কিছু দিন আগে বিশ্বব্যাংক পেইচিংয়ে ' চীনের এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মান সম্পর্কিত একটি রির্পোট প্রকাশ করেছে । এই রির্পোটের প্রকাশনা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত একটি অধিবেশনে চীনের যানবাহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী উন মেন ইয়োন ও বিশ্ব ব্যাংকের পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ব্যুরোর প্রধান ক্রিষ্টিয়ান দেলভোই বলেছেন , চীন ও বিশ্ব ব্যাংক এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবে এবং চীনের যানবাহনের উন্নয়ন তরান্বিত করবে ।
একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , গত বছরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত চীনের এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৫ হাজার কিলোমিটার ছাড়িয়েছে । এ ক্ষেত্রে চীন বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে । অর্থনীতির উন্নয়ন তরান্বিত করার জন্য চীন যে যানবাহনের অবকাঠামো নির্মানকে প্রাধান্য দেয়ার নীতি কার্যকর করছে , বিশ্বব্যাংকের রির্পোটে তা' সমর্থন জানানো হয়েছে । বিশ্বব্যাংকের পূর্ব এশিয় ও প্যাসিফিক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ব্যুরোর প্রধান ক্রিষ্টিয়ান দেলভোই বলেছেন , চীনের এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র১৫ বছরের মধ্যে ৫ হাজার কিলোমিটার থেকে ৪৫ হাজার কিলোমিটারে পৌঁচেছে । এ ধরনের বিরাট সাফল্য বিশ্ব ইতিহাসেও বিরল। চীনের এই সাফল্য তার টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিকে আরো দৃঢ করেছে । এর পাশাপাশি চীনের গত ১৫ বছরের উন্নয়ন প্রমান করেছে যে , চীন ইতোমধ্যে বিশ্বের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে ।
তিনি আরো বলেছেন , বিশ্বব্যাংক চীনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মান কাজে সাহায্য করার জন্য গর্ববোধ করে । ১৯৮৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাংক চীনের সড়কপথ নির্মানে মোট ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে । মোট ২৮টি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মান প্রকল্প বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সাহায্য পেয়েছে ।
সভায় চীনের যানবাহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী উন মেন ইয়োন বিশ্বব্যাংকের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন , পরবর্তীকালে চীন অব্যাহতভাবে সড়ক পথের নির্মানকে আরো প্রাধান্য দেবে , যাতে চীনের এক্সপ্রেসওয়ের জাল দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বেশী ভুমিকা নিতে পারে । ২০২০ সালে চীনের এক্সপ্রেসওয়ে নেট প্রতিষ্ঠিত হবে , সেই সময় চীনের এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য হবে ৭০ হাজার কিলোমিটার হবে । এ ক্ষেত্রে চীন অব্যাহতভাবে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবে । তিনি বলেছেন , ( রেকর্ডিং ২ )বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সাহায্য চীনের আর্থিক ঘাটতি সমস্যার নিষ্পত্তি করেছে । বিশ্বব্যাংকের সাহায্যে আমরা বিদেশের উন্নত প্রযুক্তি ও পরিচালনা পদ্ধতি কাজে লাগিয়েছি । আমরা বিশ্বাস করি বিশ্বব্যাংক ভবিষ্যতেও চীনের যানবাহনের উন্নয়নে সাহায্য দেবে।
বিশ্বব্যাংকের রির্পোটে চীনের পরবর্তীকালের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মান তরান্বিত করার প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে । বিশ্বব্যাংকের পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন ব্যুরোর প্রধান ক্রিষ্টিয়ান ডেলভোই বলেছেন , পরিপূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ে নেট নির্মানে চীন তিনটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে । প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানের একটি পরিপূর্ণ ও যুক্তিযুক্ত পরিকল্পনা তৈরী করা , যাতে এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের কার্যকারীতা বাড়ানো যায়। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো অর্থ সংগ্রহ । পরিকল্পনা অনুসারে চীন পরবর্তীকালে প্রতিবছর এ ক্ষেত্রে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করবে । প্রতি বছর এত বেশি অর্থ জোগাড় করা অত সহজ ব্যাপার নয় । এ ছাড়া এক্সপ্রেস ওয়ের সঙ্গে সংযোগকারী শাখা সড়কের নির্মানও ব্যায়সাপেক্ষ । তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হলো এক্সপ্রেস ওয়ের সুষ্ঠু পরিচালনা । গাড়ীগুলোর অতিরিক্ত মাল বোঝাই , যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ অনেক সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য নিয়মবিধি প্রণয়ন করা ।
এই তিনটি চ্যালেঞ্জের মোকাবেলার জন্য বিশ্বব্যাংক চীন সরকারকে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানে প্রত্যন্ত অঞ্চলকে বেশি সুবিধা দেওয়ার এবং বেসরকারী অর্থ জোগাড় করার প্রস্তাব দিয়েছে । বিশ্বব্যাংক অচিরেই চীনের যানবাহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে ।
|