v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-02-19 16:44:22    
সিরিয়া ও ইরানের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার হচ্ছে

cri
    সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ১৮ ফেব্রুয়ারী তাঁর দু'দিনব্যাপী ইরান সফর শেষ করেছেন। বাশারের এবারের সফরের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে সিরিয়া এবং ইরানের সম্পর্ককে সুসংহত ও জোরদার করা, আঞ্চলিক সমস্যা বিশেষ করে ইরাক, লেবানন, ফিলিস্তিন ও আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন সমস্যায় দু'দেশের মতামত সমন্বিত করা এবং সম্মিলিতভাবে দু'দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রতিরোধ করা।

    ইরান এবং সিরিয়ার সম্পর্ক বরাবরই খুব ঘনিষ্ঠ। তারা মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিকভাবে সমর্থন করে আসছে। ২০০৫ সালে মাহমুদ আহমাদিনেজাদের ইরানের প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হওয়ার পর আসাদ হচ্ছেন ইরান গিয়ে অভিনন্দন জানানো বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই অভিযোগ করছে যে, ইরান ও সিরিয়া ইরাক ও লেবাননের সমস্যার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা করে যাচ্ছে এবং গোপনে ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু ইরান ও সিরিয়া তা অস্বীকার করেছে। বাশারের এবারের ইরান সফর হচ্ছে মাহমুদ আহমাদিনেজাদের ইরানের প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হওয়ার পর তাঁর দ্বিতীয় সফর। সফরকালে বাশার যথাক্রমে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনী এবং ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সর্বোচ্চ কমিটির সচিব ও পরমাণু আলোচনা বিষয়ক শীর্ষ প্রতিনিধি আলি লারিজানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাঁরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে মত বিনিময় করেছেন এবং মতৈক্যের কথা প্রকাশ করেছে।

    সিরিয়া ও ইরানের নেতৃবৃন্দ বর্তমানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক প্রসঙ্গে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা পুনরায় জোর দিয়ে বলেছেন, দু'পক্ষ সহযোগিতাকে ভবিষ্যতে আরো ঘনিষ্ঠতর করবে। আঞ্চলিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বাশার মাহমুদ আহমাদিনেজাদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, দু'পক্ষ ইরাক সরকারকে এবং ইরাকের ঐক্য ও দেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে। তাঁরা লেবাননের বিভিন্ন রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের কাছে মিলিতভাবে লেবাননের ভূভাগীয় অখন্ডতা এবং সেদেশের স্থিতিশীলতা সুরক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

    সম্প্রতি সিরিয়া ও ইরান যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক চাপের সম্মুখী হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে, সিরিয়া লেবাননের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছে। ফলে লেবাননের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সাংঘর্ষিক এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাফিক আল-হারিরির হত্যাকান্ডের শুনানীর জন্যে আন্তর্জাতিক আদালত প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে, সিরিয়া ও ইরান ইরাকের যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী সশস্ত্র তত্পরতাকে সমর্থন করেছে এবং ইরাকের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ধ্বংস করেছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে ইরানকে সমর্থনকারী রাজনৈতিক ধর্মীয় শক্তিগুলোকে দমন করছে এবং ইরাকের প্রতি ইরানের প্রভাব দুর্বল করার চেষ্টা করছে। এ পরিস্থিতিতে সিরিয়া ও ইরানের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সুসংহত ও জোরদার এবং সম্মিলিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘকালীন চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে সিরিয়ার উচিত ইরানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা। যাতে নিংসঙ্গ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে যাওয়া আসা যায়। যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে উপসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক শক্তি জোরদার করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের সামরিক বৈরীতা দিন দিন প্রখর। তাই ইরানের সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধের ব্যাপারে সঠিক উদ্যোগ নেয়া জড়াসো উচিত।

    এবারের সাক্ষাত্কালে সিরিয়া ও ইরানের নেতৃবৃন্দ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার কথা বলেছেন। পাশা পাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে বাশার হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে জাতিগত ও সম্প্রদায়ীকতা সৃষ্টির মাধ্যমে ইসলামি বিশ্বকে দ্বিধাবিভক্ত করার লক্ষ্য বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে তার সকল ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে সক্ষম হবে। মাহমুদ আহমাদিনেজাদ জোর দিয়ে বলেছেন, ইরাক, আফগানিস্তান, লেবানন ও ফিলিস্তিনের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ইরান ও সিরিয়ার আলোচনা ও সমন্বয় জোরদারের মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে শত্রুকে প্রতিরোধ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দু'দেশ মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের মুসলমানদের ঐক্য জোরদার করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতিগত দ্বন্দ্ব সৃষ্টির অপচেষ্টাকে বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছে।