v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-01-22 15:38:17    
চীনে শিক্ষা ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চলছে

cri
    চীনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা দূরপল্লার শিক্ষা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিখ্যাত শিক্ষকদের ক্লাস শুনতে পারে। দরিদ্র পরিবারের ছাত্ররা মাধ্যমিক পেশাগত শিক্ষা গ্রহণের জন্য আর্থিক সাহায্যের দরখাস্ত করতে পারে। চলতি বছর থেকে চীনের গ্রামীণ ছাত্রছাত্রীরা শুধু বই ও খাতার ফি দিলেই প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। সম্প্রতি চীনের ক্যাম্পাসগুলোর এসব পরিবর্তন থেকে দেখা গেছে, চীনের শিক্ষা বিভাগ জোরে সোরে শিক্ষা ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

    সুন ছিয়াও ইয়ুন উত্তরপশ্চিম চীনের নিংসিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের একজন কৃষক। বর্তমানে তাঁর ছেলে একটি স্থানীয় মাধ্যমিক স্কুলে লেখাপড়া করছে। তিনি বলেছেন, দারিদ্র্যের কারণে তিনি তাঁর ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। 

    আগে ছেলেকে এক শিক্ষা বর্ষে ১২০ ইউয়ান ফি দিতে হতো। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে এ টাকা দিতে পারতাম না। পরে স্কুলের শিক্ষক আমাকে বলেছেন, ছেলের লেখাপড়ার জন্য কোনো টাকা দিতে হবে না।

    সুন ছিয়াও ইয়ুন ও তাঁর ছেলের জন্য আনন্দদায়ক এই নতুন নীতি গত বছরের বসন্তকাল থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই নীতির প্রধান বিষয়বস্তু হচ্ছে সরকার স্বল্পোন্নত পশ্চিম চীনের গ্রামাঞ্চলে বাধ্যতামূলক শিক্ষা গ্রহণকারী ছেলেমেয়েদের সবরকম ফি মওকুফ করা। এই নীতির ফলে চীনের গ্রামের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের পাঁচ কোটি ছাত্রছাত্রীর উপকার হয়েছে।

    তা সত্ত্বেও শহর ও গ্রামের উন্নয়নের ভারসাম্যহীনতার কারণে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ভালো শিক্ষা পাওয়া খুব কঠিন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ষষ্ঠদশ কেন্দ্রীয় কমিটির ষষ্ঠ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বলা হয়েছে, চীনের সুষম সমাজ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু হচ্ছে জনগণকে যমান শিক্ষার সুযোগ দেয়া। চীনের শিক্ষামন্ত্রী চৌ জি বলেছেন, চীন গ্রামের শিক্ষা বাবদ আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ করবে, যাতে গ্রামের ছেলেমেয়েরা আরো ভালো শিক্ষা লাভের সুযোগ পায়।

    চীন শিক্ষা ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ বাড়াবে। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গ্রামের বাধ্যতামূলক শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ২০০ বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করা হবে।

    বর্তমানে চীনের বিভিন্ন স্থানের সংশ্লিষ্ট বিভাগ স্থানীয় বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী শিক্ষা ক্ষেত্রে অর্থ বাড়ানোর ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ কার্যকর করছে। গ্রামাঞ্চলের ছাত্রদের ফি মকুফ করা ছাড়া, চীন আট বিলিয়ন ইউয়ান দিয়ে দূরপাল্লার শিক্ষা ওয়েবসাইট তৈরী করেছে। বর্তমানে গ্রামের ৮০ শতাংশ স্কুল দূরপাল্লার শিক্ষাদান করতে পারে। চীনের চিয়াংসি প্রদেশের লেইসি মহকুমার নানছিয়াও প্রাথমিক স্কুল হচ্ছে এর মধ্যে একটি। স্কুলের শিক্ষক মাদাম হুয়াং ইয়ান ছুন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, বর্তমানে এখানকার ছাত্রছাত্রীরা দূরশিক্ষণ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়মিত পেইচিংয়ের বিখ্যাত শিক্ষকদের ক্লাস শুনতে পারে। এর আগে এসব ছাত্রছাত্রীর জন্য এই সুযোগ ছিল অভাবনীয়।

    আগে গ্রামের স্কুলের অবস্থা ভালো ছিলনা। বেশির ভাগ পরিবার পড়াশোনার জন্যে তাঁদের ছেলেমেয়েদের শহরে পাঠিয়ে দিতেন। বর্তমানে দূরপাল্লার শিক্ষা ওয়েবসাইট চালু হওয়ায় গ্রামের শিক্ষাদানের অবস্থা শহরের মতো হয়েছে। ফলে অনেক ছাত্রছাত্রী আবার গ্রামে ফিরে এসেছে।

    পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের শেষ দিকে চীনের গ্রামাঞ্চলের প্রত্যেক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল উপগ্রহ টেলিভিশন গ্রহণ করতে পারবে। পাশা পাশি গ্রামের প্রতিটি মাধ্যমিক স্কুলে অন্তত একটি করে কম্পিউটার ক্লাসরুম গড়ে তোলা হবে।

    বর্তমানে চীনের বিভিন্ন স্থানে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভারসাম্যহীণতা দৃষ্টি গোচর হচ্ছে। শহর ও গ্রামে স্কুলের শিক্ষার মানের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। চীনে সমান শিক্ষার সুযোগ দেয়া এখনো একটি কঠিন কাজ। চীনের শিক্ষামন্ত্রী চৌ জি বলেছেন, চীন সরকার অব্যাহতভাবে শিক্ষার বিস্তার সমর্থন করতে থাকবে এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে টেকসই ও সুষ্ঠু উন্নয়ন ত্বরান্বিত করাকে চীনের শিক্ষা নীতির গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রেখে যাবে।