v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-02-02 19:39:08    
পুরনো সভ্যতার দেশ---কম্পুচিয়া

cri

    কম্পুচিয়া ইন্দো-চায়না উপদ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। দেশটি ভিয়েতনাম, লাওস এবং থাইল্যান্ডের সঙ্গে সংলগ্ন। দেশের আয়তন ১ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশী বর্গকিলোমিটার। লোকসংখ্যা ১ কোটি ৩৪ লাখ। কম্পুচিয়ার মোট ২০টিরও বেশী জাতি আছে। এদের মধ্যে ৮০ শতাংশ হচ্ছে খমের জাতি। বৌদ্ধ ধর্ম হচ্ছে কম্পুচিয়ার জাতীয় ধর্ম।

    কম্পুচিয়া হচ্ছে সুদীর্ঘ ইতিহাসসম্পন্ন একটি সভ্য পুরানো দেশ। খ্রীষ্ট্রীয় প্রথম শতাব্দীর শেষ নাগাদ এই দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। খ্রীষ্ট্রীয় ৯ থেকে ১৪ শতাব্দী পর্যন্ত অ্যানগোর রাজবংশের স্বর্ণযুগ ছিল। তখন দেশের রাষ্ট্রীয় শক্তি খুব প্রবল, সভ্যতা খুব উন্নত ছিল। ১৮৬৩ সালে কম্পুচিয়া ফ্রান্সের আশ্রিত দেশে পরিণত হয়। ১৯৪০ সালে জাপান কম্পুচিয়া দখল করে নেয়। ১৯৪৫ সালে জাপানের আত্মসমর্পণ করার পর ফ্রান্স আবার কম্পুচিয়া দখল করে। ১৯৫৩ সালের ৯ নভেম্বর কম্পুচিয়া স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করে।

     বিংশ শতাব্দীর ৭০ দশক থেকে কম্পুচিয়া দীর্ঘকালীন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় ও তত্ত্বাবধানে কম্পুচিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং শাসনতান্ত্রিক রাজতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হয়। এরপর কম্পচিয়ার জাতীয় ক্ষমতা সংস্থার যথাক্রমে প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় পুনর্মিলন বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে কম্পুচিয়া শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের নতুন সময়পর্বে প্রবেশ করে।

    কম্পুচিয়ার রাজধানী নমপেন তোনলে সাপ নদী এবং মেকোং নদীর সংলগ্ন জায়গায় অবস্থিত। নমপেন হচ্ছে কম্পুচিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কেন্দ্র। নমপেনের রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে বিশাল ও পরিষ্কার পথ এবং চার ঋতুতে ফোটা ফুল দেখে আপনার আমার ভাল লাগবে।

    নমপেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অ্যানগোর পুরাকীর্তি নিদর্শন হচ্ছে কম্পুচিয়ার জাতীয় প্রতীক। এসব পুরাকীর্তি নিদর্শনকে প্রাচ্যের একটি বিস্ময় বলে গণ্য করা হচ্ছে। অ্যানগোর পুরাকীর্তি নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে, অ্যানগোর থোম এবং অ্যানগোর ওয়াত। কয়েক'শ বছর ধরে বাতাস ও বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তা সত্ত্বেও অ্যানগো পুরাকীর্তিতে হৃদয়গ্রাহী আকর্ষণশক্তি রয়েছে।

    কম্পুচিয়া হচ্ছে একটি ঐতিহ্যবাহী কৃষি নির্ভর দেশ। শিল্প অবকাঠামো কিছুটা দুর্বল। কম্পুচিয়া হচ্ছে বিশ্বের একটি স্বল্পোন্নত দেশ। প্রায় দশ বছর ধরে কম্পুচিয়ার সরকার অর্থনীতির উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচন প্রধান দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করে। ফলে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং ধাপে ধাপে অর্থনীতি ভালো হয়েছে। ১৯৯৩ সালে কম্পুচিয়ায় দারিদ্র্য সীমায় বসবাস করা লোকসংখ্যা ছিল ৩৯ শতাংশ। বর্তমান এই সংখ্যা ২৮ শতাংশ। সরকারের অভিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়িত হচ্ছে। কম্পুচিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের পরবর্তী উদ্দেশ্য হচ্ছে ২০২০ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে কম্পুচিয়াকে বের করে আনা।

    চীন এবং কম্পুচিয়ার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মৈত্রী আছে। ১৯৫৮ সালের ১৯ জুলাই দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

    অর্থনীতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন এবং কম্পুচিয়ার পারস্পরিক পরিপূরকতা আছে। দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার গুপ্ত শক্তি খুব বেশী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু'দেশের বাণিজ্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীন হচ্ছে কম্পুচিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পুঁজি বিনিয়োগকারী দেশ।