । মাইক্রো ইলেকট্রনিক মারিন এবং মাইক্রো মিকেনিকস হল গোষ্ঠীর ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ অংশ । তা ছাড়া সওয়াচ গোষ্ঠী টেলিযোগাযোগ, গাড়ি এবং ক্রীড়া কার্যক্রমের জন্য পরিসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অংশ নেয় । এর মধ্যে অলিম্পিক গেমসের জন্য সময় হিসাব করার যন্ত্রপাতি ও পরিসেবা দিয়ে থাকে ।
২০০৪ সালে উচ্চমূলোর হাতঘড়ি ভালভাবে বিক্রি হওয়ায় গোষ্ঠীর মোট আয় ৪.১৫ বিলিয়ন সওয়িস ফ্রান্ক হয়েছে, যা ২০০৩ সালের চেয়ে ৪.৭ শতাংশেরও বেশি । এর মধ্যে উচ্চমূলোর হাতঘড়ির বিক্রি আয় ২০০৩ সালের অনুরূপ সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি ছিল । ওমেগা ট্রেডমার্কের হাতঘড়ির বিক্রির সংখ্যা অব্যাহতভাবে বেড়েছে । বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে বিক্রিয় দামও বেড়েছে ।
সওয়াচ গোষ্ঠীর পথচলা ১৯৭৮ সালে শুরু হয় । তখন সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি শিল্প জাপানী ঘড়ি শিল্পের প্রতিযোগিতার মুখে ছিল হয় । ডাক্তার এনস্ট থোমকে তাঁর প্রযুক্তি কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জাপানী হাতঘড়ির চেয়ে আরো ভালো ও ফ্যাশনেবল হাতঘড়ি তৈরী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন । ছয় মাসের মধ্যে তাঁরা সফলভাবে নতুন হাতঘড়ি তৈরী করে এবং নাম দেয় সওয়াচ । সওয়াচের ইংরেজী বানান হল এস.ডাব্লিউ.এ.টি.সি.এইচ.। এর প্রথম অক্ষর এসের অর্থ হল সওয়াচ হাতঘড়ির জন্মস্থান সুইজারল্যান্ড এবং লোকদের সেকেন্ড হাতঘড়ি । লোকেরা নতুন পোশাক কেনার মতো দুই বা তাতাঠিক হাতঘড়ি কিনতে পারেন । সওয়াচ হাতঘড়ি নতুন ধরনের গুণগতমানের হাতঘড়ি এবং লোকদের জন্য নতুন ধারণা নিয়ে আসে । হাতঘড়ি শুধু দামী পণ্য এবং সময় হিসাব করার যন্ত্র নয় । এটি তা হল মানুষের হাতের ফ্যাশন ।
সওয়াচ হাতঘড়ি ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়ার জন্য তারা বিশ্বের অনেক কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতামূলক ব্যবসা চালু করেছে এবং অনেক ক্রীড়া কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে । যেমন, ১৯৯৮ সালের শরত্কালে সওয়াচ গোষ্ঠী মার্সিডিজ বেনস গাড়ি কোম্পানির সঙ্গে সমার্ট শীর্ষক সিদান গাড়ি উত্পাদন করেছে । ক্রীড়া ক্ষেত্রে সওয়াচ গোষ্ঠী ১৯৯৬,২০০০,২০০৪ সালের অলিম্পিক গেমসে সময় হিসাব করার যন্ত্রপাতি প্রদান করেছে এবং ২০০৮ সালে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের অংশীদার হিসেবে আবার সময় হিসাব করার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে ।
|