১০ জানুয়ারী চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি খবরে বলা হয়েছে , চীনে নতুন চিকিত্স ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে । এই ব্যবস্থা কার্যকর করার পর শহরের নাগরিক ও পল্লী অঞ্চলের কৃষকরা মৌলিক চিকিত্সার সুবিধা পাবেন ।এর ফলে চীনে চিকিত্সা ব্যবস্থার সংস্কার তরান্বিত হবে এবং শহরের নাগরিক ও গ্রামের কৃষকদের চিকিত্সার সুযোগ কম ও ওষুধের দাম অতিরিক্ত বেশীর সমস্যা নিষ্পত্তি হবে ।
ম্যাডাম ওয়াং ছাও ইং পেইচিংয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ইয়োং লে আবাসিক এলাকার এক বাসিন্দা । কিছু দিন আগে তার সর্দি জ্বর হয় । আগে অসুস্থ হলে তিনি বড় হাসপাতালে যেতেন । তিনি শুনেছেন বাড়ীর পাশে আবাসিক এলাকায় এক চিকিত্সা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । ম্যাডাম ওয়াং ছাও ইং মনে করেন , ছোটখাট অসুখবিসুখের জন্য বড় হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন নেই । তাই এবার তিনি সেই চিকিত্সা কেন্দ্রে গেলেন । আবাসিক এলাকার চিকিত্সা কেন্দ্রের ওষুধের দাম বড় হাসপাতালের চেয়ে কম । তিনি বলেছেন , আবাসিক এলাকার ক্লিনিকে ওষুধের দাম সস্তা । বড় হাসপাতালে গেলে আমাকে কমপক্ষে আরো বিশ-বাইশ ইউয়ান দিতে হবে ।
গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে পেইচিংয়ের সমস্ত আবাসিক এলাকার ক্লিনিকের ওষুধপত্র সরকারের একীভুত ক্রয় ও বন্টন ব্যবস্থার অধীনে নেয়া হয়েছে । সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সোজা ওষুধ কারখানা থেকে ওষুধ কিনে থাকে । একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , এই ব্যবস্থার কল্যানে প্রতি বছর পেইচিংয়ের নাগরিকরা ৪০ কোটি ইউয়ান বাঁচাতে পারছে ।
এই ব্যবস্থা চীনের নতুন চিকিত্সা ব্যবস্থার একটি অংশ । নতুন চিকিত্সা ব্যবস্থার মূল বিষয় হলো সকল নাগরিক ও গ্রামবাসীদের বিনাখরচে চিকিত্সা পরিসেবা সরবরাহ করা এবং তাদেরকে কম দামের ওষুধ পত্র দেয়া । এ নতুন ব্যবস্থার কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য পরবর্তীকালে চীন সরকার এ ক্ষেত্রে আরো বেশি অর্থবরাদ্দ দেবে । এ মধ্যে আছে শহর ও গ্রামাঞ্চলে আরো বেশি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা , হাসপাতালে আরো বেশি চিকিত্সা সরঞ্জাম কেনা , চিকিত্সা ক্ষেত্রে সরকারী ভর্তুকী বাড়ানো ও সংক্রামক রোগের তত্ত্বাবধান নেট প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি । সরকার আশা করে এ নতুন চিকিত্সা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে চিকিত্সা পরিসেবা ক্ষেত্রে শহরের নাগরিক ও গ্রামাঞ্চলের অধিবাসীদের ব্যবধান কমানো হবে এবং প্রত্যেকজনের মৌলিক চিকিত্সা পরিসেবা নিশ্চিত হবে ।
দ্বিতীয়তঃ চীনে বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিত্সা নিশ্চিত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে । চীন একটি বড় দেশ , চীনের শহর ও গ্রামের উন্নয়নের ব্যবধান বিরাট । অল্প সময়ের মধ্যে সমগ্র দেশে একীভূত চিকিত্সা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সহজ নয় । এ সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য চীনে বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক চিকিত্সা বীমা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে । বর্তমানে চীনের প্রায় অর্ধেক কৃষক নতুন ধরনের গ্রামীন সমবায় চিকিত্সা ব্যবস্থায় অংশ নিয়েছেন । এ বছর এই অনুপাত ৮০ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে । শহরাঞ্চলের চিকিত্সা বীমা ব্যবস্থা আরো পরিপূর্ণ হবে ।
তৃতীয়তঃ চীনে মৌলিক ওষুধপত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে । ওষুধপত্রের উত্পাদন , কেনা , বন্টন ও ব্যবহারের উপর সরকারী নিয়ন্ত্রন জোরদার করা হবে । বর্তমানে ওষুধপত্র বাজারের বিশৃঙ্খল অবস্থার পরিবর্তন হবে , ওষুধপত্রের অতিরিক্ত দাম কমাতে হবে এবং ওষুধপত্র কেনা-বেচায় দুর্নীতি দূর করা হবে , যাতে জনসাধারণ কমদামে এবং নিরাপদে ওষুধপত্র পাবেন ।
চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও ছুন আন বলেছেন , ২০০৭ সালে নতুন চিকিত্সা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কাজ সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন করা অসম্ভব । তবে চিকিত্সা ক্ষেত্রের বেশ কয়েকটি নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে । এ নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করার সময় কিছু বাস্তব ব্যবস্থাও নেয়া হবে । আমরা এই নতুন ব্যবস্থার প্রতীক্ষাআছি ।
|