v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-01-24 11:03:13    
আমরা চীনে থাকতে পছন্দ করি--মার্কিন শিক্ষক ক্রেগ্রী ও তার মহধর্মনী

cri
    ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এক মার্কিন দম্পতি চীনে এসেছে এবং মধ্য-চীনের হো নান প্রদেশে বসবাস করছে। তারা হো নান প্রদেশের চেং চৌ শহরের টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করতে শুরু করেছেন । ইতোমধ্যেই বছর কেটে গেছে , তারা এখন চেং চৌ শহরকে তাদের নিজেদের মহর হিসেবে মনে করেন । নিজের অনুভূতি সম্পর্কে তাদের বক্তব্য হচ্ছে , সম্ভব হলে আমরা আমাদের বাকি জীবন এখানেই কাটাতে চাই ।

    ক্রেগ্রী ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন । চীনে আসার আগে তিনি কালিফোর্নিয়া রাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আইন বিষয়ক শিক্ষক ছিলেন । তাঁর স্ত্রী পার্টি নোর্ক একজন শিল্প ডিজাইনে ব্যাচেলর ।

    ক্রেগ্রী সংবাদদাতাকে বলেন , আসলে চীনে আসার আগে তাদের চেং চৌ শহরের টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করার পরিকল্পনা ছিল না ।   যুক্তরাষ্ট্রের ভালো চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া এবং নিজের স্ত্রীকে চীনে আসতে রাজী করাতে তিন মাস সময় লেগেছে । চীনে আসার আগে ক্রেগ্রী যুক্তরাষ্ট্রের কালিফোর্নিয়া রাজ্যে একটি বড় পুঁজি বিনিয়োগ কোম্পানীর পরিচালক ছিলেন । তাঁর স্ত্রী কালিফোর্নিয়ার একটি জুয়ারী কোম্পানীর বিখ্যাত ডিজাইনার । তাদের এক মেয়ে সে বিয়ে করেছে । তাদের পরিবারের সবার জীবনে রয়েছে শান্তি এবং সুখ ।

    ক্রেগ্রী বলেছেন , ২০০৫ সালের মার্চ মাসে , যখন তাঁরা চার্চে প্রার্থণা করেন , তখন তাঁদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসমেটকে দেখেছেন । এ ক্লাসমেট দার্ঘসময় ধরে চীনের সাংহাইয়ে কাজ করে । তার কাছ থেকে ক্রেগ্রী জেনেছেন যে , চীনের দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে অনেক বিদেশি শিক্ষকের প্রয়োজনীয়তাও চীনে দেখা যাচ্ছে । ক্রেগ্রী এ খবর জেনে চীনে যেতে চান , তবে তাঁর স্ত্রী এতে রাজি নয় । তবে এক দিন হঠাত্, তার স্ত্রী ক্রেগ্রীকে বলেন যে , হ্যাঁ , আমরা একসঙ্গে চীনে যাবো । ক্রেগ্রী সংবাদদাতাকে বলেন , তার স্ত্রীর মনোভাবের পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রে খুব বিখ্যাত কাহিনীর মত । বিল হার্সন নামে একজন চীনের সি ছুয়ান প্রদেশে তার দু'বছরের শিক্ষাদনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কিত লেখা এ বই পড়ার পর ক্রেগ্রীর স্ত্রী অনেক মুগ্ধ হন । ক্রেগ্রী বলেন , আমার স্ত্রীর বড় আশা হল চীনে নিজের অভিজ্ঞতাকেও লিখে ফেলবে ।

    একসঙ্গে চীনে যাবেন । এ সিদ্ধান্ত নেয়ার পর , তারা বাসার সব জিনিস বিক্রি করেছেন । চারটি ভারী ট্রান্ক নিয়ে তারা দু'জন গাড়ি চালিয়ে লসএন্জেলসে যান , তার পর তারা লসএন্জেলস থেকে বিমানে পেইচিং এসেছেন । এর পর তারা পেইচিং থেকে বিমানে মধ্য চীনের চেং চৌ শহরে এসেছেন । ২০০৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর , দীর্ঘ ভ্রমণের পর ক্রেগ্রী ও তার স্ত্রী চেং চৌ শহরের টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হোস্টেলে থাকতে শুরু করেছেন । অবশেষে হো নান প্রদেশেই তারা এক বাড়ি খুঁজে পেয়েছেন ।

    প্রথমবার টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে দাঁড়াতেই আমি খুব উত্তেজনা অনুভব করলাম । ক্রেগ্রী বলেন , তিনি আর তার স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌখিক ইংরেজী ভাষা শিখান । তাদের চোখে ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে চীন ও পশ্চিমা দেশের ছাত্রছাত্রীদের পার্থক্য রয়েছে । তবে এ দু'জন মন দিয়ে ছাত্রছাত্রীদেরকে ভাষা শিখান । তাদের প্রচেষ্টা দেখে

    ছাত্রছাত্রীরা তাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন ।

    ক্রেগ্রী ও তার স্ত্রীর চোখে চীনারা খুবই বন্ধুপ্রতীম। ক্রেগ্রী বলেন , আমার স্ত্রী সুপারমার্কেটে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন । যখন প্রথম এখানে আসে , তখন সে একা বাইরে যেতে চইতো না । এখন সে সবসময় একাই বাইরের জিনিস কেনে । অনেক স্থানীয় লোক তাকে হ্যালো বলে সম্মান করে। সে নিজেই মনে করে সে যেন বিখ্যাত সিনেমা তারকার মত জনপ্রিয় । চীনা ছাত্রছাত্রী সম্পর্কে তিনি অনেক "ভালো" বলেছেন । ক্রেগ্রী মনে করেন , চীনা ছাত্রছাত্রীরা খুবই বিনয়ী ও বন্ধুপ্রতীম । তারা লেখাপড়া করতে খুব পছন্দ করে । ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । তিনি মনে করেন , চীনা ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার লক্ষ্য খুব স্পষ্ট । বিশেষ করে শিক্ষককে খুব সম্মান করে । যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি তা কখোনোঅনুভব করতেন না ।

    বিশ্ববিদ্যালয় মনে করে ক্রেগ্রী ও তার স্ত্রীর শিক্ষাদান খুব সন্তোষজনক । তারা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাদানের সংস্কৃতি চীনে এনেছেন তা নয় , তারা চীনা জনগণের জন্য মার্কিন জনগণের আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বও বহন করে এনেছেন ।