মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ দিক থেকে জাপান,অষ্ট্রেলিয়া,ওমান,পাকিস্তান ও আফগানিস্তানসহ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো সফর করেছেন। তাঁর এসব দেশ সফরের কারণ কি? এবারের সফরে তিনি কি কি সাফল্য অর্জন করেছেন? চীনের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের উপ- অধ্যক্ষ চিন ছাং রোং আমাদের সংবাদদাতাদের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে সে বিষয়ে উল্লেখ করেছেন।
তিনি মনে করেন, ডিক চেনির জাপান ও অষ্ট্রেলিয়ার সফরের উদ্দেশ্য হল এই দুটি দেশের ইরাক ও কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ের উদ্বেগ প্রশমন করাসহ তাদের সমর্থন পাওয়া।
বর্তমানে ইরাক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহারের চাপ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভালো বিস্বস্ত মিত্র ব্রিটেনও সৈন্য প্রত্যাহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য মিত্রের সমর্থন পাওয়া দরকার। প্রথমত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাপান ও অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক সুসংবদ্ধ করা উচিত। যাতে রাজনৈতিক সমর্থন পাওয়া সম্ভব হয়। মোটের উপর এবারের সফর সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
এবারের সফরের আকস্মিক প্রসঙ্গ হচ্ছে সফরকালে তিনি চীনের সামরিক শক্তির কথা দু'বার বলেছেন। চীনের সামরিক উন্নয়ন ও প্রভাবের বৃদ্ধি ২১ ফেব্রুয়ারীতে চেনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বৈঠকের একটি প্রধান প্রসঙ্গ ছিল। ২৩ ফেব্রুয়ারী অষ্ট্রেলিয়া সফরকালেও তিনি চীনের তথাকথিত সামরিক সম্প্রসারণের ব্যাপারে আবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, বর্তমানে চীনের কার্যক্রম চীনের শান্তি উন্নয়নের উদ্দেশ্যের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ।
জানা গেছে, অষ্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন উইন্সটন হাওয়ার্ড চেনির মন্তব্যের সঙ্গে একমত হন নি। তিনি বলেছেন, গত দশ বছর অষ্ট্রেলিয়া মহামিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে। এর পাশাপাশি চীনের সঙ্গে গঠনমূলক ও সমঝোতার সম্পর্কও গড়ে উঠেছে। চিন ছাং রোং মনে করেন,
মার্কিনীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের কেন্দ্রে পরিণত হবার মনস্তাত্ত্বিক ধারনা করছে। তাই চীনের সামরিক শক্তির উন্নতি লাভে আহতুক উদ্বিগ্ন হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তারা চীনের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অবলোকন করবেন। এ ব্যাপারে ধীরে ধীরে তারা অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন।
জাপান ও অষ্ট্রেলিয়া সফর ছাড়াও, চেনি আকস্মিকভাবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সফর করেছেন। তাঁর উদ্দেশ্য হল সফরের মাধ্যমে ইরাক ও আফগানিস্তানের ওপর বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করা।
তাছাড়া এবার চেনি আকস্মিকভাবে ওমানও সফর করেছেন। দু'পক্ষ এ অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ইরানের পরমাণু সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। চিন ছাং রোং মনে করেন, ওমানের কৌশলী অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ওমানের বিশেষ অবস্থানের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের সম্পর্ক হবে চলতি বছর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্পর্কের মধ্যে এক খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিক। চেনি অষ্ট্রেলিয়া সফরকালে ইরানের সঙ্গে আলোচনার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন,এ ছাড়া অন্যান্য ব্যবস্থা নেয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম মনে করে, এটি হচ্ছে একটি নিরোধক নীতি।
চিন ছাং রোং মনে করেন, চেনির সফরে তিনটি তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
এবারের কূটনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে বুঝা যায় বুশ সরকারের মধ্যে চেনির অবস্থা স্থিতিশীল । কারণ আগে বহু সংবাদ মাধ্যম বলেছে, চেনি সরকারের প্রভাবে মাঠে অবতীর্ণ হয়েছেন। এবারের সফরের মাধ্যমে তাঁর প্রভাব থাকার বিষয়টি তিনিও স্বীকার করেছেন। দ্বিতীয়ত ,বর্তমানে তিনি দেশ ও বিদেশের চাপের সম্মুখীন হওয়ায় তার এশীয় মিত্র দেশগুলোর সাহায্য দরকার। তৃতীয়ত, পরবর্তীতে ইরান বিষয়ে তাঁর কার্যক্রমের ওপর দৃষ্টি দেয়া।
|