চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চিয়াং ইয়্যু ৩০ জানুয়ারী ঘোষণা করেছেন , বিভিন্ন পক্ষের সংলাপের মাধ্যমে পঞ্চম দফা ছ'পক্ষীয় বৈঠকের তৃতীয় পর্যায়ের অধিবেশন ৮ ফেব্রুয়ারী পেইচিংয়ে শুরু হবে । সংশ্লিষ্ট দেশগুলো এই বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে ।
চিয়াং ইয়্যু বলেছেন , ছ'পক্ষীয় বৈঠকের বিরতিকালে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ বৈঠকের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা এবং যৌথ বিবৃতি বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে হিতকর সংলাপ করেছে । এটা বৈঠক যথাশীঘ্র আবার শুরু করার জন্য ভিত্তি স্থাপন করেছে । তিনি বলেছেন , চীন বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা চালিয়ে বৈঠকের ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন ত্বরান্বিত করবে । বিভিন্ন পক্ষ অব্যাহতভাবে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করবে , সংলাপ জোরদার করবে এবং আস্থা বাড়াবে , যাতে যৌথ বিবৃতি যথাশীঘ্র ও সার্বিকভাবে বাস্তবায়িত করা হয় এবং পরমাণু অস্ত্রমুক্ত কোরীয় উপদ্বীপ গড়ে তোলা হবে বলে চীন আশা করে ।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মুখপাত্র টম্ ক্যাসেই ৩০ জানুয়ারী বলেছেন , পরবর্তী ছ'পক্ষীয় বৈঠকে ১৯ সেপ্টেম্বরের যৌথ বিবৃতি কার্যকরীকরণের ব্যাপারে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র আশা করে । ছ'পক্ষীয় বৈঠকে অংশগ্রহণকারী মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতা , সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্তোফার হিল্ বলেছেন , পরবর্তী পর্যায়ের ছ'পক্ষীয় বৈঠকে ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত জেনেভা পরমাণু চুক্তির কাঠামোর মতো নতুন চুক্তি সম্ভবতঃ স্বাক্ষরিত হবে । আসলে বৈঠকে এর চেয়ে আরো বেশি সুফল হতে পারে ।
একই দিন প্রকাশিত দক্ষিণ কোরীয় পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই আশা প্রকাশ করা হয়েছে যে , বিভিন্ন পক্ষ এবার বৈঠকে যৌথ বিবৃতি বাস্তবায়নের প্রাথমিক পর্যায়ে কর্মসূচী ও ব্যবস্থা নিয়ে কার্যকর মতৈক্যে পৌঁছাবে ।
রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী , ছ'পক্ষীয় বৈঠকের প্রতিনিধি দলের নেতা আলেক্জান্দার লুসইউকোভ বলেছেন , ছ'পক্ষীয় বৈঠক আবার শুরু হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে । তিনি ছ'পক্ষীয় বৈঠকের ভবিষ্যতের ওপর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ।
জাপানের ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়াটের উপ-প্রধান সুজুকি সেইজি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন , পরমাণু অস্ত্রমুক্ত কোরীয় উপদ্বীপ গড়ে তোলার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে উত্তর কোরিয়াকে তাগিদ দেয়ার জন্য জাপান যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা চালাবে । জাপানের প্রধান মন্ত্রী শিন্জো আবে এই সতর্কতা জানিয়ে বলেছেন যে , এবারের বৈঠকে কোন অগ্রগতি অর্জিত না হলে বিশ্ব সম্প্রদায় উত্তর কোরিয়ার ওপর আরো বেশি চাপ দেবে । তখন উত্তর কোরিয়া অত্যন্ত অসুবিধার সম্মুখীন হবে ।
এর পাশাপাশি বৈঠকে ব্যাপক অগ্রগতি লাভের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ ছ'পক্ষীয় বৈঠক আবার শুরু হওয়ার আগে নতুন দফা দ্বিপক্ষীয় সংলাপ শুরু করেছে । দক্ষিণ কোরীয় পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রী সুং মিন সুন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সেরগেই লাভরোভের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং বৈঠকের ব্যাপক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন । ছ'পক্ষীয় বৈঠকের দক্ষিণ কোরীয় প্রতিনিধি দলের নেতা ছুন ইউং ও ৩১ জানুয়ারী রাশিয়া সফর করবেন । তিনি ছ'পক্ষীয় বৈঠকে রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতা আলেক্জান্দার লুসইউকোভের সঙ্গে বৈঠক করবেন । ছ'পক্ষীয় বৈঠকের মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতা ক্রিস্তোফার হিলও দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সফর করবেন এবং ছ'পক্ষীয় বৈঠকে তিনটি দেশের কৌশলের সমন্বয় করবেন ।
জনমত অনুযায়ী , ছ'পক্ষীয় বৈঠক আবার শুরু হওয়ার তারিখ নির্ধারিত হওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া ৩০ জানুয়ারী পেইচিংয়ে আর্থিক বিষয়ে বৈঠক করেছেন । একই দিন সংলাপ শেষে মার্কিন প্রতিনিধি ডেনিল গ্লাসেই এই মত প্রকাশ করেচেন যে , উভয় পক্ষ আর্থিক বিষয়ে মত বিনিময় করেছে । উভয় পক্ষ একটি সংলাপের কাঠামো গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে , যাতে পরবর্তী কয়েক দিনে এই বিষয়ে উভয় পক্ষ অব্যাহতভাবে আলোচনা করতে পারে ।
|