অগ্নিকাণ্ড, ভূমিকম্প, মুষল-ধারে ঝড় বৃষ্টি এবং গুরুত্বপূর্ণ সংক্রামক রোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই চীনে শহরের দৈনন্দিন ক্ষেত্রের ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেমগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারে কিনা, যেহেতু তা অধিবাসীদের জীবণ ও সম্পদের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই দৈনন্দিন ক্ষেত্রের ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেমগুলো কিভাবে চালু করা যায়। আসলে কথা হচ্ছে এ শহরের উন্নয়নের মানগত পরীক্ষার অন্যতম।
২০০৩ সালের বসন্তকালে চীনে একটি মাবাত্মক সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তা হলো সার্স। ২০০৫ সালে চীনের কয়েকটি প্রদেশে বার্ড ফ্লুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০০৬ সালে প্র্যাপিরুনসহ পরপর প্রচুর টাইফুনও হয়। এসব দুর্যোগ চীনে শহরের দৈনন্দিন ক্ষেত্রের কারিগরি ক্ষেত্রের ওপর দাপন চাপ পরে। এ কারণে চীনে শহরের দৈনন্দিন ক্ষেত্রে ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেমগুলোকে অব্যাহতভাবে উন্নত করা হয়েছে।
২০০৩ সালে সার্সের বিরুদ্ধে পেইচিং ছিলো একটি ক্ষতিগ্রস্ত শহর। সেসময় সবাই জানে যে, শহরের দৈনন্দিন ক্ষেত্রে ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেমগুলো এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে চিকিত্সা বিষয়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের যথাযথভাবে সার্স নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট সক্ষম হয়নি। আসলে সার্স খুবই দ্রুতভাবে ছড়িয়ে পড়ে যা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পেইচিং শহরের স্বাস্থ্য ব্যুরোর তথ্য বিষয়ক কেন্দ্রের প্রধান চু ওয়েনশেং বলেছেন:" আমরা গণ-স্বাস্থ্য পরিসেবা গঠনের উপর অনেক গুরুত্ব দিয়েছি। এ ব্যাপারে অনেক কর্মী নিজের উপযুক্ত মতামত উপস্থাপন করেছেন। গণ-স্বাস্থ্য পরিসেবার বিষয়টি ভালভাবে ত্বরান্বতি করার জন্যে মোট ১৩টি বিশেষ অফিস চালু হয়েছে। তার গুরু দায়িত্ব হচ্ছে হঠাত্ ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা বা সংক্রমনের দিকগুলোর সমাধান করা।"
বর্তমানে চীনে শমিকের সংখ্যা মোট লোকসংখ্যার ৪০ শতাংশ । চীনের শিল্প ক্ষেত্রের আয়ের তা ৫০ শতাংশ , রাষ্ট্রীয় শুল্ক আয়ের ৮০ শতাংশ এবং উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্র ও প্রযুক্তিগত শক্তির ৯০ শতাংশসহ সব শমিকের আয়ে অর্জিত । শহরের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেমগুলো সম্পূর্ণ হলেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ, গণ-স্বাস্থ্য পরিসেবা এবং নিরাপত্তামূলক ঘটনাসহ নানা ধরণের সমস্যা কার্যকরভাবে সমাধান করা যাবে । যাতে শহরের উন্নয়নকে সুনিশ্চিত করা যায়। এ সম্পর্কে চীনের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়--ছিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ-নিরাপত্তা বিষয়ক বিভাগের প্রধান ফান ওয়েই ছেং বলেছেন:" শহরের ব্যবহার্য দৈনন্দিন জরুরী সিস্টেমগুলো স্থাপনের মধ্যে রয়েছে , নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তিগত তথ্য, যোগাযোগ সিস্টেম এবং ইন্টারনেট সিস্টেমসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিষয়। এর মাধ্যমে প্রযুক্তিগত তথ্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"
এখন চীনের বিভিন্ন বড় শহরে নিরাপত্তা, পরিবহণ, চিকিত্সা এবং বিদ্যুত্ সরবরাহসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেম চালু হয়েছে। জরুরী কোন ঘটনা ঘটলে এই সিস্টেমের মাধ্যমে তা মোকাবিলা করা সক্ষম। এ জন্য এখন কোনো কোনো এলাকায় বিশেষ বেতার, টেলিভিশন এবং টেলিফোন হটলাইন চালু হয়েছে। তাছাড়াও, উপগ্রহ থেকে পাঠানো ছবিসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রের উপায়ে শহরের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেমগুলোকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ত্রাত্ক্ষনিক কোন দুর্ঘটনা মোকাবিলার সার্বিক প্রক্রিয়ায় কি কি বিষয় রয়েছে? ফান ওয়েই ছেং সে সম্পর্কে বলেছেন:" যেমন একটি দুর্ঘটনার ব্যাপারে-কোন কোনো বিভাগ সার্বিকভাবে বা সাফল্যের সঙ্গে তা শেষ করেনি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য শহরের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেমের মধ্যে রয়ে গেছে। তারপর অন্য বিভাগ এর জন্য আরেকটি সমাধানের উপায় খুঁজতে হবে। এর পাশাপাশি সকল তথ্য নিশ্চিতভাবে জানাতে হবে।"
বিশেষজ্ঞজণ জোর দিয়ে বলেছেন, চীনে শহরের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেম আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে চালু হবে। এখন শুধু অলিম্পিক গেমস, সন্ত্রাস দমন এবং বার্ড ফ্লুর মত সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আনুষংগিক ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেম চালু করা হয়েছে। পেইচিংয়ে সিঙ্গাপুরের ওয়াং লি সিস্টেম কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াং ওয়েই ফিং বলেছেন:
" শহরের দৈনন্দিন ব্যবহার্য জরুরী সিস্টেম খুবই জটিল একটি প্রক্রিয়া। আমাদের তাকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করার লক্ষে আরো অনেক প্রচেষ্টা চালাতে হবে"
|