চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সম্প্রতি সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন , পরবর্তী ৫ বছরে চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে বিপুলমাত্রায় অর্থ বরাদ্দ বাড়াবে , কৃষি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের শক্তি উন্নত করবে , কৃষি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সুফলের সম্প্রসারণ জোরদার করবে এবং চীনের কৃষি উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে ।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা তু চিয়ান ইউয়ান বলেছেন , পরবর্তী ৫ বছরে চীন ৮০ থেকে ১ শো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য বড় অংকের অর্থ বরাদ্দ করবে , কৃষি প্রযুক্তির গবেষণা ও প্রয়োগের পদক্ষেপ দ্রুততর করবে , কৃষি গবেষণাগার ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কৃষি বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবনের নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ জোরদার করবে এবং কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রধান শক্তিতে পরিণত হওয়ার জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে ।
গ্রামাঞ্চলে গ্রামীণ শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের শক্তি এখনো পিছিয়ে আছে । চীনের কৃষি মন্ত্রণালয় গ্রামীণ শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে সহায়তা প্রদান জোরদার করবে এবং বেশ কয়েকটি পরীক্ষাগার বা প্রকল্প কেন্দ্র স্থাপনসহ বিপুল সংখ্যক গ্রামীণ প্রযুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা বিবেচনা করবে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী , বর্তমানে চীনে বিজ্ঞান ও কৃষি প্রযুক্তিউন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করছে । কৃষির যান্ত্রিকীকরণের হার ৩৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু চীনের কৃষির বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের শক্তি এখনো পিছিয়ে রয়েছে । কৃষি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণা বিদেশী প্রযুক্তির অনুকরণ বজায় রয়েছে । এতে চীনের কৃষির উন্নয়ন মন্থর হয়েছে । গত ৫ বছরে চীনে কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে মোট ৮ বিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু এটা শিল্পের অর্থ বরাদ্দের চেয়ে কম ।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বলেছেন , ভবিষ্যতে চীনের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কৃষির ওপর আরো গুরুত্ব দেয়া হবে । বিশেষ করে জীব কারিগরী বিদ্যা , কৃষিজাত দ্রব্যের সার্বিক প্রক্রিয়াকরণ , গ্রামাঞ্চলের তথ্যায়ন ও ডিজিট্যাল কৃষি চীনের কৃষি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের নতুন প্রধান ক্ষেত্রে পরিণত হবে । শিল্প ও কৃষি উন্নয়নের অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে । এর পাশাপাশি চীন নতুন প্রজন্মের জীব ও উদ্ভিদের সংরক্ষণ জোরদার করবে , বিশুদ্ধ অবস্থায় পশু ও মত্স্য চাষ উন্নয়ন করবে এবং কৃষি উত্পাদনের সার্বিক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে ।
চীনের কৃষি সম্পদ প্রয়োগের হার এখনো পিছিয়ে আছে । এতে কৃষি উত্পাদন ও কৃষকদের আয় বৃদ্ধি ক্ষুন্ন হয়েছে । কৃষি সম্পদ প্রয়োগের হার বাড়ানোর অন্যতম ব্যবস্থা হিসেবে ভবিষ্যতে চীন প্রধানতঃ জীব কারিগরী বিদ্যার উন্নয়নে সহায়তা করবে । যাতে কৃষি আয়ের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করা যায় । চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা চিয়া চিং তুং বলেছেন ,
রাসায়নিক সার , কীটনাশক ওষুধ কৃষি উত্পাদন সামগ্রীর ক্ষেত্রে এখনো পুরোপুরি ব্যবহার করা হয় নি । চীনে প্রতি বছর কৃষি ক্ষেত্রে ৭০ কোটি টন ফসলের গাছ এবং অরণ্য শিল্পের ক্ষেত্রে ২০ কোটি টন বর্জ্য পদার্থ অবশিষ্ট থেকে যায় । আসলে এই সব সামগ্রী বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে কাজে লাগানো উচিত ।
কৃষির বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সুফল গ্রামাঞ্চলে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হবে কি না , তা চীনের কৃষি উত্পাদনের মান বাড়ানোর একটি মূল উপায় । চীনের গ্রামাঞ্চলের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রকল্প জনপ্রিয় করে তোলার জন্য চীন একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে । এ পর্যন্ত এই পরিকল্পনা অনুযায়ী , দেড় লাখ কৃষির বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত প্রকল্প চালু হয়েছে । এই সব প্রকল্প চীনের ৯০ শতাংশ গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে এবং এতে ১০ কোটি কৃষক প্রশিক্ষণ পেয়েছে।
|