সিসেলসের প্রেসিডেন্ট জ্যামেস আলিক্স মিছেলের আমন্ত্রণে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও ৯ ফেব্রুয়ারী সিসেলস পৌঁছে তাঁর রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করে।
সিসেলস একটি পশ্চিম ভারত মহাসাগরীয় দেশ। দেশটি ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকাসহ তিনটি মহা দেশের কেন্দ্রে অবস্থিত। যা আফ্রিকার মূলভূভাগ থেকে মোট ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে। দেশটি মোট ১১৫টি বড় এবং ছোট উপদ্বীপ নিয়ে গঠিত । সিসেলস এশিয়া ও আফ্রিকার পরিবহণ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে । দেশটির আয়তন ৪৫৫.৩৯ বর্গকিলোমিটার এবং সমুদ্রসীমার আয়তন ৪ লাখ বর্গকিলোমিটার। রাজধানী ভিকটোরিয়া।
সিসেলসের লোকসংখ্যা মোট ৮৫ হাজারেরও বেশি। অধিবাসীদের মধ্যে রয়েছে পালাওয়ান এবং ক্রিওলা, এ ছাড়াও রয়েছে ভারতীয়-পাকিস্তানী, চীনা এবং ফরাসী বংশদ্ভুত। সরকারী ভাষা হচ্ছে ক্রিওলা। দেশটির ৯০ শতাংশ অধিবাসী ক্যাথলিক ধর্মে বিশ্বাসী ।
সিসেলসে অফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলোর মতই ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা বজায় ছিলো। ষোড় শতাব্দীর শুরুতেই পর্তুগাল সবচে' আগে এখানে আসে। ১৭৫৬ সালে ফ্রান্স তাকে দখল করে নেয় এবং এ দেশের নাম রাখে সিসেলস। ১৯১৪ সালে দেশটি ব্রিটেনের উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ জুন মাসে সিসেলস স্বাধীনতা লাভ করে এবং সিসেলস প্রজাতন্ত্র স্থাপন করে।
সিসেলসের দৃশ্য খুবই সুন্দর, সারা দেশের ৫০ শতাংশ অঞ্চল প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকার অন্তর্ভূক্ত । এর " ভ্রমণকারীদের স্বর্গ" বলে এর সুনাম রয়েছে । পর্যটন শিল্প হচ্ছে দেশটির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উত্স। যার মাধ্যমে সরাসরিভাবে দেশের ৭২ শতাংশ জি.ডি.পি উন্নীত হয়েছে । এর ওপর প্রতিবছর আরও মোট ১০ কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে । তা বৈদেশিক মুদ্রার মোট পরিমাণের ৭০ শতাংশ । একই সঙ্গে দেশটিতে কর্মসংস্থানের ৩০ শতাংশ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে । জাতিসংঘের উন্নয়নশীল পরিকল্পনা বিষয়ক বিভাগ প্রকাশিত '২০০৫ সালের বার্ষিক মানবজাতির উন্নয়ন সংক্রান্ত রিপোর্ট' সূত্রে জানা গেছে, সিসেলস হচ্ছে বিশ্বে মানবজাতির জীবন যাপনের সর্বোচ্চ উপযুক্ত দেশগুলোর অন্যতম।
সিসেলসের জেলে শিল্পও উল্লেখ করার মত । তার বিশেষ সামুদ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চলের আয়তন মোট ১০ লাখ বর্গকিলোমিটার। তবে দেশটির শিল্প ও কৃষি শিল্পের ভিত্তি খুবই দুর্বল। খাদ্যশস্য এবং নিত্য-ব্যবহার্য দ্রব্যসহ গুরুত্বপূর্ণভাবে আমদানি নির্ভর । শিল্প ক্ষেত্রে দেশটিতে কিছু মাঝারি এবং ছোট আকারের শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে । কৃষি শিল্পের আবাদী জমির পরিমাণ শুধু ১০০ বর্গকিলোমিটার।
১৯৭৬ সালের ৩০ জুন চীন ও সিসেলসের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সুষ্ঠু উন্নয়নহয়েছে। এর আর্থ-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের সহযোগিতা অব্যাহতভাবে উন্নততর হচ্ছে । সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দু'দেশের বাণিজ্যের বৃদ্ধি হার দ্রুততর হয়েছে । ২০০৬ সালে দ্বিপক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মোট ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার।
|