পাকিস্তান নৌবাহিনীর আমন্ত্রণে "লিয়ান ইউনগাং" নামক ফ্রিগেট এবং "সেনমিং"নামক ফ্রিগেট নিয়ে গঠিত চীনা গণ মুক্তি ফৌজের নৌবাহিনীর নৌবহর পাকিস্তান নৌবাহিনীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত "শান্তি-০৭" সামুদ্রিক বহুজাতিক যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়ার জন্যে ৫ মার্চ পাকিস্তানের করাচি বন্দরে পৌঁছেছে। এটি হলো চীনের নৌবাহিনীর প্রথম বারের মতো সামুদ্রিক বহুজাতিক যৌথ মহড়ায় আংশগ্রহণকারী।
স্থানীয় সময় ৫ মার্চ সকাল প্রায় সাড়ে ১০টা, চীনের নৌবহর পাকিস্তানের যুদ্ধ জাহাজের পথনির্দেশে আস্তে আস্তে বন্দরে প্রবেশ করছে। পাকিস্তানের নৌবাহিনীর প্রতিনিধি কর্নেল আসিফ হামিদ, পাকিস্তানে চীনের সামরিক অ্যাটাচি মেজর জেনারেল লি মোংইয়ান, করাচিতে চীনের কন্স্যুলার জেনারেল ছেন শানমিন এবং পাকিস্তানে চীন দূতাবাসের কর্মকর্তারা, চীনা পুঁজি বিনিয়োগকারী সংস্থা, চীনা বংশোদ্ভূত পাকিস্তানী ও পাকিস্তানে প্রবাসী চীনাদের প্রতিনিধিসহ মোট দু'শতাধিক লোক জাহাজঘাটে নৌবহরকে অভ্যর্থনা জানান। উত্সাহী পাকিস্তানীরা চীন ও পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা আন্দোলিত করেন। জাতীয় পোষাক পড়া পাকিস্তানী যুবক-যুবতীরা জাতীয় নাচ প্রদর্শন করেন। পাকিস্তানের নৌবাহিনীর ব্যান্ড আনন্দদায়ক সঙ্গীত বাজায়।
চীনা বংশোদ্ভূত পাকিস্তানী ও পাকিস্তানে প্রবাসী চীনারা চীনের নৌবাহিনীর নৌবহর পরিদর্শনের পর পৃথক পৃথকভাবে যার যার মতো করে আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
আমি খুব খুশী। গতকাল কন্স্যুলার আমাকে একটি ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন, নৌবহর আজ পৌঁছার কথা। আমি অনেক আগে এসেছি। খুব আনন্দ লাগছে।
আমি তাদেরকে করাচি পৌঁছায় স্বাগত জানাচ্ছি। আমি খুব খুশি। আমার পায় খুব ব্যাথা। তা সত্ত্বেও আমি এসেছি।
একজন পাকিস্তানী চীনের নৌবহর পরিদর্শনের পর বলেছেন,
দেখার পর আমার অনুভুতি খুব ভাল। আমি খুব খুশি, আমাদের সবচেয়ে পছন্দের দেশ--চীনের নৌবাহিনী এখানে এসেছে। আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু, চীনের নৌবাহিনী এসেছে। খুব ভালো লাগছে।
খবরে জানা গেছে, এবারের মহড়া ৬ থেকে ১৩ মার্চ পর্যন্ত উত্তর আরব সাগরে অনুষ্ঠিত হবে। মহড়ার প্রসঙ্গ হচ্ছে সন্ত্রাস দমন। পাকিস্তান, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স, ইতালি, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং তুরস্কের নৌবাহিনীর জাহাজ, বিমান ও বিশেষ বাহিনীগুলো মিলিতভাবে সামরিক মহড়া চালাবে। তা ছাড়া, ১৮ দেশ থেকে আসা সামরিক অফিসাররা ঘটনাস্থলে এসে মহড়া দেখবেন।
পাকিস্তান নৌবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সিদ্দিক আকবার আমাদের সংবাদদাতাদেরকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, এবারের মহড়া দিন দিন বেড়ে যাওয়া সামুদ্রিক হুমকি ও চ্যালেঞ্জের উপর চালানো হবে এবং বিভিন্ন দেশের মিলিতভাবে সন্ত্রাস দমনের সংকল্প প্রদর্শন করা হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর মধ্যকার সহযোগিতা ও আদান-প্রদান ত্বরান্বিত করা হবে। তিনি চীনের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণের ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছেন। তিনি বলেছেন,
চীনের অংশগ্রহণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তার উচ্চ প্রশংসা করি। আমি মনে করি, মহড়া অবশ্যই দু'দেশের নৌবাহিনীর সুষ্ঠু সম্পর্ক আরো জোরদার করবে। এ থেকে দেখা গেছে, দু'দেশের নৌবাহিনীর সম্পর্ক কত বন্ধুত্বপূর্ণ।
আমাদের নৌবাহিনীর নৌবহরের দলনেতা ছিউ ইয়ানপোং করাচিতে পৌঁছা পর তাঁর ভাষণে জোর দিয়ে বলেছেন, আমাদের নৌবাহিনী শান্তিপূর্ণ পথ ধরে চলে। তিনি বলেছেন,
আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বহুজাতিক নৌবাহিনীর সঙ্গে মিলিতভাবে সমুদ্রে সন্ত্রাসী তত্পরতার চালানোর উপায় খুঁজে বের করা এবং সমুদ্রে নৌবাহিনীর যুদ্ধের শক্তি-সামর্থ্য বাড়ানো। আমারা শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধিশীল ও সম্প্রীতিমূলক বিশ্ব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
|