v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-01-17 16:08:16    
রাশিয়া কেন ইরানের কাছে তার সামরিক সরঞ্জামবিক্রিতে অটল রয়েছে

cri
    রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই ইভানোভ মংগলবার বলেছেন , ইরানের সংগে স্বাক্ষরিত সামরিক বিক্রি সংক্রান্ত প্রটোকল অনুসারে রাশিয়া ইতোমধ্যে ইরানের কাছে টোর-এম ১ বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহের দায়িত্ব পালন করেছে । যখন ইরানের পরমাণু সমস্যা অমিমাংশীত অবস্থায় রয়েছে , ঠিক তখনই রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে এ নতুন দফা সামরিক লেনদেন হয়েছে । তা সংগে সংগে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগের সঞ্চার করেছে ।

    পৃথিবীতে এখন শুধু টোর-এম ১ বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা একই সময় আকাশের ৪৮টি লক্ষ্যবস্তু আবিষ্কার করতে পারে । ২০০৫ সালে রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সংশ্লিষ্ট প্রটোকল অনুসারে রাশিয়া ইরানের কাছে ৩০ সেট ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের টোর-এম ১ বিমান -বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করেছে । এটি হচ্ছে গত কয়েক বছরে দু' দেশের মধ্যকার একটি বৃহত্তম সামরিক লেনদেন । জানা গেছে , ইরান এ ব্যবস্থা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রতিষ্ঠান ও সামরিক স্থাপনা রক্ষা করবে । তার মধ্যে রয়েছে বুশির পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের মত গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ব্যবস্থা ।

    একই দিন যুক্তরাষ্ট্র তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে । মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টম ক্যাসি মংগলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন , যখন জাতি সংঘ ইরানের পরমাণু কর্মসূচীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে , এমন অবস্থায় রাশিয়া ইরানের কাছে অস্ত্র রফতানি করে দেশটি অসংগতিপূর্ণ সংকেত দিয়েছে । যুক্তরাষ্ট্রের এ নিন্দার মুখে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইভানোভ বলেছেন , গত মাসে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবে এর আগে রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সামরিক বিক্রি সংক্রান্ত প্রটোকলের উল্লেখ নেই । রাশিয়া ইরানের কাছে যে স্বল্প পাল্লার বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা দিয়েছে , তা প্রটোকল পালন ছাড়া কিছুই নয় ।

   বিশ্লেষকরা বলেছেন , রাশিয়া নিজের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সক্রিয়ভাবে ইরানের সংগে সামরিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে ।

    প্রথমত রাশিয়া ইরানের সংগে সামরিক সহযোগিতা করে অর্থনৈতিক দিক থেকে বিপুলভাবে লাভবান হয়েছে । ২০০৫ সালে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির পরিমাণ প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে । এখন রাশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম অস্ত্র রফতানীকারক দেশে পরিণত হয়েছে । ২০০৬ সালে রাশিয়ার সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির পরিমাণ ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে । গত কয়েক বছরে নতুন সামরিক প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাশিয়ার আর্থিক ঘাটতি রয়েছে । সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির মাধ্যমে পাওয়া মুনাফা রাশিয়ার নতুন অস্ত্র উন্নয়নের জন্যে আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে । সুতরাং রাশিয়া সবসময় ইরানের সংগে তার সামরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং ইরানে তার অস্ত্র রফতানী বাড়িয়ে দিয়ে চলেছে ।

    দ্বিতীয়ত ইরানের সংগে পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক বজায় রাখার জন্যে রাশিয়া ইরানের সংগে তার সামরিক সহযোগিতা চালিয়ে এসেছে । ইরানের সংগে তার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সুসংবদ্ধ করার মাধ্যমে রাশিয়া মধ্যপ্রাচ্য ও কাসপিয়ান সাগরে কার্যকরীভাবে তার প্রভাব খাটাতে পারবে । পাশাপাশি এর মাধ্যমে রাশিয়া কাওকাসাস অঞ্চলে ইসলামী উগ্রপন্থী শক্তির বিকাশ রোধ করতে পারবে ।

    যুক্তরাষ্ট্র বলপ্রয়োগ করে ইরানের পরমাণু সমস্যা সমাধানের যে ইচ্ছা পোষণ করছে , তা রোধ করার জন্যেও রাশিয়া ইরানের কাছে আত্মরক্ষামূলক আধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করছে । রুশ জনমত অনুযায়ী, ইরানের কাছে রাশিয়ার বিমান-বিধ্বংসী ব্যবস্থা দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে ইরানের ওপর বিমান আক্রমণ চালালে তাকে আরো বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে । তাই ইরানের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের সময় যুক্তরাষ্ট্রও সতর্ক থাকতে বাধ্য হবে ।