v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-02-14 17:50:48    
ভলরাদিমির পুতিনের মধ্য-প্রাচ্য সফরের ফলে এ অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব বেড়েছে

cri
    রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ১৩ ফেব্রুয়ারী মধ্য-প্রাচ্যের তিন দেশ যথাক্রমে সৌদি আরব, কাতার ও জর্দান সফর শেষ করেছেন। এবারের সফর হল পুতিনের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন কালীন তাঁর প্রথম মধ্য-প্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ঐতিহ্যিক মিত্রদেশ সফর এবং ৮০ বছরের মধ্যে রাশিয়ার সর্বোচ্চ কোনো নেতার প্রথম সৌদি আরব সফর। বিশ্লেষজ্ঞরা মনে করেন, তাঁর এবারের সফরের মাধ্যমে রাশিয়া এ তিনটি দেশের সঙ্গে জ্বালানি শক্তি ও সামরিক ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদার হয়েছে এবং মধ্য-প্রাচ্য অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব বেড়েছে।

    এবারের সফরের আগে পুতিন ৪৩তম মুনিছ নিরাপত্তা নীতি সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বিষয়ে ব্যাপকভাবে সশস্ত্র শক্তির ব্যবহার ও একীপক্ষীয়বাদ নীতিতে অবিচল থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক, ফিলিস্তিন-ইসরাইল বিবাদ ও ইরানের পরমাণু সমস্যার ব্যাপারে বিরাট মতভেদ এখানে রয়েছে। বর্তমানে রাশিয়া-মার্কিন মতভেদ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য-প্রাচ্যের তিনটি ঐতিহ্যিক মিত্রদেশ সফরের ফলে উদ্বেগের সৃষ্ট হয়েছে।

    পুতিনের এবারের সফরের একটি প্রধান লক্ষ্য হল সৌদি আরব, কাতার ও জর্দানের সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক ও জ্বালানি শক্তি ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করা। কয়েক জন মন্ত্রী ছাড়াও, রাশিয়ার প্রায় ৬০জন শিল্পপতি ও বাণির্জ্যিক কোম্পানির দায়িত্ববান কর্মকর্তাও এবার পুতিনের সঙ্গে এবারের সফর করেছেন। সফরকালে রাশিয়া সৌদি আরব ও কাতারের সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক, জ্বালানি শক্তি ও তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ধারাবাহিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। রাশিয়া এ বছরের মধ্যে সৌদি আরবের জন্য ছয়টি তথ্য উপগ্রহ নিক্ষেপ করবে এবং সৌদি আরব রাশিয়ায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে রাজী হয়েছে। পুতিন রাশিয়া সৌদি আরবকে পরমাণু শক্তি উন্নয়নে সাহায্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সৌদি আরবের রাজা বলেছেন, দু'দেশ এক যৌথ কমিটির মাধ্যমে তেলের নীতি সমঝোতা করবে এবং মিলিতভাবে বিশ্ব তেল বাজারের স্থিতিশীলতা সুরক্ষা করবে। পুতিন ১২ ফেব্রুয়ারী সৌদি আরব থেকে কাতারে যান। কাতারে দু'পক্ষ তেল রফতানিকারক দেশগুলোর একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। এ সংস্থা বিশেষ করে প্রাকৃতিক গ্যাসের উত্পাদন সমঝোতা এবং তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সহযোগিতার জোরদারের দায়িত্ব পালন করবে। রাশিয়া জর্দানের সঙ্গে অনেক সহযোগিতার দলিলপত্র স্বাক্ষর করেছে।

    পুতিনের এবারের সফরের আরেকটি লক্ষ্য হল রাশিয়ার মধ্য-প্রাচ্য বিষয়ে আরো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা ও তার প্রভাব বাড়ানো। সফরকালে পুতিন তিনটি দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষ, ইরাকের পরিস্থিতি ও ইরানের পরমাণু সমস্যাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। একটি 'স্বয়ংসম্পর্ণ এবং স্বাধীন' ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বিভিন্ন পক্ষের মতৈক্য হয়েছে। 'মধ্য-প্রাচ্যের সার্বিক আর ন্যায্য শান্তির' লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য যথাশীঘ্র সম্ভব আলোচনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। মধ্য-প্রাচ্যের এ তিনটি দেশের নেতৃবৃন্দ আরো জোর দিয়ে বলেছেন, তাঁরা ফিলিস্তিন-ইসরাইল বিবাদসহ বিভিন্ন সমস্যার শান্তিপূর্ণ নিরসনের জন্য রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্ব দেন। তাঁরা আশা করেন, রাশিয়া আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা ত্বরান্বিতের জন্য অব্যাহতভাবে ভূমিকা পালনে করবেন। পুতিন বলেছেন, রাশিয়া মধ্য-প্রাচ্য অঞ্চলে তার প্রভাব ও শক্তি দিয়ে সে আরব দেশগুলো ও ইসরাইলের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘর্ষের জন্য অবদান রাখবে।

    এবারের সফর শেষ হওয়ার আগে, পুতিন আম্মান বিমান বন্দরে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পুতিন ফিলিস্তিনের জাতীয় ক্ষমতা সংস্থার কাজ স্বাক্ষরিত ফিলিস্তিন-ইসরাইল চুক্তি মেনে চলা, অপহৃত ইসরাইলী সৈন্যকে মুক্তি দেয়া ও ইসরাইলের সঙ্গে সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন। পুতিন বলেছেন, রাশিয়া অব্যাহতভাবে মধ্য-প্রাচ্যের সমস্যাগুলো সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তিন পক্ষের সঙ্গে গিলে নিরসনের চেষ্টা করবে।

    বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতি পক্ষপাতীত্ব দেখানো এবং বরাবরই মধ্য-প্রাচ্য অঞ্চলে তার মূল্যবোধ ও তথাকথিত গণতন্ত্র প্রচার করার ফলে মধ্য-প্রাচ্য দেশগুলোতে অসন্তোষ সৃষ্ট হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বছরে রাশিয়ার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে সুষ্ঠু হচ্ছে দেশের শক্তিও বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে কোনো কোনো মধ্য-প্রাচ্য দেশ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে ইচ্ছুক এবং আশা করে রাশিয়া মধ্য-প্রাচ্য বিষয়ে আরো ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। পুতিনের এবারের সফর রাশিয়ার মধ্য-প্রাচ্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং মধ্য-প্রাচ্য অঞ্চলে তার প্রভাব বাড়ানোর ক্ষেত্রে কল্যাণকর হবে।