শীতকাল হচ্ছে বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঋতু । কারণ শীতকালে আমাদের শরীর বেশি পুষ্টি খরচ করে শরীরের স্বাভাবিক রাসায়নিক রূপান্তর কাজ চালায় । বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, টাটকা দূধ আমাদের শরীরের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয় । এ জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে এক কাপ দূধ খেলে, শরীরের জন্য যথেষ্ট পুষ্টি সংগৃহীত হবে এবং এ জন্যে অনেক টাকাও খরচ হবে না ।
টাটকা দূধের মধ্যে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন , অনেক ধরনের ভিটামিন ও খনিজ সম্পদ । বিশেষ করে দূধের মেদ ও চিনির পুষ্টিকর মূল্য অন্যান্য খাবারের চেয়ে অনেক ভালো । এ জন্য আমরা দূধকে সম্পূর্ণ পুষ্টিকর খাদ্য বলে থাকি । দূধের মধ্যে রয়েছে আলবামিন শরীরের পুষ্টি গ্রহণকে ত্বরান্বিত করে এবং অনাক্র্যমতা জোরদার করে ।
দূধের মধ্যে নানা ধরনের এমিনোফেনল রয়েছে । বিভিন্ন বয়সের লোকদের জন্য তা খুবই সহায়ক হিসেবে কাজ করে । দূধের মধ্যে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকার জন্য আপনারা দূধ খান, ফলে সহজভাবে শরীর তা গ্রহণ করতে পারবে । ক্যালসিয়াম ঔষধ খাওয়ার চেয়ে দূধ অনেক ভালো ওষুধের কাজ করবে । তা ছাড়া, টাটকা দূধ এ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করতে পারে এবং শরীরের রাসায়নিক রূপান্তর ত্বরান্বিত করে থাকে । শিশুদের শরীরের উন্নয়ন এবং নারীদের সুন্দর চেহারার জন্য দূধ অনেক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে ।
বর্তমানে বাজারে আমরা প্রধানত দুই ধরনের দুধ দেখতে পাই। পাস্তুরিত দূধ এবং অপাস্তুরিত দূধ । পাস্তুরিত দূধ সাধারণ দূধের মধ্য থেকে বিষাক্ত দ্রব্য জীবাণুমুক্ত করে এবং দূধের মধ্যেকার পুষ্টিকর উপাদান বজায় রাখে । এ দূধ সাধারণত ১০ দিন রাখা যায় । অপাস্তুরিত দূধ ১৩৮ থেকে ১৪২ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রায় দূধের মধ্যেকার সকল জীবাণু মুক্ত করা হয় । এ পদ্ধতিতে দূধ জীবাণুবিহীন অবস্থায় ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে খেতে পারা যায় এবং রিফরিজারেটরে রাখার প্রয়োজন পড়ে না ।
আমাদের কোন ধরনের দূধ খাওয়া ভালো ? যদিও অপাস্তুরিত দূধ দীর্ঘকাল রাখতে পারা যায়, কিন্তু উচ্চ তাপে সকল জীবাণুমুক্ত করার পর, দূধের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদানের কিছু ক্ষতি হয় । পাস্তুরিত দূধ যদিও সংরক্ষণ করার সময় কম, তবে এ ধরনের দূধের মধ্যে মানুষের শরীরের জন্য সহায়ক গুণ বজায় থাকে, দূধের পুষ্টিকর উপাদানের ক্ষতির দিকও কম । তাছাড়া শুধু গুণগতমানের দূধ পাস্তুরিত দূধ তৈরী করতে পারে । এ জন্য আমরা যদি সবসময় পাস্তুরিত দূধ খাই, তাহলে তা শরীরের জন্য আরো বেশি সহায়ক হবে ।
|