কিউবা ক্যারিবীয় সাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বৃহত্তম দ্বীপ দেশ। কিউবা দ্বীপসহ এক হাজার ছয়'শরও বেশী দ্বীপ নিয়ে দেশটি গঠিত। দেশটির আয়তন ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশী বর্গকিলোমিটার। এর সমুদ্রসীমার দৈর্ঘ্য ছয় হাজার কিলোমিটার। দেশের অধিকাংশ এলাকার ভূখণ্ড সমতল। দেশটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইনফরেষ্ট ক্লাইমেট-সম্পন্ন। এর লোকসংখ্যা ১ কোটি ২১ লাখ। জাতীয় ভাষা স্প্যানিশ।
১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস সমুদ্র পথে কিউবায় পৌঁছেন। ১৫১১ সালে কিউবা স্পেনের উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৮৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র কিউবা দখল করে। ১৯০২ সালে কিউবা প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র বলপ্রয়োগে কিউবার নৌবাহিনীর দুটি ঘাঁটি দখল করে নেয়। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র গুয়ানতানামো ঘাঁটিকে দখল করে রেখেছে।
কিউবা হচ্ছে বিশ্বের একটি চিনি উত্পাদনকারী দেশ। কিউবা "বিশ্বের চিনির বাটি"বলে পরিচিত। এর শিল্প চিনিকে কেন্দ্র করে বিকশিত হয়। কিউবার চিনি উত্পাদনের পরিমাণ বিশ্বের ৭ শতাংশেরও বেশী। মাথাপিছু চিনি উত্পাদনের পরিমাণ বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। প্রতি বছর ইক্ষু চিনিবীটের উত্পাদন মূল্য জাতীয় আয়ের ৪০ শতাংশ। কৃষি ক্ষেত্রে প্রধানত আখ চাষ করা হয়। আখের চাষের জমির আয়তন দেশের ব্যবহারযোগ্য আবাদী জমির ৫৫ শতাংশ। তা ছাড়া, ধান, তামাক ও কমলা প্রভৃতি চাষ করা হয়। কিউবার সিগার বিশ্বে খুব বিখ্যাত।
বর্তমানে কিউবার রাজধানী হাভানার লোকসংখ্যা ২২ লাখ। এটি হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বৃহত্তম শহর ও বিশ্বের একটি খুব সুন্দর শহর। হাভানা শহর হচ্ছে গৃহনির্মান শিল্পকলার মূল্যবান স্থান। এই শহর বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন স্থাপত্য শৈলীর অধিকারী। ১৯৮২ সালে ইউনেস্কো হাভানা শহরকে "মানবজাতির সংস্কৃতির উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির" তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে।
কিউবার পর্যটন সম্পদ খুব বৈচিত্র্যময়। কয়েক'শ দর্শনীয় স্থান পান্নার মতো সমুদ্রসীমায় রয়েছে। উজ্জ্বল রোদ, উত্তাল সমুদ্রের পানি, সাদা বালি এবং সমুদ্রতীর প্রভৃতি প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্যে এই দ্বীপ দেশ বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর বিখ্যাত পর্যটন স্থান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিউবা এসব বিশেষ সুবিধা বাজে লাগিয়ে পর্যটনের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এবং পর্যটনকে জাতীয় অর্থনীতির প্রথম বড় স্তম্ভ শিল্পে পরিণত করে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০০৩ সালে পর্যটন শিল্প থেকে আয় বেতন ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছিল।
কিউবা ১৯৬০ সালে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান দেশ। চীনের সাবেক প্রেসিডেন্ট চিয়াং চেমিং ১৯৯৩ সালে এবং ২০০১ সালে কিউবা সফর করেন। কিউবার রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার কাস্টোরাল ১৯৯৫ সালে এবং ২০০৩ সালে চীন সফর করেন। চীন হচ্ছে কিউবার প্রধান বন্ধু রাষ্ট্র।
|