v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-01-15 20:49:30    
চীন ও ভারতের বিনিময় কর্মসূচীর কল্যাণ চীনা ছাত্রছাত্রীদের ভারতে গিয়ে শিক্ষার জন্য নতুন প্রাণশক্তি যুগিয়েছে

cri
    ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে অধ্যয়ন করতে যাওয়ার জন্য দেশ বাছাই করার সময় বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই ইউরোপীয় দেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা প্রথমেই চিন্তা করে। তবে বর্তমানে এ পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। চীন ও ভারতের বিনিময় ও সহযোগিতা ধাপে ধাপে উন্নত হওয়ার ফলে ভারতে অধ্যয়ন করতে যাওয়া চীনা ছাত্রছাত্রীদের কাছে একটি নতুন বাছাইয়ে পরিণত হয়েছে।

    ভারতের শিক্ষা পরামর্শ লিমিটেড কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তি সিং বলেছেন, ভারতে লেখাপড়া করা চীনা ছাত্রছাত্রীদের জন্যে উপযোগী। সাধারণত, চীনা ছাত্রছাত্রীরা ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের ফি বা বেতন বাবদ শুধু পাঁচ শো মার্কিন ডলার ব্যয় করে। ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে না থাকলে বাইরে থাকার জন্য প্রতি মাসে আরো এক শো মার্কিন ডলার প্রয়োজন হয়। সুতরাং এক বছরে শুধু তিন হাজার মার্কিন ডলার যথেষ্ট। পশ্চিমা দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জন্য প্রত্যেক বছরে দশ হাজার মার্কিন ডলারই দরকার। এর পাশাপাশি ভারতে অনেক বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। ইতোমধ্যে কম্পিউটার ,জীবন বিজ্ঞান , শিল্প ও বাণিজ্য পরিচালনা ইত্যাদি বিভাগ বিশ্বের দৃষ্টি অর্জন করেছে। এসব বিভাগের স্নাতক ছাত্রছাত্রীদের চাহিদা বেশি।

    চীনের শাংহাইয়ের মেয়ে ওয়াং চিং দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিভাগে লেখাপড়া করেন। আগামী বছর তিনি মাস্টার্স ডিগ্রী পেতে পারেন। তিনি বলেছেন, ভারতে লেখাপড়া প্রথমতঃ ইংরেজী ভাষার জ্ঞানকে উন্নত করার পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়, তাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানের পর্যায় বজায় রাখতে পারে। দ্বিতীয়তঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়ার প্রদি খুবই আগ্রহী। তৃতীয়তঃ ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্যতা পশ্চিমা দেশগুলোর স্বীকৃতি পেতে পারে। কারণ ভারত হচ্ছে বৃটিশ কমনওয়েলথের সদস্য দেশ। তাই অন্য দেশে আরো উন্নত শিক্ষা লাভের জন্য ব্যাপক সুবিধা এনে দেয়।

    নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ডক্টর মাও শি ছাং বলেছেন, ভারতে লেখাপড়া করার যদিও অনেক সুবিধা রয়েছে, তবে এখানে নিরিবিলি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ দেখালে সত্যি কারের জ্ঞান অর্জন সম্ভব। গত গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে বহু বিখ্যাত আইটি কোম্পানি দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক প্রতিভাকে নিয়োগ করেছে। একটি কোম্পানি বহু জাতিক ওয়াং চিংকে নিয়োগ করতে চায়। তবে তিনি না স্নাতক হবার জন্য এসব বিখ্যাত কোম্পানির আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিখ্যাত আইটি কোম্পানি কোগনিজ্যান্ট তাঁকে একটি চাকরিতে রাখতে ইচ্ছুক। তাঁকে স্নাতক হবার পর এই কোম্পানি শাংহাইয়ের আওতাধীন বিভাগে পাঠাবে। ওয়াং চিং এ জন্য প্রতি মাসে দু'হাজার মার্কিন ডলার পারেন।

    গত বছর নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে মাস্টার্স ডিগ্রী পাওয়া একজন শ্রেষ্ঠ চীনা ছাত্র জার্মানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আরো উন্নতি লাভ করছেন। এর আগে চীনা ছাত্রছাত্রীরা ভারতে লেখাপড়ার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক,ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিভাগ বাছাই করতেন। বর্তমানে কম্পিউটার ,জীবন বিজ্ঞান , শিল্প ও বাণিজ্য পরিচালনা ইত্যাদিবিভাগে বাছাই করা ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা আরো বেশি হচ্ছে। ভারতস্থ চীনের দূতাবাসের শিক্ষা ব্যুরোর সুন সিন ছুয়েন বলেছেন, ভারতে লেখাপড়া করা ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ধাপে ধাপে বেড়েছে। বিশেষ করে গত তিন বছর। বর্তমানে ভারতে চীনা ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা দু'শোরও বেশি।

    জানা গেছে, চীন ও ভারত গত শতাব্দীর পঞ্চাশ দশক থেকে ছাত্রছাত্রীদের বিনিময় অব্যাহত রেখেছে। গত আশি দশক থেকে সরকারী স্কলারশীপের মাধ্যমে দেয় দু'দেশ প্রত্যেক বছর যার যার ২৫জন ছাত্রছাত্রীকে পাঠিয়েছে। দু'দেশের ছাত্রছাত্রীদের পারস্পরিক বিনিময় ছাড়াও,২০০০ সাল আগে দু'দেশের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নিজে ফি বা বেতন দেয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা খুব কম। নতুন শতাব্দীতে বিশেষ করে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপায়ী ২০০৩ সালে চীন সফরের পর দু'দেশের নিজে ফি বা বেতন দেয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ধাপে ধাপে বাড়ছে। এখন এসব চীনা ছাত্রছাত্রী ভারতে লেখাপড়ার প্রধানপ্রবাহ। ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ভারত সফর করেছেন। ফলে শিক্ষার হিড়িকে চীনা ছাত্রছাত্রীদের ভারতে যাওয়ার সংখ্যা আরো বাড়ছে।

    ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও এর ভারত সফরের পর চীনা ছাত্রছাত্রীদের ভারতে গিয়ে লেখাপড়ার ব্যাপারে নতুন প্রাণশক্তি যুগিয়েছে। দু'দেশের জনগণ এবার সফরের মাধ্যমে সমঝোতাকে আরোজোরদার করছে।