v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-02-22 17:08:18    
ইরাক থেকে আংশিক সেনা সদস্য প্রত্যাহার করা হবেঃ ব্লেয়ার(ছবি)

cri

    ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ২১ ফেব্রুয়ারী নিম্ন পরিষদকে জানিয়েছেন, ব্রিটেন সরকার আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ইরাকে মোতায়েন ব্রিটিশ সৈন্যের সংখ্যা ৭ হাজার ১শ' থেকে কমিয়ে ৫ হাজার ৫শ'তে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে ফিরিয়ে আনা ব্রিটিশ সৈন্যের সংখ্যা হবে ইরাকে মোতায়েনকৃত মোট সৈন্যের ৪ ভাগের ১ ভাগ।

    ইরাকে ব্রিটেন ও মার্কিন বাহিনী মোতায়েনের চতুর্থ বার্ষিকী লগ্নে ব্লেয়ার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বর্তমানে দক্ষিণ ইরাকের পরিস্থিতি মূলত স্থিতিশীল। ২০ ফেব্রুয়ারী, ইরাকে মোতায়েন ব্রিটিশ বাহিনী বসরার পরিচালন ক্ষমতা ইরাকী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে। এখন ইরাকী বাহিনী বসরার নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম। তাই সেখানে মোতায়েনকৃত ব্রিটিশ বাহিনীকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। ব্লেয়ার বলেছেন, বৃটেনের এই উদ্যোগের ফলে, ব্রিটেন ও বহুজাতিক বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদেশগুলো ইরাকে 'প্রয়োজনীয় সময়সীমার অতিরিক্ত সময় তাদের সৈন্য অবস্থান করবে না এ কথাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এর পাশা পাশি তিনি বলেছেন, ব্রিটিশ বাহিনী সম্ভবত ২০০৮ সাল পর্যন্ত মোতায়েন থাকবে। যাতে ইরাকী বাহিনীকে প্রশিক্ষণদানে সাহায্য করা এবং সেখানকার পরিবহণ ও সীমান্ত লাইন সংরক্ষণ করা যায়।

    একজন বিশ্লেষক বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে, ইরাক থেকে বাহিনী ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ব্লেয়ায়ের অক্ষমতার পরিচয়।

    প্রথমতঃ দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ করে, ইরাক সমস্যার ব্যাপারে ব্লেয়ারকে দেশের জনগণের সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে এবং এর জন্য তাকে বিরাট রাজনৈতিক মূল্যও দিতে হয়েছে। ২০০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের ইরাকে যুদ্ধ শুরুর পর ব্রিটেনের বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ ও জনগণ ইরাক যুদ্ধে জড়ানোর জন্যে ব্লেয়ারের 'তীব্র' নিন্দা করেছে। ফলে ব্লেয়ারের সমর্থনের হার দ্রুত কমে যায় এবং বেশ কয়েকবার লেবার পার্টিকে 'সমালোচনা'র মুখোমুখি হতে হয়। ব্রিটেনের তথ্য মাধ্যমের ২০ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত সর্বোচ্চ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, বর্তমান রক্ষণশীল পার্টির সমর্থন হার হচ্ছে ৪০ শতাংশ এবং ব্লেয়ারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টির সমর্থন হার মাত্র ৩১ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাসে ব্রিটেনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ব্লেয়ার এই বছর ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। সুতরাং ব্লেয়ার এ সময় সৈন্য প্রত্যাহতারের ঘোষণা দিয়ে, স্পষ্টভাবেই লেবার পার্টির প্রতিকূল পরিস্থিতিকে অনুকূল করতে চান। দেখা যায় যে, এই উদ্যোগের তিন মাস পর অনুষ্ঠিতব্য স্থানীয় নির্বাচনে ব্লেয়ারের ১০ বছরের প্রধানমন্ত্রীর কার্যমেয়াদকালীণ রাজনৈতিক ক্ষেত্রের প্রভাব অনেকাংশেই থাকবে।

     দ্বিতীয়তঃ ইরাক ও আফগানিস্তান দু'দেশে যুদ্ধ করার কারণে, বর্তমানে ব্রিটিশ বাহিনীর সামরিক শক্তি ও সাজ-সরঞ্জাম যথেষ্ঠ নয়। প্রধানমন্ত্রী হবার পর, ব্লেয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বে কৌশলগত নীতির অংশ হিসেবে আফগানিস্তান ও ইরাকসহ বিভিন্ন দেশে সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছেন। তা ব্রিটিশ বাহিনীর সামর্থ্যের প্রক্রিয়াকে ব্যহত করেছে। ব্রিটেনের এক প্রতিরক্ষা শ্বেত পত্রে বলা হয়েছে, সর্বাধিক মাত্রায় ব্রিটিশ বাহিনী একই সময়ে দুটো মাঝারী ধরনের এবং ছোট ধরনের সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে পারে। গত বছর, ব্রিটেন আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠিয়েছে। কয়েকজন সেনাপতি এর জন্য তাদের উত্কন্ঠা প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, বর্তমানে ব্রিটিশ বাহিনীর দুটো সামরিক দায়িত্ব রয়েছে। একটি হচ্ছে ইরাকে, অন্য একটি হচ্ছে আফগানিস্তানে। যদি বিপুলমাত্রায় আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর সংখ্যা বাড়ায়, তাহলে গুরুতর সমস্যা সঞ্চারিত হতে পারে। সুতরাং, ইরাক থেকে এখন বাহিনীর কিছু অংশ ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ইরাক যুদ্ধ থেকে ব্লেয়ারের ব্রিটিশ বাহিনী প্রত্যাহারের চেষ্টার কথাই প্রতিফলিত হয়েছে।

    ব্লেয়ার ২১ ফেব্রুয়ারী ইরাক থেকে তার আংশিক বাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষণার আগে, তার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমস্যাটি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেছেন। মার্কিন হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বুশ ২০ ফেব্রুয়ারী ব্লেয়ারের সঙ্গে ব্রিটেন সরকারের প্রত্যাহার ঘোষণা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ব্রিটেনের এবারের ঘোষণায় প্রতিফলিত হয়েছে যে, দক্ষিণ ইরাকে ব্রিটিশ বাহিনীর দায়িত্ব শেষ হয়েছে। এর পাশা পাশি, বার্লিন সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কন্ডোলিত্জা রাইস বলেছেন, মার্কিন ও ব্রিটেন সরকার ব্রিটেনের প্রত্যাহার সমস্যা নিয়ে পুরোপুরি আলোচনা করেছে। কিন্তু তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যদিও ব্রিটেন সরকার ইরাক থেকে তার বাহিনীর কিছু অংশ ফিরিয়ে আনবে। তবুও ইরাকে বহু জাতিক বাহিনীর ওপর এর ফলে কোনো প্রভাব পড়বে না।