চীনের নির্মাণ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ছিউ পাওসিং ১৮ জানুয়ারী পেইচিংয়ে বলোছেন, পরবর্তীকালে চীনের নির্মাণ ক্ষেত্রে পুরোনো অট্টালিকার সংস্কার ও নতুন নির্মিত অট্টালিকার ক্ষেত্রেসাশ্রয়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে । নতুন নির্মাণের সাশ্রয়ী মানদন্ডেতত্ত্বাবধান করা প্রধান কাজ হিসেবে গ্রহণ করা হবে । ২০২০ সালের আগে নির্মাণের সাশ্রয়ী ক্ষেত্রে ৩৫ কোটি টন কয়লা সাশ্রয় করার লক্ষ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চালানো হবে ।
নির্মাণশিল্প যেমন এক ঐতিহ্যিক ব্যয়বহুল শিল্প তেমনি চীনের অন্যতম প্রধানজ্বালানি সম্পদ ব্যয়কারী শিল্প। চীন এখন নির্মাণের এক কার্যকর সময়ে রয়েছে । প্রত্যেক বছর ২০০ কোটি বর্গমিটারের বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে । চীনের নির্মাণে যে সম্পদ ব্যবহার করা হয় তা গোটা দেশের মোট ব্যবহারের পরিমানের এক চতুর্থাংশেরওবেশি । সাম্প্রতিক বছরগুলোয়চীন সরকার নির্মাণক্ষেত্রে সাশ্রয় করার প্রস্তাব করেছে । সাশ্রয় ক্ষেত্রের তত্ত্বাবধানকেজোরদার করেছে এবং অনবরতভাবে প্রাসঙ্গিকসাশ্রয় প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহার ত্বরান্বিত করেছে ।
চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য অফিসের এক সংবাদ সম্মেলনে উপমন্ত্রী ছিউ পাওসিং বলেছেন , বর্তমানেচীনের নির্মাণ ক্ষেত্রে সাশ্রয়ে উল্লেখযোগ্যসাফল্য অর্জিত হয়েছে । তিনি বলেছেন , নতুন নির্মিতঅট্টালিকায় সাশ্রয়ীডিজাইনের মানদন্ড বাস্তবায়িত হয়েছে । সাশ্রয়ীনির্মাণের অনুপাত অনবরতভাবে বেড়ে যাচ্ছে । ২০০৬ সালের শেষ নাগাদ বিভিন্ন অঞ্চলেরনির্মিত প্রকল্পেরসাশ্রয়ী ডিজাইনের মানদন্ডের অনুপাত ৯৫.৭ শতাংশ । এই পরিমাণ ২০০৫ সালের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি । ২০০৬ সালে সারা দেশের নতুন নির্মিতসাশ্রয়ীঅট্টালিকা থেকে ৭০ লাখ টন কয়লা সাশ্রয়হতে পারে বলে অনুমাণ করা হচ্ছে ।
তিনি আরও বলেছেন , নির্মাণে পুনর্নির্মিত সম্পদ ব্যবহারের আয়তনও বেড়ে যাচ্ছে । চীনের শহরের ২০ কোটি বর্গমিটারনির্মাণে সৌর শক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে । কিন্তু চীনের নির্মাণে জ্বালানিসম্পদের অপব্যয় এখনো বিরাট । বর্তমানেচীনের ৪৩ বিলিয়ন বর্গমিটারের পুরানো অট্টালিকার সংস্কার কাজ কঠিন বলে এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে । সার্বিকভাবে কাজ চালানো এখনো শুরু হয়নি । তিনি উল্লেখ করেছেন , আমরা কত বেশি জ্বালানি সম্পদ অপচয় করেছি আমি একটি উদাহরণ দিয়ে তা ব্যাখ্যা করতে পারি । পেইচিং শহরের শীতকালের হিটিং ব্যবস্থারকথাইধরা যাক । প্রতিবর্গমিটারের নির্মাণে ২২.৪ কেজি কয়লা ব্যয় করা হয় । এই পরিমান জার্মানীর১৯৮৬ সালের মানের সমান । কিন্তু এখন জার্মানির এই মান ৯ কেজিতে নেমেছে । এ থেকে দেখা যায় যে , চীন ও জার্মানির পার্থক্য বিরাট ।
উপমন্ত্রী ছিউ পাওসিং বলেছেন , চীনের পুরানো অট্টালিকার সংস্কার সম্পন্ন করলে কমপক্ষে ১.৫ ট্রিলিয়ন রেনমিনপি ব্যয় করতে হবে । পুরানো অট্টালিকার সংস্কারকে সাহায্য করার জন্যে চীন এখন প্রাসঙ্গিক নীতি প্রণয়ন করছে । পুরানো অট্টালিকার সংস্কারের মাধ্যমে সাশ্রয়ের মানদন্ড তিনগুণ বাড়বে । এই সব সংস্কার সম্পন্ন হলে কমপক্ষে ১৫কোটি টন কয়লা বাঁচবে ।
তিনি বলেছেন, নতুন নির্মিত অট্টালিকায় চীনের সাশ্রয়ের প্রধান দিক ঠিক রাখা হবে । পরবর্তীকালে নতুন নির্মিত অট্টালিকায় ৫০শতাংশ সম্পদের সাশ্রয় বাস্তবায়িত হবে । পেইচিং , সাংহাই , থিয়েনচিন ও ছুংছিং চারটি কেন্দ্র শাসিত মহা নগরের সম্পদের সাশ্রয়ীহার প্রথমেই৬৫ শতাংশে আনতে হবে ।
তিনি বলেছেন , চীনের নির্মাণ মন্ত্রণালয় নির্মাণের নতুন নিয়মবিধি প্রণয়ন করবে । ২০১০ সালের শেষ নাগাদ ১১ কোটি টন কয়লা এবং ২০২০ সালের আগে ৩৫ কোটি টন কয়লা সাশ্রয়ের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চালাবে ।
উপমন্ত্রী ছিউ পাওসিং বলেছেন , নির্মাণ সাশ্রয়ীক্ষেত্রে চীন আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে জোরদার করতে চায় । যাতে নতুন অভিজ্ঞতা ও আধুনিক প্রযুক্তি ও উত্পাদিতদ্রব্য অবাধে চীনে প্রবেশ করতে পারে । তিনি জানান , মার্চ মাসের শেষ দিকে সবুজ নির্মাণ , নতুন প্রযুক্তি ও পণ্যদ্রব্যেরতৃতীয় মেলা পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিতহবে । মেলাটি চীনের সাশ্রয়ী ক্ষেত্রে প্রগতিশীল দেশের প্রযুক্তি ও পরিচালনার অভিজ্ঞতাআহরণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ।
|