v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-03-07 20:48:13    
চীনা অন্ধ এতিম শিশুদের ফরাসী বাসা

cri
    ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে ফরাসী দম্পতী গুইলাউমি ও ডেলফিনগাউভাইন চীনের হো পেই প্রদেশের লাং ফাং শহরে অন্ধ শিশুদের জন্য এক দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন । এ প্রতিষ্ঠান চীনে একমাত্র বিশেষ করে অন্ধ শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান । এ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হল অন্ধ শিশুদেরকে যত্ন নেয়া , শিক্ষা দেয়া এবং বিভিন্ন বৃত্তিমূলক কাজে প্রশিক্ষণ দেয়া । যাতে এসব শিশুরা নিজেরাই নিজেদের জীবনযাপন ও কাজ করতে পারে ।

    গুইলাউমি খুব সুন্দর পিয়ানো বাজাতে পারেন । শিশুরা সঙ্গীতের সঙ্গে সুন্দরভাবে ইংরেজী গান গাইতে পারে । শুনলে সবাই অবাক হয়ে যায় । গুইলাউমি বলেছেন , আমি তাদেরকে আমার ভালোবাসা অনুভব করাতে চাই ।

    সিয়াও কুয়াং নামে একজন অন্ধ শিশু বলে , ফরাসী বাবা সবচেয়ে ভালো । আমি ফরাসী বাবাকে পছন্দ করি । সিয়াও কুয়াং বলে , ফরাসী বাবার আওয়াজে সে ভালোবাসা অনুভব করতে পারে । এ ভালোবাসা যেন বাসার ভালোবাসার মত । এ দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সিয়াও কুয়াং-এর তিন বছর কেটেছে । সিয়াও কুয়াং যেন পরীর গল্পের কুমারের মত আনন্দের মধ্য দিয়ে এ তিন বছর কাটিয়েছে ।

    সিয়াও কুয়াংয়ের বাসা--অন্ধ শিশু দাতব্য প্রতিষ্ঠানে এখন ৩১জন শিশু আছে । তাদেরও সিয়াও কুয়াংয়ের মত বাবা মা নেই এবং কেউ কিছু দেয় না । তবে তারাও সিয়াও কুয়াংয়ের মত আনন্দ অনুভব করে ।

    শিশুদের ফরাসী বাবা হলেন এ দাতব্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাকারী গুইলাউমি । ২০০১ সালে প্রথম চীনে এসেছেন তখন গুইলাউমি মার্কিন দম্পতিকে একটি কল্যাণ ইন্সটিটিউটে পিয়ানো শিখাতেন । তবে তিনি উপলব্ধি করেছেন যে , এমন সাধারণ কল্যাণ ইন্সটিটিউট অন্ধ এতিম শিশুসহ প্রতিবন্ধী শিশুদের বিশেষ যত্ন নিতে পারে না । তাই তিনি বিশেষ করে অন্ধ এতিম শিশুদেরকে সাহায্য দেয়ার এক দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন । এ দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতি মাসে ১.৭ লাখ ইউয়ানের খরচ হয় । সব টাকা তার নিজেকেই সংগ্রহ করতে হয় । বর্তমানে প্রধানত এ দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ফ্রান্স , যুক্তরাষ্ট্র , হল্যান্ড , সুইজল্যান্ড ও জার্মানীর শাখা সংস্থার থেকে অর্থ সাহায্য পায় । অর্থ প্রদানকারী সবাই প্রায় বিদেশি । এসব অর্থের ৮০ শতাংশ সাধারণ মানুষ ও কম্পানীর দেয়া । গুইলাউমির একটি সঙ্গীত দলের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৫ শতাংশ পরিমান অর্থও পাওয়া যায়।

    এখন গুইলাউমির দাতব্য প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে ছোট শিশুর বয়স এক বছর এবং সবচেয়ে বড় শিশু ১৯ বছর বয়সী । তারা চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের ১৫টি শিশু কল্যাণ ইন্সটিটিউট থেকে এসেছে । এখন তারা যেন এক বড় বাড়ির আত্মীয়সজনের মত একসঙ্গে থাকে ।

    শিশুরা ইংরেজি ভাষায় মার্কিন কর্মীর সঙ্গে কথা বলতে পারে এবং ইন্টারনেটে তথ্য ডাউনলোডও করতে পারে । প্রত্যেক বৃহস্পতিবার শিশুরা নিজেই রান্না করে । ফ্রান্স স্টাইলের সালাড এবং কেক শিশুরা সবচেয়ে ভালো রান্না করতে পারে । মাঝে মাঝে শিশুরা ফরাসী বাবার কাছে কিছু ফরাসী ভাষাও শিখে ।

    গুইলাউমি সবসময় বলেন , আমি এই শিশুদেরকে বলতে চাই , তুমি অন্ধ শিশু , তবে কোনো সমস্যা নেই , যে কাজ তুমি করতে চাও , তুমি তা করতে পারো । গুইলাউমির মনে এসব শিশু তার নিজের তিন ছেলের কোনো পার্থক্য নেই ।

    গুইলাউমির সমচেয়ে পছন্দের কাজ হল সব শিশুদের নিয়ে মেকডোলাল্ডে যান । প্রত্যেক বার শিশুরা আন্দের সঙ্গে নাচ গান করে । আরেকটি কাজ হল শিশুদের জন্য পিয়ানো বাজান । গুইলাউমি সংবাদদাতাকে বলেন , আপনি জানেন না , তাদের গাওয়া ইংরেজী গান কত সুন্দর ।

    এমন আনন্দ পরিবেশে শিশুরা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বড় হয়েছে । গুইলাউমি বলেন , তিনি সব প্রয়াস চালিয়ে অন্যকে সাহায্য করবেন । তাঁর বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁর দাতব্য প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি ৬০টি শিশুদের যত্ন নিতে পারে । তবে ভবিষ্যতে তিনি চীনের অন্যান্য জায়গায় আরো বেশি দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করবেন , যাতে আরো বেশি শিশুদেরকে ভালোবাসা পাঠাতে পারে ।