চীনা জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যিক উত্সব--বসন্ত উত্সবের প্রাক্কালে চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাষ্ট্রীয় পরিষদ ১৬ ফেব্রুয়ারী পেইচিংয়ে ২০০৭ সালের বসন্ত উত্সবের জন্যে এক প্রীতিসম্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। হু চিনথাও , উ পাংকো, ওয়েন চিয়াপাও প্রমুখ চীনা পার্টি ও সরকারের নেতৃবৃন্দরা রাজধানী পেইচিংয়ের বিভিন্ন মহলের ৪০০০ ব্যক্তিদের সঙ্গে এই বসন্ত উত্সব উদযাপন করেছেন ।
নয়া চীন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রত্যেক বছরই চীনা নেতৃবৃন্দবসন্ত উত্সব উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিসম্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন ।
আজকের পেইচিং মহা গণ ভবন রঙবেরঙয়ের ফুলে সাজানো হয়েছে এবং উত্সবের আনন্দে মুখরিত হয়েছে । চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক , প্রেসিডেন্ট , কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান হু চিনথাও উত্সবের প্রীতিসম্মিলনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন । তিনি দেশ-বিদেশে বসবাসকারী চীনাদের উদ্দেশ্যে বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন , আমি চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি , রাষ্ট্রীয় পরিষদের পক্ষ থেকে সারা দেশের বিভিন্ন জাতির জনগণ , সকল শ্রমিক, কৃষক , বুদ্ধিজীবী ও কেডার, গণ মুক্তি ফৌজের অফিসার ও সৈনিক , সামরিক পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনীর পুলিশ , বিভিন্ন গণতান্ত্রিক পার্টি ও দল এবং শিল্প ও বাণিজ্য ফেডারেশন , বিভিন্ন গণ সংঘ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের সুধীজনদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি । হংকং ও ম্যাকাওবিশেষ প্রশাসন এলাকার অধিবাসীদের এবং তাইওয়ান স্বদেশবাসী ও বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসী চীনাদের প্রতি প্রীতি ও আন্তরিকশুভেচ্ছা জানাচ্ছি । যারা চীনদেশের আধুনিকায়নের নির্মাণকাজ সমর্থন করেন সেই সব আন্তর্জাতিক বন্ধুদের প্রতিও অকৃত্রিমধন্যবাদ জানাচ্ছি ।
প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়াপাও প্রীতিসম্মিলনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় বলেছেন , গেল এক বছরে চীনের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আনন্দদায়ক সাফল্য অর্জিত হয়েছে । নতুন বছরে চীন সুষম সমাজতান্ত্রিক সমাজ গঠনের কাজ ত্বরান্বিত করবে । জাতীয় অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাবে । তিনি জোর দিয়ে বলেছেন , গণ জীবিকার উপর মনোযোগ রাখা , গণ জীবিকাকে গুরুত্ব দেয়া , গণ জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান করা চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির মনেপ্রাণে জনগণের সেবা করার নীতির অংশ । এটা চীন সরকারের মৌলিক দায়িত্ব । গণ জীবিকার সমস্যা সমাধানের লক্ষে সব সময় অর্থনৈতিক নির্মাণকে কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণকারকাজে অটল থাকতে হবে । অবিচলিতভাবে সংস্কার ও উন্মুক্তদ্বার নীতিতে দৃঢ় থাকতে হবে এবং কর্মেররীতিনীতি উন্নত করতে হবে । তিনি বলেছেন , গণ জীবিকা সমস্যার সমাধান করা হলে উত্পাদন শক্তির উন্নয়নকে কাজে লাগাতে হবে । বৈজ্ঞানিক উন্নয়ন, সুষম উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ উন্নয়নে অটল থাকতে হবে । বিপুলমাত্রায় সামাজিক সম্পদ বৃদ্ধি জোরদার করতে হবে এবং গণ জীবিকা উন্নত করার জন্য মজবুত বস্তুগত ভিত্তিওস্থাপন করতে হবে । সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতির সং স্কারে একনিষ্ঠ থাকতে হবে । সামাজিক উন্নয়নের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় এমন অর্থনৈতিক কাঠামো , রাজনৈতিক কাঠামো , সাংস্কৃতিককাঠামো এবং সামাজিক কাঠামোরসংস্কারকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । জনসাধারণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও বৈধ স্বার্থের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে । সমাজের সুষমতা ও ন্যায়সঙ্গততা বাস্তবায়ন করতে হবে । পার্টি , সরকার ও জনসাধারণের মধ্যেকার সম্পর্ককে আরও নিবিড় করতে হবে । জনসাধারণের আকাঙ্ক্ষাকেজানতে হবে । তাদের প্রস্তাব শুনতে হবে । সত্যিকারভাবে শিক্ষা , চিকিত্সা , কর্মসংস্থান , আয়ের বন্টন , সামাজিক বীমা জনসাধারণের স্বার্থেরসঙ্গে সরাসরি জড়িত এমন সমস্যারও সমাধান করতে হবে ।
ভাষণের শেষে ওয়েন চিয়াপাও বলেছেন , যদি আমরা আন্তরিকভাবে জনসাধারণের সেবা করি, সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালিয়ে গণ জীবিকা সমস্যার সমাধান করি , তাহলে আমরা জনসাধারণের সমর্থন লাভ করতে পারব । আসুন , আমরা কমরেড হু চিনথাওয়ের নেতৃত্বাধীন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে সুষম সমাজতান্ত্রিক ও আধুনিক চীন গঠন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই ।
|