v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-02-14 17:27:02    
একই রকম বসন্ত উত্সব , ভিন্ন ধরণের খাবার-টাবার

cri
    ক: প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা , আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্যে আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমি উপস্থাপক শি চিং উ ।

    খ : আমি সুয়ে ফেই ফেই । আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী । কয়েক দিন পর অর্থাত ১৮ ফেব্রুয়ারী হবে চীনের ঐতিহ্যিক বসন্ত উত্সব।

    ক: আপনি ঠিকই বলেছেন । চীনের প্রাচীনতম উত্সব হিসেবে বসন্ত উত্সবের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও রেওয়াজ রয়েছে । চীনাদের কাছে এ উত্সব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্সব । চীনের চান্দ্রবর্ষের শেষ মাসের শেষ দিনে যে যেখানে থাকুক না কেন , চীনারা নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে একসংগে খেতে বসেন এবং নববর্ষকে ররণ করেন ।

    খ: চীনের রেওয়াজ অনুসারে চান্দ্রবর্ষের শেষ মাসের ২৩ তারিখ থেকে নববর্ষ শুরু হয় । এ দিন থেকেই সবাই বসন্ত উত্সবের জন্যে নানা ধরণের প্রস্তুতি নিতে থাকেন । এর মধ্যে ৩০ তারিখের রাতের খাওয়া-দাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে । নববর্ষের জন্যে এসব প্রস্তুতিমূলক কাজের মধ্যে উত্সবের আমেজ ক্রমে ঘন হয়ে থাকে এবং আত্মীয়স্বজনদের মিলনের প্রত্যাশাও প্রতিফলিত হয় ।

    ক: সুতরাং সকল চীনার কাছে পরিবারের সবাই মিলে একসংগে বসে ৩০ তারিখের খাওয়া-দাওয়া করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বলে বিবেচিত হয় ।দীর্ঘদিন ধরে চীনারা নিজেদের বাড়িতে নিজেদের হাতে সুস্বাদু খাবার তৈরি করে ৩০ তারিখের খাওয়া-দাওয়া করতে অভ্যস্ত ছিলেন । অথচ গত কয়েক বছর সামাজিক বিকাশ ও জনসাধারণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের সংগে সংগে এ রেওয়াজের কিছু পরিবর্তন ঘটেছে ।

    খ: সম্প্রতি আমাদের সংবাদদাতা একজন পেইচিংবাসীর সাক্ষাত্কার নিয়েছেন । এখন আমরা তার কাছ থেকে নববর্ষের আগের রাতের খাওয়া-দাওয়া সম্পর্কে তার পরিকল্পনা শুনবো । তিনি বলেছেন ,

    অতীতে আমরা সবসময় বাড়িতে খেতাম । তবে দু' বছর আগে থেকে আমরা বাইরের রেস্তোঁরায় খেতে শুরু করেছি । এতে আমাদের অনেক ঝামেলা কমেছে এবং নানা সাধের খাবার উপভোগ করতে পারি । সামনের এ বসন্ত উত্সবের আগের রাতেও আমরা রেস্তোঁরায় খাবো ।

    ক: এখন অনেক চীনা লোক বাইরের রেস্তোঁরায় গিয়ে পুরনো বছরের শেষ রাতের খাওয়া-দাওয়া করেন । এতে প্রতিফলিত হয়েছে যে, তাদের জীবনযাত্রার মান সত্যিই উন্নত হয়েছে ।

    খ: এতে আরো প্রমাণিত হয়েছে যে , সবাই জীবনযাত্রার উন্নত মান কামনা করেন । কেন না কয়েক শ' ইউয়ান ব্যয় করে চীনারা বিভিন্ন স্থানের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাবার উপভোগ করতে পারেন । বসন্ত উত্সবের আগে আমাদের সংবাদদাতা পেইচিংয়ের বিভিন্ন রেস্তোঁরা ঘুরে ঘুরে দেখেছেন । এসব রেস্তোঁরা এখন জোরেসোরে বসন্ত উত্সবের জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে । প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা , এবার আসুন , আমরা একসাথে অনুভব করতে যাই ।

    এখন আপনারা শুনতে পাচ্ছেন পেইচিংয়ের উত্তর-পশ্চিম চীনের রীতির একটি রেস্তোঁরার শিল্পীদের গাওয়া গান ।তারা গান গেয়ে গেয়ে অতিথিদের স্বাগত জানাচ্ছেন । এ রেস্তোঁরা অতিথিদের বিশেষ সেবা প্রদানের জন্যে উত্তর-পশ্চিম চীন থেকে স্থানীয় শিল্পীদের আমন্ত্রণ করে এসেছে ।

    ক: এখন চীনে খাওয়া-দাওয়াও এক রকম সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে । বিশেষ করে বসন্ত উত্সবের আগের রাতের খাওয়া-দাওয়ায় সরগরম ও সম্প্রীতিময় পরিবেশ থাকা প্রয়োজন । এমন পরিবেশে অতিথিরা স্বচ্ছন্দভাবে খেতে পারেন । এ রেস্তোঁরার ম্যানেজার চি আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছেন ,

    আমাদের রেস্তোঁরায় প্রধানত সবুজ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য পরিবেশন করা হয় । রন্ধন পদ্ধতিও ঐতিহ্যবাহী । আমরা যেভাবে আমাদের রেস্তোঁরার সাজসজ্জা করেছি , তাতে অতিথিরা যেন নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন । তারা আমাদের এখানে যেমন সুস্বাদু খাবার , তেমনি স্নেহময় পরিসেবাও উপভোগ করতে পারেন ।

    খ: আমাদের অতিথিদের মধ্যে অনেকের বাড়ি পেইচিংয়ের বাইরে । তারা এ রেস্তোঁরায় এক রকম পারিবারিক ভাব অনুভব করতে পারেন । আমরা লক্ষ্য করেছি যে, এ রেস্তোঁরার বারান্দায় বিভিন্ন স্থানের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাদ্য রাখা হয়েছে । অতিথিরা এখান থেকে পছন্দ করতে পারেন ।

    ক: আপনি ঠিকই বলেছেন । এখন চীনের বিভিন্ন স্থানের রেস্তোঁরাগুলোতে বসন্ত উত্সবের আগের রাতের খাওয়া-দাওয়ার অর্ডার নেয়ার কাজ পুরোদমে চলছে । বিশেষ করে কিছু সংখ্যক ঐতিহ্যিক রেস্তোঁরায় অডার নেয়ার কাজ এখন শেষ হয়েছে । অনেক পরিবার কয়েক মাস আগে থেকেই এসব রেস্তোঁরায় অর্ডার দিয়েছে । এ থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বসন্ত উত্সবের আগের রাতের ঐতিহ্যিক খাওয়া-দাওয়া এখন একরকম সরগরম অর্থনীতিতে পরিণত হচ্ছে । এ থেকে প্রমাণিত হয়েছে , চীনের জনসাধারণের জীবন সত্যিই আগের তুলনায় অনেক স্বচ্ছল হয়েছে ।

    খ: অতীতে বাড়িতে নববর্ষের আগের রাতের খাওয়া-দাওয়ার সময় চীনারা একসংগে বসে বারোটার ঘন্টা বাজানোর জন্যে অপেক্ষা করতেন । এটি চীনের সংস্কৃতির একটি রেওয়াজ ছিল । তবে এখন এ রেওয়াজের কিছু পরিবর্তন ঘটেছে । এখনকার লোকেরা নানা উপায়ে নববর্ষের এ শেষ রাত কাটাতে শুরু করেছেন । তারা এখন আত্মীয়স্বজনদের মিলন , আনন্দ , ফ্যাশন ও পরিবেশের ওপর আরো গুরুত্ব দিচ্ছেন ।

    ক: আপনি ঠিকই বলেছেন । এখন জনসাধারণের মধ্যে নানা ধরণের বাছাই রয়েছে । অনেকের আগের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে । কারণ চীনের সামাজিক বিকাশ চীনাদের আরো বেশি সুযোগ সুবিধা এনে দিয়েছে । জীবনের বহুমুখীকরণ চীনের প্রগতি ও উন্নয়নের একটি উত্তম নিদর্শন ।

    খ: আজকের অনুষ্ঠানশেষে আপনারা শুনতে পাবেন চীনের বিভিন্ন স্থানের নববর্ষের শুভেচ্ছা । তারা বিভিন্ন স্থানের আঞ্চলিক ভাষায় তাদের আনন্দ ও আন্তরিক কামনা প্রকাশ করেছেন ।

    ক : সকলের শুভেচ্ছাবাণীর মধ্যে আমাদের আজকের অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাচ্ছে ।

    খ: আমরা আন্তরিকভাবে আশা করছি যে, আমাদের এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আপনারা চীনের ঐতিহ্যবাহী উত্সবের নেপথ্য এবং চীনের ঐতিহ্যক সংস্কৃতি ও আধুনিক চীনের জীবন সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারবেন ।