বাংলাদেশের গোপালগন্ঞ্জ জেলার শ্রোতা নাহিদ বিন হাফিজ তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে সর্বপ্রথমরেল সার্বিস চালু হয় কত সালে? চীনের গভীরতম হ্রদের নাম কি? এখন প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। চীন একটি বিশাল দেশ। রেল পথ চীনের আর্থ-সামাজিক গঠনকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯০৫ সালের অগ্যাষ্ট মাসে চীনের প্রথম রেপপথের নিমার্ন কাজ শুরু হয়। ১৯০৯ সালের এপ্রিল মাসে নিমার্ন কাজ শেষ হয়। এই রেলপথের প্রধান নকশাকারী ছিলেন জেন তিয়েন ইউ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ইনজেনিয়েরিং এর পি এইচ ডি ডিগ্রী লাভ করেন। যখন তাঁর পড়াশুনা শেষ তখন চীনে ছিং রাজবংশকে উত্খাত করা হয়। যার ফলে দু'হাজার বছরেরও বেশি কালের সামন্তবাদী রাজতান্ত্রিকশাসনের অবসান ঘটেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও চীনা সমাজের আধা-ঔপনিবেশিক ও আধা-সামন্তবাদী প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটেনি। তখন চীনে শিল্প সহ অবকাঠামো প্রায় ছিল না বললেই চলে। রেলপথ তো আরও দূরের কথা। জেন তিয়েন ইউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বদেশে ফিরে আসার পর, জেনচিয়াখো থেকে পেইচিং রেল পথের নির্মান কাজে আত্মনিয়োজিত হন। নিমার্ন কাজ চলাকালে তিনি অজস্র অসুবিধা মোকাবেলা করেন। চার বছরে এই প্রথম রেলপথ নির্মান করা হয়। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। চীন দেশে অজস্র ছোট-বড় হ্রদ আছে। তবে চীনের যে সব হ্রদ আছে সে সব হ্রদের মধ্যে ছিনহাই হ্রদ সবচেয়ে বড়। ছিনহাই হ্রদ যেমন চীনের অভ্যন্তর ভাগের সবচেয়ে বড় হ্রদতেমনি সবচেয়ে বড় মিঠা পানির হ্রদ। এই হ্রদ ছিনহাই মালভূমিতে অবস্থিত। একটি আয়নার মত ছিনহাই হ্রদ ছিনহাই মালভূমিতে অবস্থিত। প্রাচীনকালে ছিনহাই হ্রদকে ' পশ্চিম সাগর' ডাকতো। ছিনহাই হ্রদের আয়তন ৪৪৫৬ বগর্কিলোমিটার। এ হ্রদের গড় গভীরতা ১৯ মিটারের কাছাকাছি। ছিনহাই হ্রদের চারপাশে প্রাকৃতিক পশুপালন মাঠ। বিশাল তৃণভূমিতে অজস্র গরু ও ভেড়া দেখা যায়।
গোপালগন্জ জেলার শ্রোতা মো: গোলাস রসুল তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে কি কৈ ও ইলিশ মাছ পাওয়া যায়? বাংলাদেশ থেকে চীনের দূরত্ব কত? এখন প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিছি। হ্যাঁ, চীনে প্রচুর কৈ মাছ আছে। কিন্তু বতর্মানে ইলিশ মাছ খুব কম দেখা যায়। ইলিশ মাছ শুধু ইয়াংসি নদীতে পাওয়া যেত। আজকাল চীনের কোন বাজারে ইলিশ মাছ প্রায়দেখা যায় না বললেই চলে। আপনার দ্বিতীয়প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একটু কঠিন। কারণ এ সম্পর্কে কোন সরকারী তথ্য পাওয়া যায়নি। যাই হোক চীনের খুনমিং থেকে বাংলাদেশ যেতে বিমানে আড়াই ঘন্টা লাগে।
নাটোর জেলার শ্রোতা মো: আরিফুল আলাম মিলন তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে কতজন বাংলাদেশী প্রবাসী রয়েছে? বাংলাদেশী খাবারের প্রভাব চীনে কতটুকু? । এখন প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিছি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক বাংলাদেশী চীনে পড়াশুনা করতে আসেন বা ব্যবসা করতে আসেন। বতর্মানে চীনের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রী আছে। তা ছাড়া, পেইচিং, সাংহাই এবং কুওয়াংযৌর মত শহরে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীও আছে। তাদের মধ্যে অনেকেই চীনা মেয়েকে বিয়ে করে চীনে বসবাস করেন। কিন্ত আমার জানা মতে এখন পযর্ন্ত মাত্র একজন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী চীনের স্থায়ীভাবে থাকার জন্য গ্রীণ কার্ট পেয়েছেন। তবে, চীনের উন্মুক্ততা নীতি আরও গভীরতর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি বাংলাদেশী চীনে থাকার জন্য গ্রীন কার্ট পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। বতর্মানে রাজধানী পেইচিংএ একটি বাঙ্গলী রেস্তাঁরাং আছে। তিন বছর আগে এই রেস্তাঁরাং খোলা হয়। এখন পেইচিংএ এই রেস্তাঁরাং মোটামুটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক চীনা লোক সেখানে বাঙ্গলী খাবার আস্বাদন করতে যান। সি আর আই এর বাংলা বিভাগের সবাই এ রেস্তাঁরাংয়ের বাঙ্গলী খাবার আস্বাদন করেছি। জানা গেছে এই রেস্তাঁরাংএর মালিক একজন বাংলাদেশী বংশোদভুত আমেরিকান। এই রেস্তাঁরাং বিদেশী দূতাবাসের এলাকায় অবস্থিত বলে বিদেশী দূতাবাসের কর্মচারীরা মাঝা মাঝে ওখানে খেতে যান। আমার জানা মতে পেইচিং ছাড়া চীনের অন্যান্য শহরে বাংলা খাবার পাওয়া যায় না । সুতরাং এ কথা বলা যায় যে, এখানে চীনে বাংদেশী খাবারের প্রভাব ততটা গভীর হয়নি।
|