গত ১৮ জানুয়ারী বার্লিনে মার্কিন উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্রিস্টোফার হিল এবং উত্তর কোরিয়ার উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী কিম গুওয়ানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিতহয়েছে। এর পর ক্রিস্টোফের হিল দক্ষিণ কোরিয়া, চীন এবং জাপান সফর করবেন। সফরকালে তিনি উল্লেখিত তিনটি দেশকে এবারকার বৈঠক সম্বন্ধে অবহিত করবেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটা হল ছ'পক্ষীয় বৈঠক পুনরায় শুরু করার একটি শুরুত্বপূর্ণসংকেত।
১৮ জানুয়ারী মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টম ক্যাসে বলেছেন, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র নতুন কোন প্রস্তাব উত্থাপন করেনি। দু'পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গী ও ধারণাও পরিবর্তিত হয়নি। একই দিন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র একটি ভাষণে বলেছেন, দু'দেশের উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের মধ্যে ধারাবাহিক বৈঠক হয়েছে তা বটে, কি্ন্তু এর অর্থ এই নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক না করার মনোভাব পরিবর্তন করেছে। তাদের মধ্যে সর্বশেষ বৈঠক হচ্ছে ২০০৩ সাল থেকে হওয়া
কোরীয় উপ-দ্বীপের পরমাণু সংক্রান্ত ছ'পক্ষীয় বৈঠকের একটি অংশ।
১৬ জানুয়ারী থেকে দু'জনের মধ্যে তিন দিনব্যাপী বৈঠক শুরু হয়। একটি খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার অনুরোধে এবারকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলেছে, ছ'পক্ষীয় বৈঠক পুনরায় শুরু করার উদ্দেশ্যেই এবারকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিল মনে করেন, এবারকার বৈঠক ফলপ্রসু ও কার্যকরহয়েছে । তিনি আশা করেন, চলতি মাসের শেষ দিকে ছ'পক্ষীয় বৈঠক পুনরায় অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ জানুয়ারী হিল বার্লিন সফররত পররাষ্ট্র মন্ত্রীরাইসকে এ বৈঠক সম্বন্ধে অবহিত করেছে। রাইস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বৈঠক কোরীয় পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত ছ'পক্ষীয় বৈঠক পুনরায় অনুষ্ঠানের জন্য আরও একধাপ সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পেইচিংএ আয়োজিত পঞ্চম দফা ছ'পক্ষীয় বৈঠকের দ্বিতীয় পর্যায়ের অধিবেশনে কোন সারগর্ভ ফলাফল অর্জন না করার প্রধান কারণ হল, অভিন্ন বিবৃতি বাস্তবায়নের বিশদ পদক্ষেপ নেওয়া এবং ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার ব্যাপারে দু' দেশের মধ্যেকার গুরুতব মতভেদ । এবার বৈঠকে কোরিয়ার উপ পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার উপর ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞাউঠিয়ে দেয়ার পর কেবল উত্তর কোরিয়া তার পরমাণু পরীক্ষা পরিত্যাগ করার কথা বিবেচনা করবে। কেবল এভাবে করা হলে দু'দেশের মধ্যে পারষ্পরিক আস্থা স্থাপিত হতে পারে। কোন কোন বিশ্লেষকরা মনে করেন, বার্লিনে দু'জনের মধ্যে বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিতে পরষ্পরের দৃষ্টিভঙ্গীকে বোঝার চেষ্টাচালানো হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার কোন কোন বিশ্লেষকরা এবারের বার্লিন বৈঠকের প্রসংশা করেছেন। তারা মনে করেন, এ বৈঠকে ইতিবাচক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
দু' দেশ বৈঠক সম্পর্কে কোন বিশদ তথ্য প্রকাশ করে নি। সুতরাং বিশ্ব সম্প্রদায়ও বৈঠকের খুঁটিনাঁটি জানে না। একটি খবরে বলা হয়েছে, বৈঠকে দু'পক্ষের মধ্যে পঞ্চম দফা ছ'পক্ষীয় বৈঠকের অভিন্ন বিবৃতির কার্যকারীতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আসন্ন ছ'পক্ষীয় বৈঠকে উত্তর কোরিয়া সম্ভাবত পঞ্চম দফা ছ'পক্ষীয় বৈঠকের দ্বিতীয় পযার্য়ের অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত প্যাকিজ প্রস্তাবের প্রতি সাড়া দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত প্রস্তাবগুলোর প্রধান বিষয়বস্তু হল, যদি উত্তর কোরিয়া পরমাণু পরিকল্পনা পরিত্যাগ করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়াকে নিরাপদ নিষ্চয়তা যুগিয়ে দেবে। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার উপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞা এবার বার্লিন বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ছিল না।
অন্য দিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার কোন কোন বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে আশাবাদী। তারা মনে করেন, বার্লিনে দু'দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠকে অবশ্যই ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
|