v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2007-01-05 14:59:32    
আলেয়া ফেরদৌসীর সাক্ষাত্কারের প্রথম অংশ

cri

    বাংলাদেশের জনপ্রিয় নাট্যাভিনেত্রী আলেয়া ফেরদৌসী গত মাসে চীন আন্তর্জাতিক বেতারে আসেন এবং সাক্ষাত্কার দেন।

    প্রশ্নঃ আপনি বাংদেশের একজন বিখ্যাত ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। নাটকে অভিনয় আপনার জীবনে কি কি প্রভাব ফেলেছে এবং এ ব্যাপারে আপনার জীবনের সবচেয়ে স্বরনীয় ঘটনা কি ছিলো?

 উঃ আমি নাটকে এসেছি খুব কাকতালীয়ভাবে। আমি নোয়াখালীর ভাষা জানতাম। যখন রেডিওতে একটি নাটকের জন্য আতিকুল হক চৌধুরী একজন শিল্পীর খোঁজ করছিলেন, ঠিক সেই সময় ভয়েস অব আমেরিকাতে চাকরি করতেন এক ভদ্রলোক তার নাম রফিকুল হক। তিনি জানতেন যে, আমি নোয়াখালির ভাষা জানি এবং সেই নাটকটির নাম ছিল সারেং। সেই সারেং-এ যারা অভিনয় করেছিলেন সবাইকেই বলতে গেলে নোয়াখালির ভাষা জানতে হয়েছে। এভাবেই আতিকুল হক চৌধুরী সবাইকে সিলেক্ট করেছিলেন। রফিকুল হক একদিন সকালে আমার হোষ্টেলে গিয়ে বললেন যে, তুমি কি নাটকে অভিনয় করতে পারবে? আমি বললাম হ্যাঁ পারবো। তো উনি বললেন তুমি নোয়াখালির ভাষা জানো? আমি বললাম জানি। উনি আমাকে বললেন যে , তুমি আতিকুল হক চৌধুরীর সঙ্গে রেডিওতে দেখা করো। আমি পরদিন দেখা করলাম। আতিকুল হক চৌধুরী আমাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে বললেন যে, একটুখানি আপনার অডিশন নেবো। কবিতা পড়তে দিলেন। কবিতা পড়লাম। তারপরে বললেন যে, কাল থেকে বিকেলে রিহার্সেলে আসবেন। আমিতো খুব খুশী হয়ে গেলাম। পরের দিন রিহার্সেলে আতিকুল হক চৌধুরী আমাকে যে চরিত্রটি দিয়েছিলেন সবাইকে তা পড়তে দিলেন। সবার পড়া হয়ে গেলে আমাকে পড়তে বললেন। আমি পড়লাম, পড়ার পরে তিনি বললেন যে, এই চরিত্রটি আপনি করবেন। আমি একটু লজ্জা পেলাম। কারণ চরিত্রটা ছির বাইজীর। তখন আমি ভাবলাম যে, আমি প্রথম নাটক করবো রেডিওতে। আমার বাবা ও মা'কে শুনতে বলবো, অথচ প্রথমেই আমি একটা বাইজীর চরিত্র করছি কেমন লাগবে আমার কাছে। তারপর নাটকটি রেডিওতে রেকর্ডিং হলো। খুব ভালো হলো নাটক। আমার অভিনয়ও খুবই ভালো হলো এবং রফিকুল হক যখন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কেমন হলো তোমার নাটক? আমি বললাম ভাইয়া আমার খুব খারাপ লাগছে আমার চরিত্রটি। বাইজীর চরিত্র। প্রথমেই আমি বাইজীর চরিত্র করছি। তখন তিনি বললেন, আরে মেয়ে , যে এই চরিত্রটি ভাল করতে পারবে সেইতো ভালো অভিনেত্রী বলে প্রমানিত হবে। তুমি কেন ভয় পাচ্ছো? তুমি কেন লজ্জিত হচ্ছো?

 প্রঃ মানে এই নাটক থেকে আপনার অভিনয় জীবনের শুরু?

 উঃ জ্বি, এই জীবনটা শুরু। তার আগে আমি অল্প অভিনয় করেছিলাম সেটা আলাদা। কিন্তু এটা দিয়ে আমার শুরু এবং পরে আমার জন্য বেশী স্বরনীয় ঘটনা এই যে দৈনিক অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক নিজেই এই নাটকের সমালোচনা লিখেছিলেন এবং সেই সমালোচনার কাটিং এখনো আমার কাছে আছে। তিনি লিখেছিলেন , এই নাটক শোনার পর তার স্ত্রী কেঁদেছিলেন । আমি মনে করি এই নাটক দিয়েই আমার অভিনয় জীবনের শুরু এবং এই নাটকের প্রভাবই আমার পরবর্তী জীবনের নাটকে খুবই প্রভাব ফেলেছে। কারন এরপরে আর আমাকে পেছনে কিরে তাকাতে হয় নি। সবসময়ই আমি ভালো চরিত্রের জন্য নির্বাচিত হয়েছি এবং সবাই আমাকে খুব আদরের সাথে শিখিয়েছেন। সবাই আমাকে ভালো ভালো চরিত্র দিয়েছেন এবং প্রত্যেকের সাহায্য ও সহযোগিতা পেয়েছি এই অভিনয় জীবনে এবং এটা আমার জন্য ভোলার নয়। ব্যক্তিগত জীবনেও সবাই আমাকে এই নাটকে অভিনয়ের কারণে ভীষণ সম্মানও করে থাকেন। এত সম্মান আমি পাই তা বোঝাতে পারবো না। আমি দেশের মানুষের খুব ভালবাসা পেয়েছি। সম্মানও পেয়েছি।

 প্রঃ কিন্তু অভিনয় জগতে যোগদান করার পর আপনার বাবা মা আপনাকে সমর্থন করেছেন?

 উঃ আমার বাবা মা'র সমর্থন সবসময়ই ছিল। আমার বাবা মা বলতেন যে, তোমার ওপর আমাদের বিশ্বাস আছে। আমরা জানি, আমাদের বিশ্বাস তুমি কোন দিন ভাঙবে না। এটাই আমার জন্য সবচাইতে বড় পাওয়া ছিল।

 প্রঃ আপনি কখনো গুণে দেখেছেন যে, আপনি এ পর্যন্ত মোট কতটি নাটকে অভিনয় করেছেন?

 উঃ আমি রেডিও এবং টেলিভিশন মিলিয়ে প্রায় দু থেকে তিন শ' নাটক করেছি। অনেক করেছি। তবে মঞ্চে আমার নির্দেশনায় ১৪ নাটক অভিনীত হয়েছে। এই নির্দেশনার মধ্যে আমার রচিত নাটকের সংখ্যা বাচ্চাদের জন্য লেখা ৭টি এবং বড়দের নাটক ৩টি। বাকীগুলো নাট্যরূপ দেয়া।

 প্রঃ আপনি কখনো চীনের নাটক দেখেছেন বা চীনের চলচ্চিত্র ?

 উঃ চীনেতো আমি প্রথম এলাম। কিন্তু যখন আমি আমাদের টেলিভিশনে চীনের অনুষ্ঠান দেখি, তখন আমি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখি। আমার খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে কার্টুনগুলোখুবই মনোযোগ দিয়ে দেখি। আপনাদের যে এক্রোবেটিক অনুষ্ঠানগুলো মাঝে মাঝে দেখানো হয়, তাও আমি মুগ্ধ হয়ে দেখি। কিভাবে এত সুন্দর অনুষ্ঠান আপনাদের ছেলে মেয়েরা করে। মাঝে মাঝে মনে হয় যে আমার নাটক নিয়েও যদি আপনাদের দেশে আসতে পারতাম। তাহলে আমাদের ছেলে মেয়েরাও কিছু শিখতে পারতো এবং আমরাও কিছু দেখাতে পারতাম আপনাদের। আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনের কিছুন পরিচয়ও আপনারা পেতেন।