২৫ ফেব্রুয়ারী মিশর, ইন্দোনেশিয়া,জর্দান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক ও পাকিস্তানসহ সাতটি ইসলামিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণসহ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ এবং ইসলামি সম্মেলন সংস্থা ও আই সি'র মহাসচিব একমেলেদ্দিন ইসানোগলু পাকিস্তানের ইসলামাবাদে দিন ব্যাপী বৈঠকে বর্তমান মধ্য-প্রাচ্যের পরিস্থিতি এবং ইরানের পারমাণবিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন । পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আজিজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, ইস্রাইল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘর্ষ হল মধ্য-প্রাচ্য পরিস্থিতির অবনবির মূল কারণ, এ জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ সমস্যা সমাধান করলে মধ্য প্রাচ্যের স্থায়ী শান্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে ।
মধ্য প্রাচ্য শান্তির বাস্তবায়ন হল সুষমকরণ ন্যায়বিচার ফিলিস্তিনের সমস্যার সমাধান করা । মোকাবিলার পদ্ধতি সকল ফিলিস্তিনীর ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে । আমরা আশা করি, একটি যৌথ জাতীয় সরকারের প্রতিষ্ঠা ফিলিস্তিনের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে ।
জানা গেছে, সম্প্রতি ইসলামিক দেশের নেতৃবৃন্দরা সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিতব্য একটি শীর্ষ সম্মেলনে মধ্য প্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আরো বিষদভাবে আলোচনা করবেন । এবারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অধিবেশন ছিল শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতিমূলক । বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতিতে সাতটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধান করা এবং একটি ফিলিস্তিন দেশ প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানিয়েছেন । পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুর্শিদ কাসুরি বলেছেন,
ফিলিস্তনের সমস্যা হল মধ্য প্রাচ্য পরিস্থিতির মূল সমস্যা ।তা জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ চুক্তির কাঠামোয় সমাধান করা উচিত । কিন্তু এসব প্রস্তাব ও চুক্তি অনুযায়ী পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে মেনে নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় স্বীকৃতি দিতে হবে ।
ফিলিস্তিন ও ইস্রাইলের সমস্যা ছাড়াও এবারের বৈঠকের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ইরানের পারমাণবিক সমস্যা ।২২ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার মহা পরিচালক মোহামেদ আল বারাদেই নিরাপত্তা পরিষদে ইরান সম্পর্কিত ১৭৩৭ নম্বর প্রস্তাব বাস্তবায়ন সংক্রান্ত রিপোর্ট দাখিল করার পর, ইরানের পারমাণবিক সমস্যাটি পুনরায় মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলের মূল সমস্যায় পরিণত হয়েছে । ২৪ ফেব্রুয়ারী মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি অস্ট্রেলিয়া সফরকালে বলেছেন, ইরান যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দাবি উপেক্ষা করে পারমাণবিক প্রকল্পের গবেষণা কাজ অব্যাহত রাখে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র খুব সম্ভবত ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাবে । এবারের বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ আশা করেন, কূটনৈতিক পদ্ধতিতেই ইরানের পারমাণবিক সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে । পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজ বলেছেন, সশস্ত্র সংঘর্ষ উপকূলীয় অঞ্চলের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলবে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে । বিভিন্ন দেশের উচিত এ অঞ্চলের সংঘর্ষ কমানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া ।
বৈঠক শেষ হওয়ার পর সাতটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছেন ।মন্ত্রীগণের সম্মানে আয়োজিত ভোজ সভায় মুশাররফ পুনরায় এবারের বৈঠকের উদ্দেশ্য ঘোষণা করেছেন । তিনি বলেছেন, মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলের পরিস্থিতির অবনতি এড়ানো এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে আমার নতুন প্রস্তাবের উদ্দেশ্য । আমার খুব ভালো লাগছে যে আমরা এ জন্য প্রথম পদক্ষেপ নিতে পেরেছি ।
|