v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-02-16 16:58:49    
আব্বাস হানিয়াকে নতুন সরকার গঠনের দায়িত্ব দেন

cri

 ১১ মাস ক্ষমতাসীন থাকার পর হামাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনের সরকার ১৫ ফেব্রুয়ারী দলগতভাবে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছে। এর পরপরই ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আনুষ্ঠানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসমাইল হানিয়াকে জাতীয় যৌথ সরকার গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। এ থেকে প্রতিপন্ন হচ্ছে যে, ফিলিস্তিনের জাতীয় পুনর্মিলনের বাস্তবায়ন , আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধ নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ এগিয়েছে।

 এ দিন গাজায় আব্বাস একটি সংক্ষিপ্ত দায়িত্ব প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। অনুষ্ঠানে হানিয়া মন্ত্রিসভার সকল সদস্যের প্রতিনিধি হিসেবে আব্বাসের কাছে সবার পদত্যাগ পত্র দাখিল করেছেন। আব্বাস পদত্যাগ পত্র গ্রহণের পর আনুষ্ঠানিকভাবে হানিয়াকে পরবর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। আব্বাস নতুন সরকারের উদ্দেশ্যে ফিলিস্তিন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত এবং ফিলিস্তিন ও ইস্রাইলের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। হানিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি আব্বাসের নিয়োগ পত্রের বিষয়বস্তু অনুসারে নতুন সরকার গঠন করবেন। ফিলিস্তিনের আইন অনুযায়ী, হানিয়া পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ সম্পন্ন করবেন। এ সময় হানিয়া অব্যাহতভাবে তত্ত্বাবধানয়ক মন্ত্রিসভার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

 হামাস সরকারের পদত্যাগ এবং হানিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন দলের যৌথ সরকার গঠনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গত এক বছরে ফিলিস্তিন গুরুতর আর্থিক সংকট আর অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের মধ্যে নিপতিত । যৌথ সরকার প্রতিষ্ঠার প্রয়াস বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। হামাস ও ফাতাহ বহু বার আলোচনা ও সংঘর্ষের পর অবশেষে যৌথ মন্ত্রিসভা গঠনের বাস্তব কাজ শুরু করেছে। এটা ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ অবসান করা এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক সাহায্য পুনরুদ্ধার করার জন্য আশা বয়ে এনেছে।

 কিন্তু হামাস ও ফাতাহ এখনো নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

 প্রথমতঃ নতুন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রার্থী নির্ধারণ করা দরকার। এখন দু'পক্ষের মধ্যে উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদের প্রার্থীর ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। খবরে জানা গেছে, ফাতাহ ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বশীল ব্যক্তি মোহাম্মদ দাহলানকে উপ-প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করেছে। কিন্তু হামাস তার বিরোধীতা করে যাচ্ছে। দাহলান হচ্ছে গাজায় ফাতাহ'র একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁকে আব্বাসের উত্তরাধিকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু তার আর হামাসের মধ্যে অসংগতি দীর্ঘদিনের। সুতরাং হামাস ফাতাহকে জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের যে কোন একজন কর্মকর্তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদে নিয়োগ করার অনুরোধ করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রার্থি সমস্যায় হামাস দু'জন প্রার্থীর নাম দিয়েছে, কিন্তু আব্বাস এ ব্যাপারে তার কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নি।

 দ্বিতীয়ত, দু'পক্ষের হামাসের সশস্ত্র শক্তির ব্যাপারে আপোষ করা দরকার। ফাতাহ এর নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য গত বছর হামাস আব্বাসের বিরোধীতা উপেক্ষা করে একটি নির্বাহী বাহিনী প্রতিষ্ঠা করে। এখন এ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। গত কয়েক মাসে হামাস ও ফাতাহ-এর মধ্যে সংঘর্ষে নির্বাহী বাহিনী অধিকাংশ সময় সশস্ত্র তত্পরতায় অংশ নিয়েছে এবং আব্বাসের নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বহু বার গুলি বিনিময় করেছে। এখন এই বাহিনী বিলুপ্তির ব্যাপারে দু'পক্ষের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

 তা ছাড়াও, আব্বাস ও হানিয়া বহিঃ বিশ্বের নতুন সরকার ইস্রাইলকে স্বীকার করার চাপ মোকাবেলা করতে হয়। ফিলিস্তিনী আশা করে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নতুন সরকারকে গ্রহণ করবে এবং ফিলিস্তিনের ওপর চাপিয়ে দেয়া অর্থনৈতিক অবরোধ বাতিল করবে। কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারী মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, ফিলিস্তিনের নতুন সরকারকে স্পষ্টভাবে ইস্রাইল স্বীকার করতে, সহিংস তত্পরতা পরিত্যাগের কথা ঘোষণা করতে এবং ফিলিস্তিন ও ইস্রাইলের মধ্যকার স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি মেনে নিতে হবে। না হলে যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে এ সরকারকে বয়কট করবে এবং তার মন্ত্রিসভার কোন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করবে না। ইস্রাইল জোরালো ভাষায় বলেছে যে, যে কোন ফিলিস্তিন সরকারই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ তিনটি শর্ত গ্রহণ করতেই হবে। কিন্তু হামাসের কথা হচ্ছে, নতুন সরকার কোন মতে ইস্রাইলকে স্বীকার করবে না। তাহলে বুঝা যায় যে, আব্বাস ও হামাসের মধ্যেকার এই সমস্যা নিয়ে তর্কবিতর্ক এড়ানো সম্ভব নয়।