সম্প্রতি চীনের বিমান নির্মান শিল্পের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বে তার নিজের তৈরী নতুন পর্যায়ের "চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমানের কথা প্রকাশ করেছে । এর মাধ্যমে বিমান তৈরীর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টি পূর্ণাঙ্গরূপে ফুটে উঠেছে। একই সঙ্গে চীনের বিমান নির্মান শিল্প দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক গুরুত্বও পেয়েছে । সম্প্রতি চীনের নিজস্ব তৈরী দু'টি জঙ্গী বিমানের এসব পক্ষের চারটি বিমানের সঙ্গে বিমানবন্দরে একবার বিশেষ সামরিক মহড়া দিছিলো। অবশেষে এ দু'টি জঙ্গী বিমান মহড়ায় সাফল্যের সঙ্গে তার প্রক্রিয়া শেষ করতে সক্ষম হয়েছে। এটি হলো চীনের নিজের তৈরী নতুন পর্যায়ের "চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমান।
সুং ওয়েনছুং হচ্ছেন নতুন পর্যায়ের জঙ্গী বিমান তৈরী ক্ষেত্রের প্রধান ব্যক্তি। তিনি বলেছেন, গত শতাব্দীর ৮০'র দশক থেকে চীনের "চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমান তৈরী শুরু হয়েছে। এর সাফল্যের সঙ্গে তৈরী হয়েছে দীর্ঘকাল ধরে চীনের নিজস্ব বিমান নির্মান শিল্পের উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এর ফলে চীনা বিমান বাহিনীর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের সামর্থ্য আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। তিনি বলেন:" 'চিয়ান ১০' নামক জঙ্গী বিমান সাফল্যের সঙ্গে তৈরীর বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে বুঝা যায় যে, আধুনিক বিমান শিল্পের নির্মানে আমাদের প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জনিতহয়েছে । এর গুরুত্ব হচ্ছে বিমান নির্মানের শুরুর দিকটি ছিল আন্তর্জাতিক অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ "
একটি নতুন পর্যায়ের জঙ্গী বিমান হিসেবে এই " চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমান তৈরীতে প্রচুর নতুন ডিজাইন ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে বিমানের উড্ডয়ন ও গতি শক্তি বেশ উন্নত হয়েছে।
তাছাড়া, " চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমান বিশ্বের আধুনিক মানের উড্ডয়নের নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম অর্জনেও সক্ষম হয়েছে। সুং ওয়েনছুং বলেছেন, এ সিস্টেমের মাধ্যমে বিমানের উড্ডয়নের অবস্থার কথা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের কম্পিউটারে মূলুর্তেই পাঠানো সম্ভব। এর ফলে বিমানের পরিচালনা সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা দ্রুত জানা যায় ও সমাধান করা যায়। এর ফলে বিমানের সকল উড্ডয়ন সংক্রান্ত প্রক্রিয়া কার্যকরকরণে বেশ সুবিধা এনে দিয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে " চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমান পৃথক পৃথকভাবে চীনের বিমান বাহিনীতে ব্যবহার করা হয়েছে। চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের ছেং তু বিমান শিল্প বিষয়ক কোম্পানি এ বিমান নির্মানের উত্পদানের দায়িত্ব পালন করছে। এ কোম্পানির প্রধান রুও রুং হুয়াই বলেছেন, " চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমান নির্মান করায় চীনের বিমান শিল্প ক্ষেত্রের সাফল্য অর্জন সারা চীনের শিল্প সিস্টেমের উন্নয়নকেই ত্বরান্বিত করেছে । তিনি বলেন:
" চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমান তৈরীর সাফল্য চীনের বিমান শিল্পের নিজস্বভাবে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বিমান তৈরী ক্ষেত্রের উজ্জ্বল প্রতিক।এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে দেশীয় বিমান শিল্পের নির্মান ও পরীক্ষামূলক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এ ধরণের বিমান নির্মান প্রক্রিয়াগত কারণেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।"
তাছাড়া, গতবছর " চিয়ান ১০" নামক জঙ্গী বিমানের অতিচিক্ত হিসেবে, চীনের বিমান শিল্প ক্ষেত্রের অনেক বৈজ্ঞানিক সরণ্জাম উত্পাদিত হয়েছে। যাতে চীনের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে 'তিনটি বিরাট উন্নয়নকে ' বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে । চীনের বিমান শিল্প কোম্পানি বিষয়ক প্রথম বিভাগের প্রধান কেং রু কুয়াং বলেছেন: " তিনটি বিরাট উন্নয়নের বাস্তবায়ন সম্পর্কে চীন নিজস্বভাবে জঙ্গী বিমান , ইঞ্জিন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নির্মানের ক্ষেত্রে ক্ষমতাবান দেশ হিসেবে বিশ্বের চতুর্থ স্থান দখল করেছে। এর ফলে উন্নততরদেশগুলোরসঙ্গে সামরিক শক্তির ব্যবধান অনেক কমে গেছে। একই সঙ্গে চীন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি অর্জনেও সক্ষম হয়েছে । যার ফলে বৈজ্ঞানিক সরন্জামগুলোর একের পর এক উন্নতির হার বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে সুষ্ঠুভাবে এ ক্ষেত্রের শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত সিস্টেমও উন্নত হয়েছে। নিজস্ব নির্মান বিষয়টিতে চীনের আধুনিক প্রতিরক্ষা ও অর্থনীতির গঠনে গবেষকদের ব্যাপক অবদান রয়েছে।"
এ ছাড়া, চীনের বেসামরিক বিমান শিল্প উন্নয়ন ক্ষেত্রে আরো নিজস্বভাবে আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্মান কাজ চলছে। অনেক বেসামরিক বিমান বিদেশেও রপ্তানি হয়েছে। চীনের বিমান শিল্প কোম্পানি বিষয়ক প্রথম বিভাগের প্রধান কেং রু কুয়াং বলেছেন: " আমাদের বেসামরিক বিমানগুলো এশিয়া, আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, ওশেনিয়ার জিম্বাবোয়ে, লাওস,জাম্বিয়া,কঙ্গো,নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, কিউবা এবং ফিজিসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে।"
|