v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-03-12 17:59:02    
ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের নেতাদের বৈঠকে কোন অগ্রগতি অর্জিত হয় নি

cri
    ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ অলমার্ট এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহম্মুদ আব্বাস ১১ মার্চ জেরুজালেমে বৈঠক করেছেন । এটা হচ্ছে এক মাসের মধ্যে দু'পক্ষের দ্বিতীয় বৈঠক । কিন্তু বৈঠকে কোন অগ্রগতি অর্জিত হয় নি ।

    এদিন বিকেলে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক শুরু হয় এবং দু'ঘন্টা স্থায়ী হয়। দু'পক্ষের প্রতিনিধি দল প্রথম পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকে শুধু তাঁরা দু'জন ছিলেন । বৈঠকের আগে এবং শেষের পর সংবাদদাতাদের সঙ্গে সাক্ষাত্কার করেন নি ।

    তাঁদের সহকারীর কাছ থেকে জানা গেছে, দু'পক্ষ ফিলিস্তিনের নতুন সরকার এবং যুদ্ধবিরতি বজায় রাখাসহ বিভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে মতৈক্য হয় নি ।আব্বাস অলমার্টকে নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন । কিন্তু ইসরাইল বলেছে নতুন সরকারকে স্বীকৃতি পেতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তিনটি শর্ত মেনে নিতে হবে । তা হল ইসরাইলকে স্বীকার করা, সশস্ত্র প্রতিরোধ পরিত্যাগ করা, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিকে গ্রহণ করা । নইলে ইসরাইল ফিলিস্তিনের নতুন সরকার এবং এর ক্যাবিনেটের সদস্যদের মেনে নিবে না । যুদ্ধবিরতি বিষয়ে আব্বাস আশা করেন , গাজা অঞ্চলে দু'পক্ষের যুদ্ধবিরতি জর্দান নদীর পশ্চিম তীর অঞ্চলে সম্প্রসারিত হবে এবং ইসরাইলের প্রতি জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের সামরিক অভিযান বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন । কিন্তু ইসরাইল ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংস্থাগুলোর প্রতি ইসরাইলের ওপর চালানো রকেট হামলা বন্ধ করার দাবিও জানায় । ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলেছে, গত বছরের নভেম্বরে গাজা অঞ্চলে দু'পক্ষের যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর, ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংস্থা গাজা অঞ্চল থেকে ইসরাইলের ওপর ১৪০টিরও বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে ।

    দু'পক্ষের আরেকটি আলোচ্য বিষয় হল আরব শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব । এটা হল সৌদি আরবের উদ্যোগে ২০০২ সালে আরব লীগ গৃহীত শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব । প্রস্তাবে ইসরাইলের প্রতি দখল শেষ করা, তার ১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের আগে যুদ্ধবিরতি লাইন প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়েছে। যাতে আরব দেশগুলোর সার্বিক শান্তি বাস্তবায়ন করা যায় । বৈঠকে আব্বাস বলেছেন, আরব শান্তিপূর্ণ প্রস্তাব মধ্য-প্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে । এ মাসের শেষে আরব দেশগুলো সৌদি আরব শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করবে । অলমার্ট আশা করেন, আরবে দেশগুলো শীর্ষ সম্মেলনে শান্তি প্রস্তাবের সক্রিয়তা নিয়ে জোর আলোচনা করবে । দু'পক্ষ একমত হয়েছে যে, ভবিষ্যতে আরব শান্তি প্রস্তাবের ভিত্তিতে গভীর সংলাপ চালানো হবে ।

    দু'পক্ষ ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংস্থার অপহরণ করা ইসরাইলী সৈন্য গিলাদ শালিটকে মুক্তি দেয়া নিয়ে আলোচনা করেছে এবং কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে । বৈঠকে আব্বাস বলেছেন, তিনি প্রচেষ্টা চালিয়ে শালিটকে মুক্তি দেবেন এবং আশা করেন, ফিলিস্তিনের যৌথ সরকার প্রতিষ্ঠার আগে শালিটকে মুক্তি দেয়া হবে । অলমার্ট ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংস্থাকে বিনাশর্তভাবে শালিটকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন । তা ছাড়া, অলমার্ট গাজা আর ইসরাইলের মধ্যে প্রধান পণ্য আমদানী ও রপ্তানী বন্দর কার্নি উন্মুক্ততার সময় স্থগিত করার অনুমোদন দিয়েছেন । এর পাশাপাশি দু'পক্ষ যোগাযোগ বজায় রেখে পরিকল্পিতভাবে বৈঠক করা নিয়ে মতৈক্য হয়েছে ।

    এবারের বৈঠকে কোন আকস্মিক সাফল্য অর্জিত হয় নি । বৈঠকের আগে দু'পক্ষের সহকারীরা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এবারের বৈঠকে কোন সাফল্য অর্জন করার আশা তাঁদের নেই । ফিলিস্তিনের নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় নি বলে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে দু'পক্ষের সিদ্ধান্ত নেয়ার সম্ভাবনা নেই । তা ছাড়া, দু'দেশের নেতৃবৃন্দ স্বদেশের রাজনৈতিক চাপ সম্মুখীন হয়েছেন । ইসরাইলে অলমার্টের সমর্থনের হার অব্যাহতভাবে কমেছে । ধারাবাহিক দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীন হওয়ার পাশাপাশি ইসরাইলের অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কও উত্তেজনাময় । আব্বাস হামাসের সঙ্গে ক্ষমতার লড়াইয়ে ব্যস্ত । এ জন্য দু'পক্ষ আন্তরিকভাবে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারবে না ।

    এ পটভূমিতে বিশ্লেষকরা মনে করেন , এবারের বৈঠকের উদ্দেশ্য অগ্রগতি অর্জন করা নয়, শুধু দু'পক্ষের যোগাযোগ বজায় রাখা । তার গঠনমূলক তাত্পর্য রয়েছে ।