v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-03-13 18:14:24    
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ২০০৭ সালের প্রথম অধিবেশন শুরু

cri

    জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ১২ মার্চ জাতিসংঘের ইউরোপীয় সদর দপ্তর -- জেনেভার জাতিগত প্রাসাদে এ বছরের প্রথম অধিবেশনের আয়োজন করেছে।

 তিন সপ্তাহব্যাপী অধিবেশনে পূর্বের মানবাধিকার কমিটির অধিনস্থ সংস্থাগুলোর দাখিল করা বিভিন্ন রিপোর্ট , নিয়মিত পর্যালোচনা ব্যবস্থা কার্যগ্রুপের অগ্রগতি রিপোর্ট এবং মানবাধিকার পরিষদের চারটি বিশেষ অধিবেশনের সিদ্ধান্তের কার্যকরীকরণের অবস্থা পর্যালোচনা করা হবে। তা ছাড়াও অব্যাহতভাবে মানবাধিকার পরিষদের বিভিন্ন কাজের নিয়মকানুন নিয়েও আলোচনা হবে। এ ছাড়াও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংস তত্পরতা নিষ্পত্তি করা ও প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুরক্ষা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

 গত বছরের জুন মাস থেকে পরিচালিত জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ হচ্ছে জাতিসংঘ সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ফসল। এর আগের মানবাধিকার কমিটি পাশ্চাত্য দেশগুলোর উন্নয়নশীল দেশের ওপর চাপ দেয়ার রাজনৈতিক হাতিয়ারে ও দক্ষিণ-উত্তর রাজনৈতিক বৈরিতার মঞ্চে পরিণত হয়েছিল বলে সুনাম হারিয়েছিল, ফলে গত বছর তা ভেঙ্গে যায়। ৬০ বছর ইতিহাসসম্পূর্ণ মানবাধিকার কমিটির তুলনায় নতুন প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার পরিষদের সর্বাধিক অগ্রগতি দু'দিক থেকেই প্রতিফলিত হচ্ছে। একটা হচ্ছে তার জনপ্রিয়তা। নিয়মিত পর্যালোচনা ব্যবস্থা নির্ধারিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সমানভাবে এ পর্যালোচনাকে গ্রহণ করতে হয়। আগেকার বাছাই ও দ্বৈত মানদন্ড বাতিল হয়েছে। দ্বিতীয় হচ্ছে তার স্বাভাবিকীকরণ। আগে এই অধিবেশন প্রতি বছর ছয় সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত হতো। বর্তমানে বছরে তিন বার অধিবেশন আয়োজিত হয়। অধিবেশন চলার স্থায়ীত্ব কমপক্ষে দশ সপ্তাহ । দরকার হলে অস্থায়ী বিশেষ অধিবেশনেরও আয়োজন করা যায়।

 গত বছর মানবাধিকার পরিষদ জুন , সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর তিন বার অধিবেশনের আয়োজন করেছে এবং মানবাধিকার সুরক্ষা ক্ষেত্রে কয়েকটি সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। আরব ও ইস্রাইলের সংঘর্ষ সম্পর্কে একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি নতুন সংস্থা হিসেবে মানবাধিকার পরিষদ এখনো অন্তবর্তীকাল ও নতুন নিয়মকানুন প্রণয়নের যুগে রয়েছে। এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক কক্ষপথে তার প্রবেশ হয় নি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিয়মিত পর্যালোচনা ব্যবস্থার সুনির্দিষ্ট কার্যকরী পদ্ধতি এ বছরের প্রথমার্ধে প্রকাশিত হবে। গত বছর পরিষদের প্রথম অধিবেশনে মানবাধিকার কমিটির স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ও কার্যক্রম গ্রুপ এবং বিশেষ প্রতিবেদকদের ক্ষমতা এক বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এবারের অধিবেশনে ফিলিস্তিন, লেবানন, বুরুনডি, লাইবেরিয়া ও সুদানসহ কয়েকটি দেশের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ গ্রুপের দাখিল করা রিপোর্টগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।

 অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের চেয়ারম্যান, জেনেভায় জাতিসংঘস্থ মেক্সিকোর প্রতিনিধি লুইস আলফোন্সো দে আলবা জোর দিয়ে বলেছেন, মানবাধিকার পরিষদের উচিত সত্যিকার সহযোগিতা জোরদার করা, পূর্বের মানবাধিকার কমিটির "বাছাই করা, রাজনীতিকীকরণ ও দ্বৈত মানদন্ড" অনুসরণ করার ব্যবস্থা পরিবর্তন করা, ন্যায়সংগত ও সুষম ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন এক টেলিভিশন ভাষণে আশা প্রকাশ করেছেন যে, মানবাধিকার পরিষদ সহযোগিতাকে সমন্বয় করে নিয়মিত পর্যালোচনার ব্যবস্থা করবে।

 মানবাধিকার পরিষদ প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে ঘোষিত হয়েছে যে, সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে এবং উন্নয়নের অধিকারসহ মৌলিক মানবাধিকারের ওপর মনোযোগ দেবে। কিন্তু মানবাধিকার সমস্যায় উন্নয়নশীল দেশ ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যকার লক্ষ ভিন্ন। এটা মূল্যবোধ, ধর্ম ও সংস্কৃতির পার্থক্যসহ নানা ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত। এখন মানবাধিকার ক্ষেত্রে দু'পক্ষের অসংগতি স্পষ্ট হয়েছে। গত বছরের কয়েক বারের বিশেষ অধিবেশনে উন্নয়নশীল দেশগুলো সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের ভূভাগ দখল করা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করার জন্য ইস্রাইলের নিন্দা করেছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোকে চাপ দেয়ার জন্য পাশ্চাত্য দেশগুলো দারফুর সমস্যাকে ফলাও করে প্রচার করেছে।

 সত্যিকারভাবেই সংলাপ ও সহযোগিতা পদ্ধতির মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানবাধিকারের অগ্রগতি বাস্তবায়ন করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে ঐতিহ্যবাহী পুরনো ধারণা বাদ দিয়ে নতুন পদ্ধতিতে মানবাধিকার সমস্যাকে বিবেচনা করা উচিত। কেবল এভাবেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাজের নতুন দিগন্তকে উন্মোচন করা যায়।