চীনের কর্মসংস্থান পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন । এই সামাজিক অবস্থা, এথেকে সৃষ্ট বেড়ে যাওয়া আয়ের ব্যবধানএবং বেকার সহ নানা জরুরী সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে কর্মসংস্থান সম্পর্কিত খসড়া আইন ২৬ ফেব্রুয়ারী চীনের বিধান কমিটি--চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে দাখিল করা হয়েছে ।
চীনদেশে কর্মসংস্থানকে সবসময় জনগণের জীবনযাপনের এক প্রধান সমস্যা এবং দেশকে স্থিতিশীল রাখার এক মূল নীতি হিসেবে গ্রহণ করে আসছে । বহু বছর ধরে চীন সরকার পরপর কর্মসংস্থানের উন্নয়নে ধারাবাহিক নীতি প্রণয়ন করেছে । যার ফলে গত ১৫ বছরের মধ্যে কর্মসংস্থানপ্রাপ্ত লোকেরসংখ্যা ১০ কোটি বেড়েছে । বেকারত্বের হার ৪.৩শতাংশের নিচে আনা সম্ভব হয়েছে । এবং কর্মসংস্থানের পরিপূর্ণতাকে ২০২০ সাল নাগাদ সুষম সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্য ও এক প্রধান কর্তব্য হিসেবে ধার্য করা হয়েছে । ২০১০ সাল নাগাদ সারা দেশের মোট শ্রমশক্তিসংখ্যা ৮৩ কোটিতে দাঁড়াবে । এরমধ্যে এক কোটি শ্রমশক্তি বেকার ও কর্মচ্যুত সমস্যার সম্মুখীন হবে । নীতির সংস্কার করা এবং সত্যিকারভাবে গুরুতর সমস্যার সমাধান করা " কর্মসংস্থান সম্পর্কিত আইন" প্রণয়ন করার এ দুটো হচ্ছে মূল চিন্তাধারা । এ সম্পর্কে চীনের শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থিয়েন ছেনপিং জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় বর্ণনা করেছেন । তিনি বলেছেন , কর্মসংস্থান উন্নয়ন সম্পর্কিত দেশের নীতি কে পরিপূর্ণভাবে অভিভূক্ত করা এবং একে নিয়মানুগ করা আইন প্রণয়ন করার এক মূল চিন্তাধারা । যাতে কর্মসংস্থান উন্নয়নের দীর্ঘকালীন ব্যবস্থা প্রণয়ন করা যায় । কর্মসংস্থান উন্নয়নের কাজে বিদ্যমান গুরুত্বর সমস্যার সমাধানের উপর গুরুত্ব দেয়া , বাজারের বিশৃঙখলা , পেশাদার শিক্ষা র প্রশিক্ষণ এবং কর্মচ্যুত ও বেকার লোকদের পুনরায় কর্মসংস্থানের সমস্যা সম্পর্কে খসড়া আইনে আপেক্ষিক ব্যবস্থার নিশ্চয়তা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ।
কর্মসংস্থানের পক্ষে সহায়ক হবে এমন সব শিল্পনীতি , আর্থ-বাণিজ্যিক নীতি , অর্থবিনিয়োগনীতি , কর নীতি এবং ঋণ নেয়ার নীতি সহ বিভিন্ননীতিবিধি খসড়া আইনে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে । এ সম্পর্কে মন্ত্রী থিয়েন ছেনপিং বলেছেন ,জেলা পর্যায়ের উর্ধতন সরকারকে কর্মসংস্থান বাড়ানোর কাজকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর পুর্নবিন্যাসেরএক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং একে জাতীয় অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে । কর্মসংস্থানের অবস্থা ও কর্মসংস্থান সংক্রান্ত কর্মেরলক্ষ্য অনুযায়ী কর্মসংস্থান উন্নয়নের জন্য আর্থিক বাজেটে উপযুক্ত অর্থের ব্যবস্থা করতে হবে ।
খসড়া আইনে স্থানীয় সরকারের প্রতিশুধু নিয়ম নির্ধারণ করেছে তা নয় সমস্যার সমাধানের পদ্ধতিও উল্লেখ করা হয়েছে । মন্ত্রী থিয়েন ছেনপিং বলেছেন, সম্পদ উন্নয়ন করার শহর , স্বাধীন শিল্প ও খনিজপদার্থ এলাকার উন্নয়নএবং বাজার চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় এমন শিল্প উত্পাদনকে চীন সরকার উত্সাহ দেয় । সম্পদের অভাব অঞ্চলকেবা অর্থনৈতিক অবকাঠামোরপুনর্বিন্যাসের কারণে কর্মচ্যুত লোক বেশী এমন অঞ্চলকে সরকারের সাহায্য করা উচিত ।
চীন দেশে যে কৃষকরা গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে মজুরী করতে আসেন তাদেরকে কৃষি শ্রমিক বলা হয় । সামাজিক অবস্থান নিচু ও দক্ষতার অভাবের কারণে তারা অল্প বেতন পান এমন কি সময়মতো বেতন পান না । দক্ষিণ পশ্চিম চীনের সিছুয়ান প্রদেশের গ্রামাঞ্চল থেকে পেইচিংয়ে আসা কাও নামের এক কৃষি শ্রমিক বহু বছর ধরে পেইচিংয়ে মজুরী করছেন । তিনি নিজের থাকার ব্যবস্থা সম্পর্কে সন্তুষ্ট নন । এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খসড়া আইনে স্পষ্টভাষায় নির্ধারিত হয়েছে যে , শহরে কৃষি শ্রমিক শহরের শ্রমিকের সমান শ্রম অধিকার উপভোগ করবে । বিভিন্ন স্তরের গণ সরকারকে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে যাতে তাদের কর্মসংস্থানের দক্ষতা বাড়ানো যায় ।
|