v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-01-31 16:56:07    
ছোট হাইলোর পরিবার ওয়েবসাইটের কাহিনী

cri
    অর্থনীতির উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির সংগে সংগে কম্পিউটার এখন চীনের অনেক পরিবারের জন্যে অনিবার্য্য হয়ে দাঁড়িয়েছে । অথচ বহু ছেলেমেয়ে কম্পিউটার খেলায় নিমগ্ন হয়ে লেখাপড়ার ক্ষতি করেছে । তাদের মাবাবারা এ নিয়ে খুব মাথা ব্যাথা করেন । এ সমস্যা সমাধানের জন্যে পূর্ব চীনের চে চিয়াং প্রদেশের রাজধানী হাং চৌ শহরের হাই ইয়াং একটি ভালো উপায় আবিষ্কার করেছেন । তিনি পারিবারিক ওয়েবসাইট খোলার মাধ্যমে সাফল্যের সংগে তার মেয়েকে কম্পিউটার খেলা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন ।

    মিস্টার হাই ইয়াংয়ের মেয়ের বয়স ১২ বছর । তার নাম হাই লো । বাবামা তাকে আদর করে ছোট হাই লো ডাকেন । হাই লো বেশ লম্বা ও চিকন । তার চোখ খুব বড় । সবাই তাকে আদর করেন । ছোট হাই লোর বয়স বেশি না হলেও সে বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছে । সে এখন ছোট হাই লোর পরিবার নামক পারিবারিক ওয়েবসাইটের কর্তা ও কারিগরি পরিচালক । লেখাপড়ার পাশাপাশি হাই লো অবসর সময় এ ওয়েবসাইট নিয়ে খুবই ব্যস্ত আছে । সে বলেছে ,

    সাধারণ সময় এ ওয়েবসাইটে আমি ডাইরী লিখি এবং কিছু চিঠির উত্তর দিই। এখন বাবাও এ ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করছে ।

    আসলে এ পারিবারিক ওয়েবসাইটে মোট তিনজন সদস্য আছে । ছোট হাই লো ছাড়া অন্য দুজন সদস্য হচ্ছে তার বাবা হাই ইয়াং ও মা লো লিং । এ ওয়েবসাইট কি করে খোলা হয়েছে ?

    হাই ইয়াং বলেছেন , দুই বছর আগে ছোট হাই লো কম্পিউটার খেলায় নিমগ্ন হয় । তখনকার দৃশ্য এখনো তার মনে জাগরুক রয়েছে । তিনি বলেছেন ,

    এক ছুটির দিনে আমি ও হাই লোর মা বাইরে যাচ্ছিলাম । হাই লো আমাদের সংগে যেতে চাইল না । আমি তাকে বললাম , তুমি বাসায় থেকে হোমওয়ার্ক করো । ওয়েবসাইটও দেখতে পারো । তবে আধা ঘন্টার বেশি সময় দেখবে না । সে আমার কথায় সায় দিল । তবে ফিরে এসে আমি দেখতে পেলাম , সে হোমওয়ার্ক না করে পুরোটা কম্পিউটার খেলা করেছে । তখন আমি খুব রাগ করলাম । অথচ পরে আমি ভাবলাম , ছেলেমেয়েরা যে নিজেদের সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না , তা স্বাভাবিক । অন্য উপায় খুঁজে বের করতে হবে ।

    কম্পিউটার খেলা থেকে ছেলেমেয়েদের সরিয়ে নেয়ার জন্যে অনেক অভিভাবক তাদের ওয়েবসাইট দেখার সময় সীমিত করেছে । তবে হাই ইয়াং এমন করেন নি । তিনি মনে করেন যে , ইতিবাচক দিক থেকে মেয়েকে নির্ভূল পথে পরিচালনা করা উচিত । তাই তিনি পারিবারিক ওয়েবসাইট খোলার উপায় আবিষ্কার করেছেন ।

    মিস্টার হাই ইয়াং ঠাট্টা করে বলেছেন , ছোট হাই লো সবসময় কর্তা হতে চায় । ছোটবেলা থেকেই সে ভবিষ্যতে জাতিসংঘের মহাসচিব হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে । তাই তার বাবা তাকে পারিবারিক ওয়েবসাইটের কর্তা হিসেবে কাজ করার প্রস্তাব দেন । তিনি বলেছন ,

    শুরুতে ছোট হাই লো এ কাজে তত উত্সাহিত ছিল না । আমি ও তার মা আগেভাগেই পরামর্শ করে তাকে এ ওয়েবসাইটের কর্তা ও কারিগরি পরিচালক পদে নির্বাচন করি । হাই লো আনন্দের সংগে এ পদ গ্রহণ করে ।

    বেশি দিন হতে না হতে মিস্টার হাই ইয়াং লক্ষ্য করেন যে , তার মেয়েকে এ পদে নির্বাচন করে তিনি ভুল করেন নি । হাই লো সহজে নতুন জিনিস গ্রহণ করতে পারে । তাদের পারিবারিক ওয়েবসাইট তার পরিচালনায় সুষ্ঠুভাবে চলছে ।

    শুরুতে এ ওয়েবসাইটের প্রতি ছোট হাই লোর গভীর আগ্রহ ছিল । তবে অল্প দিনের মধ্যে সে আর তা করতে চায় না । এ প্রবণতা দেখে তার বাবা ওয়েবসাইটে পরিগণন যন্ত্র ও ম্যাসেজ বোর্ড সংযোজন করেন । এতে ছোট হাইলো প্রতিদিন দেখতে পাচ্ছে যে, অনেক ভিজিটর তার ওয়েবসাইট দেখছে এবং তাদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে । এটা দেখে তার আগ্রহও অনেক বেড়েছে । তার মাও সবসময় ওয়েবসাইটের ম্যাসেজ বোর্ড কিছু লিখে তাকে উত্সাহিত করেন । তিনি বলেছেন ,

    আমি প্রায়সই একজন সাধারণ ভিজিটর হিসেবে আমাদের ওয়েবসাইট দেখি এবং লেখালেখি করি । অনেক দিন পর সে আমাকে বলেছেন যে, এ ভিজিটর খুব ভালো । সবসময় আমাকে উত্সাহ দেন । তখন আমি তাকে বললাম , সেই ভিজিটার অন্য কেউ নয় , আমিই ।

    এখন ছোট হাই লো রোজ নেট বন্ধুদের কাছে ইমেল পাঠায় এবং মাঝেমধ্যে ওয়েবসাইটে কিছু প্রবন্ধও লিখে থাকে । সে বলেছে , এ পারিবারিক ওয়েবসাইট খোলার পর তার প্রত্যয় বেড়েছে এবং লেখার সামর্থ্যও অনেক বেড়েছে । মেয়ের এসব অগ্রগতি দেখে তার বাবা মহা খুশী ।

    হাই ইয়াং হচ্ছেন একজন শিক্ষাকর্মী । নিজের মেয়ের অগ্রগতি দেখে তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে ,নিজের অভিজ্ঞতা প্রসারিত করতে হবে ।

    গত বছর হাই ইয়াং ছোট হাইলোর স্কুলে একটি পারিবারিক ওয়েবসাইট ইউনিয়ন গঠনের প্রস্তাব দেন । তার প্রস্তাব স্কুলটির সমর্থন পায় । বর্তমানে এ স্কুলের অনেক অভিভাবক তাদের মত পারিবারিক ওয়েবসাইট খুলেছেন ।তিনি বলেছেন ,

    বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মধ্যে পারস্পরিক বিনিময়ের তত্পরতা চালানো হয় । এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আমরাছেলেমেয়েদের সংগে সম্প্রীতিমূলক কার্যক্রম ও সামাজিক তত্পরতারও আয়োজন করে থাকি । আমাদের ছেলেমেয়েরাও এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পারস্পরিক আদান-প্রদান করে । ওয়েবসাইটের বাইরেও তারা নানা ধরণের কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় ।

    এসব তত্পরতার মাধ্যমে কম্পিউটার খেলা থেকে ছেলেমেয়েদের আগ্রহ আস্তে আস্তে ওয়েবসাইটের ইতিবাচক দিকে টেনে আনা হয়েছে । পারিবারিক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছেলেমেয়েরা পরস্পরের কাছ থেকে শিখে নিতে পারে । তাদের বাবামারাও পারিবারিক ওয়েবসাইট ইউনিয়নের মাধ্যমে তাদের সন্তানদের শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন ।