v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-02-13 18:57:25    
চীন ও ভারতের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের নতুন মাইলফলক 

cri
    ভারতের পূর্বাঞ্চলের বিহার রাজ্যের নালন্দা অঞ্চলের হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধের পুনর্নিমাণ প্রকল্প সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে । এ উপলক্ষে চীন ও ভারত মিলিতভাবে এক উদযাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে । উভয় পক্ষই মনে করেন এ স্মৃতিসৌধচীন ও ভারতের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ইতিহাসের আরেকটি মাইলফলক ।

    হিউয়েন সাং চীনের একজন বিখ্যাত সন্ন্যাসী । তিনি সপ্তম শতাব্দীর প্রথমার্ধে জন্মগ্রহণ করেন । বৌদ্ধশাস্ত্র সংগ্রহের জন্য হিউয়েন সাং বাধা-বিঘ্ন উপেক্ষা করে দীর্ঘপথ অতিক্রম করে পশ্চিমের ভারতে গিয়েছিলেন এবং চীন ও ভারতের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য অনন্যসাধারণ অবদান রেখেছিলেন । তার কাহিনী চীন ও ভারতের জনগণের মুখেমুখে । হিউয়েন সাং ভারতে দীর্ঘ ১৬ বছর ছিলেন । ভারত থাকাকালে তিনি ভারতের বৌদ্ধধর্মের পবিত্র স্থানগুলো পরিদর্শন করেন , বিখ্যাত পন্ডিতদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং বৌদ্ধশাস্ত্রেরওপর গবেষণা করেন । তার লেখা ' চীনা সন্ন্যাসীর পশ্চিম যাত্রা' নামক বইতে তখনকার ভারতের সামাজিক উন্নয়নের বাস্তব অবস্থা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে । এ বই উত্তরসূরীদের জন্য প্রাচীন ভারতের ইতিহাস গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক তথ্য যুগিয়েছে ।

    গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে চীন ও ভারতের নেতৃবৃন্দের যৌথ উদ্যোগে হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু হয় । পরে নানা কারণে এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয় নি । ২০০০ সালের পর ভারত হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধ পুননির্মাণের কাজ শুরু করে এবং ২০০৩ সালে স্মৃতিসৌধের বড় হল সাজানো ও স্মৃতিসৌধে গাছ লাগানোর জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্ধ করে । ২০০৫ সালে চীন আনুষ্ঠানিকভাবে নালন্দা হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধ সাজানোর কাজ শুরু করে । চীনা পক্ষের স্মৃতিসৌধ সাজানোর কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে নালন্দা হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধে হিউয়েন সাংয়ের জীবনী সম্পর্কিত দেওয়াল চিত্র টাঙ্গানো , স্মৃতিসৌধে আরো বেশি তৈজসপত্র রাখা , পিতলের তৈরী হিউয়েন সাংয়ের প্রতিকৃতি তৈরী করা , ঘন্টা টাওয়ার নির্মাণ ও স্মৃতিফলক তৈরী ইত্যাদি । দু দেশের প্রচেষ্টায় ৭. ৫ একর জমি বিস্তৃত এক সুন্দর ও বৈশিষ্ট্যময় হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধ পবিত্র স্থান নালন্দায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ।

    হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধের সমাপনী অনুষ্ঠানে সর্বপ্রথমে ঐতিহ্যিক ঘন্টা বাজানো হয় । চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লি চাও সিং , চীনের জাতীয় ধর্মবিষয়ক ব্যুরোর প্রধান ইয়ে সিয়াও উয়েন , ভারতের পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আম্বিকা সনি ও ভারতের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক কমিটির চেয়ারম্যান করণ সিংসহ চীন ও ভারতের আটজন বিশিষ্ট ব্যক্তি অনুষ্ঠানে ঘন্টা বাজিয়েছেন ।

    হিউয়েন সাংয়ের প্রতিকৃতির সামনে পুস্প প্রদান ও দ্বীপ জ্বালিয়ে দেয়ার পর চীন ও ভারতের মোট ৮৪জন সন্ন্যাসী স্মৃতিসৌধের বড় হলে বৌদ্ধশাস্ত্র পড়তে শুরু করেন ।

    ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পর চীন ও ভারতের বিশিষ্ট অতিথিরা ভাষণ দিয়েছেন । চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লি চাও সিং চীন সরকারের পক্ষ থেকে হিউয়েন সাং স্মৃতিসৌধ নির্মানের কাজ সুসম্পন্ন হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন , চীন ও ভারত দুটি প্রাচীন সভ্যদেশ , দুটি দেশই মানবজাতির সভ্যতার জন্য বিরাট অবদান রেখেছে । তিনি আরো বলেছেন , বিশ্বের দুটি উন্নয়নশীল বৃহত দেশ হিসেবে চীন ও ভারতের মধ্যে ব্যাপক অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে । চীন ও ভারতের মৈত্রী শুধু দুটি দেশেই নয় , এশিয়া তথা বিশ্বের জন্যও অনুকুল হবে । উন্নয়ন হচ্ছে চীন ও ভারতের সরকার ও জনগণের অভিন্ন ঐতিহাসিক দায়িত্ব ।

    ভারতের সাংস্কৃতিক বিনিময় কমিটির চেয়ারম্যান করণ সিং তার ভাষণে হিউয়েন সাংকে মহান পন্ডিত , মহান অনুবাদক ও মহান শিক্ষাবিদ হিসেবে অভিহিত করেন । তিনি বলেছেন , হিউয়েন সাং প্রচুর বৌদ্ধশাস্ত্র সংস্কৃত ভাষা থেকে চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছেন এবং বৌধধর্মের চিন্তাধারা প্রচারের জন্য অনন্য সাধারণ অবদান রেখেছেন । ভারতীয় জনগণ হিউয়েন সাংকে শ্রদ্ধা করেন । বৌদ্ধধর্মের শান্তি ও মৈত্রীর চিন্তাধারা বর্তমান বিশ্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।