v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-03-12 19:33:06    
শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া কোরকোজ জাতির এক পরিবার

cri
    কোরকোজ জাতি হচ্ছে চীনের ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতির মধ্যে একটি। কোরকোজ জাতির লোকের সংখ্যা খুব কম। তাদের বেশির ভাগ উত্তরপশ্চিম চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কোজলেসু কোরকোজ স্বায়ত্তশাসিত বিভাগে বাস করেন। কোরকোজ মানে পাহাড়ী এলাকার যাযাবর। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার আগে কোরকোজ জাতি যাযাবর লোকদের শিক্ষা গ্রহণের হার ছিল ১০ শতাংশ মাত্র। প্রায় ৫০ বছরের উন্নয়নের মাধ্যমে কোরকোজ জাতি এখন আধুনিকায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছেন। তাদের উন্নয়নে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

    আবদুল কাদিল দম্পতি সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কোজলেসু কোরকোজ স্বায়ত্তশাসিত বিভাগের আটুশ শহরে থাকেন। এটি হচ্ছে এক সাধারণ পরিবার। তবে এই পরিবার থেকে আমরা শিক্ষার ওপর কোরকোজ জাতির গুরুত্ব দান অনুভব করতে পারি।

    কাদিল দম্পতির চার ছেলেমেয়ে আছে। বড় মেয়ে আলিমা সিনচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ছাত্র হিসেবে ইংরেজী বিভাগে ভর্তি হয়েছে। তাঁদের মেজো মেয়ে শাভিয়া উ হানের মধ্যচীন শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। ছোট মেয়ে কুলিমিরে সিনচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রকল্প বিভাগে লেখাপড়া করেন। ছোট ছেলে রিসবাইক শিগ্গীরই সিনচিয়াং শিহোচি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিত্সা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রে পরিণত হবে। কিভাবে একটি সাধারণ পরিবারের চার ভাই বোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে পারে? পিতা আবদুল কাদিল এ বিষয়ে বলেছেন,

    কোরকোজ জাতি এক যাযাবর জাতি। আগে প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো ছিল না। বেশির ভাগ লোক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারত না। আমার দাদার কোন শিক্ষা জ্ঞান ছিল না। তবে তিনি অনেক অসুবিধা অতিক্রম করে আমার বাবাকে শিক্ষাগত গ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। তখন এখানে সড়ক ছিল না। আমার বাবা ৯০ কিলোমিটার দূরের কাশ শহরে নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলে লেখাপড়া করতেন। তারপর তাঁর বাবার সমর্থনে শিক্ষক প্রশিক্ষণ স্কুলে স্নাতক হন এবং একজন শিক্ষকে পরিণত হন। পরিবারে শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার পরিবেশ আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। সুতরাং ছোট বেলা থেকে আমি জানি শিক্ষা গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    এই পরিবারের কর্ত্রীও শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দানকারী একটি পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তখন কোরকোজ জাতির মধ্যে শিক্ষা গ্রহণকারী ছেলের সংখ্যা খুব কম ছিল। তবে তাঁর বাবা ও মা বিভিন্ন চাপ সত্বেও তাঁকে একজন শিক্ষকে পরিণত করেছেন।

    এই পরিবারের পিতা ও মাতা শিক্ষার গুরুত্ব বুঝেছেন। তাঁরা মনে করেন, একটি জাতি বা একটি দেশের উন্নয়নের জন্য শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার উন্নতি না হলে দারিদ্র্য বিমোচন করা যাবে না। বর্তমানে কোরকোজ জাতির জীবন ধাপে ধাপে উন্নত হচ্ছে। তাই তাঁরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

    তিনি আশা করেন, সুযোগ পেলে ছেলেমেয়েরা বিদেশে গিয়ে লেখাপড়া করতে পারবে, যাতে তারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জ্ঞান ও প্রযুক্তি অর্জনের পর কোরকোজ স্বায়ত্তশাসিত বিভাগ, সিনচিয়াং, এমনকি চীনের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

    পিতা,মাতার আশা ছেলেমেয়েরা বুঝতে পেরেছে। তারা লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেছে। বড় মেয়ে আলিমা বলেছে, মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনের পর আমার মহানগরে চাকরি পাওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে আমি মহানগরে কাজ করবো না। কারণ আমার জন্মস্থানের লোকদের ইংরেজীর মান ভালো নয়। আমি আশা করি, আমার জ্ঞানের মাধ্যমে তাদের ইংরেজীর মান উন্নত করতে সাহায্য করবো, যাতে তারা বিশ্ব সম্পর্কে আরো বেশি বুঝতে পারে। এর পাশাপাশি আমি নিজের জাতির পরিচিতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে ব্যাখ্যা করবো।

    ছোট ছেলে বলেছে, তিনি চিকিত্সাবিদ্যার জ্ঞান ভালোভাবে অর্জনের চেষ্টা করবে, যাতে পরবর্তীতে নিজের জাতির রোগীদেরকে চিকিত্সা-সেবা দিতে পারে।

    আবদুল কাদিল পরিবার শুধু কোরকোজ জাতির একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র। শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ায় আবদুল কাদিল ও তাঁর পরিবার সুখী জীবন যাপন করছে। কোরকোজ জাতিও একটি যাযাবর জাতি থেকে আধুনিকায়নের পথে চলছে। ৫০ বছেরের মধ্যেও শিক্ষা কোরকোজ জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। বর্তমানে পশ্চিম চীনের কৃষি ও পশুপালন-প্রধান এলাকার স্কুল নির্মাণের প্রকল্প সার্বিকভাবে চালু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে কোরকোজ জাতির শিক্ষার পথ আরো প্রশস্ত হবে।