v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-01-19 21:05:59    
আলেয়া ফেরদৌসীর সাক্ষাত্কারের তৃতীয় অংশ

cri

    প্রঃ বাংলাদেশের বর্তমান নারী সমাজের অবস্থা কেমন? নারী সমাজের উন্নয়নে আপনার অবদানের কথা আমাদেরকে বলবেন কি?

 উঃ নারী সমাজের অবস্থা একদম যে খারাপ তা বলব না। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের নারীরাও অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। যারা শহরে বাস করছেন , তারা চাকরি করছেন। কেউ কেউ চাকরি খুঁজছেন। গ্রামের নারীরাও গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন যায়গায় চাকরি করছেন। আমি বলবো অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। লেখাপড়ার ক্ষেত্রেও নারী সমাজ পিছিয়ে নেই। তবে পারিবারিক স্বচ্ছলতা না থাকলে অনেকে মেয়েদের পড়াতে চান না। নারী শিক্ষা ফ্রি করে দেয়ায় তাদের আগ্রহ বাড়ছে। এটা আমাদের বড় পাওয়া। কারণ লেখাপড়া না শিখলে কোন জাতি কখনো এগিয়ে যেতে পারে না। কনফুসিয়াস বলেছেন প্ল্যান ফর লাইফ টাইম প্লান ফর এডুকেশন।

 প্রশ্নঃ আমি জেনেছি আপনি উইমেন পাওয়ার বিষয়ক একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে বেইজিংয়ে এসেছেন। এই কনফারেন্স সম্পর্কে কিছু বলবেন?

 উঃ বেইজিং ইউনিভাসিটি এই কনফারেন্সের আয়োজন করেছে। তারা জোর দিয়েছেন লিবারেল স্পোর্ট এন্ড ফিড ফিমেল এর উপর। তারা বলছেন, ফরমাল স্পোর্টের বাইরে যারা খেলাধুলা করে তার বাইরে এই স্পোর্ট। সব মেয়েদের মধ্যে এই খেলা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্স। একটা স্পোর্ট এ কালচার ডিপার্টমেন্ট এর আয়োজন। তারা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমি আমন্ত্রণ পেয়েছি উইমেন লেইজার বিষয়ে পেপার পড়ার জন্য। আমি এই পেপার পড়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। জার্মান, গ্রীস, তানজানিয়াসহ চীনের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে সদস্য প্রতিনিধিদের আমি বাহবা পেয়েছি। তারাও পেপার পড়েছেন। বিভিন্ন ধরনের বিষয় এসেছে। নারী সমাজ কিভাবে শরীর ঠিক রাখবে সে সব বিষয় এসেছে। নারীর অবসর কাটানো, ক্লাব পরিচালনা ইত্যাদি বিষয় গবেষণা রিপোর্টও পাঠ করা হয়েছে। শারিরীকভাবে যারা অক্ষম তাদেরকে কিভাবে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে না রেখে খেলাধুলার আঙ্গীনে নিয়ে আসা যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে এসেছে। তারা কিভাবে নিজেদের সুরক্ষা করবে ইত্যাদি। এ বিষয়ে তাদেরকে ভালভাবে যাতে তৈরী করা যায়।

 প্রঃ এই সম্মেলনের অর্জন নিয়ে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কিছু সহযোগিতা করার সম্ভাবনা আছে কিনা?

 উঃ অবশ্যই আছে। আমাদের দেশের মেয়েরা যখন এসব বিষয়ে কাজ করতে শুরু করবে তখন আমি তাদেরকে আপনাদের দেশে নিয়ে আসতে চাই। আপনাদের দেশের মেয়েরা বিশেষভাবে গ্রামের মেয়েরা যেসব খেলাধুলা করছে যেসব বিষয় তাদের সেখানো যাবে । এসব ধারনা নিয়ে যদি নিজের দেশে কাজে লাগাতে পারি তাহলেও আমাদের দেশের উপকার হবে । তবে আমাদের কাজ আগে শুরু করতে হবে। তখন আপনারাও গিয়ে দেখতে পারবেন আমরা কি ধরনের কাজ করছি। তবে আদানপ্রদানটা হবে গুরুত্বপূর্ণ।

 প্রঃ আমরা শুনেছি, আপনি ক্রীড়া জগতে যোগদানের পর একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। এ বিষয় কি আমাদের বলবেন?

 উঃ আমি যে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছি সেটা আইওসি প্রদত্ত। ২০০৪-এ আইওসি আমাকে এই পুরস্কারটি দিয়েছে। তারা যে বিষয়টি দেখেছে তা হচ্ছে গ্রাসরুট লেভেলে আমি কি কাজ করেছি। আমি ৮৪ সাল থেকে মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছি এবং ৯২ সালে ছেড়েছি। এর মধ্যে আমি ১৪ বছরের নিচের মেয়েদের ট্রেনিং দিয়েছি। জেলা উপজেলা পর্যায় আমার কাজ ছড়িয়ে পড়েছিল। এটা খুব সফল হয়েছিল। যারা খেলাধুলা ছেড়ে দিয়েছিল তাদেরকে আমি কাজে লাগাই। সাতার, এ্যাথলেটিক্স, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, হ্যান্ডবল প্রভৃতি খেলায় কোচ নিয়োগ করি। এটা একটি বড় পাওয়া। এসবের জন্যই আইওসি আমাকে পুরস্কার দেয়।

 প্রঃ ১৮ বছর বয়স থেকে চাকরি শুরু করার পর আপনি নানা ক্ষেত্রে কাজ শুরু করে বলা যায় সফল হয়েছেন।

 উঃ আমার যারা কাছের বন্ধুবান্ধব তারা জানেন, আমি দিনের ১০ মিনিট সময়ও নষ্ট করি না। এভাবেই কাজ করি। আমি ১৮ বছর বয়সে যেভাবে কাজ করেছি এখানে সেভাবেই করছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। মাঝে মাঝে নিজেও ভাবি এত কাজ কিভাবে করছি।

 প্রঃ বাংলাদেশ ও ভারতে আমাদের ২২ কোটি বাংলা ভাষাভাষী শ্রোতা আছেন। তার মধ্যে অনেক নারী শ্রোতাও রয়েছে। যদিও তারা নিরবে থাকেন। তারা চিঠি লিখেন না। কিন্তু নিয়মিত অনুষ্ঠান শুনেন। একজন সফল নারী হিসেবে আপনি তাদের জন্য কোন দিক নিদের্শনা দিবেন?

 উঃ বাংলাদেশী নারী বিশেষ করে যারা শহরের বাইরে থাকেন, তারা আপনাদের রেডিও ভাল করেই শুনেন। এই শোনা থেকে তাদের সাংস্কৃতিক ধারণা গড়ে উঠছে। এটা কাজে লাগবে। আমাদের সবক্ষেত্রে যদি নারীরা এগিয়ে আসে তাহলে আমাদের দেশের উন্নয়ন হবে যেমন আপনাদের হচ্ছে। ধন্যবাদ।