v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-28 15:35:41    
ইরান আবারো নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে

cri
    গত বুধবার ইরানের সংসদে গৃহীত একটি বিলে পরমাণু কার্যক্রম আরো দ্রুততর করা এবং অবিলম্বে আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার সংগে ইরানের সহযোগিতার নীতি সংশোধনের ব্যাপারে সরকারকে তাগিদা দেয়া হয়েছে । গত ২৩ ডিসেম্বর যখন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ১৭৩৭ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয় , ইরান সরকার সেদিনই এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে । ইরানের এ ধারাবাহিক অনমনীয় পদক্ষেপের কারণে এ বছরের শেষ দিকে ইরানের পরমাণু সমম্যা আবারো বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ।

    গত বুধবার ইরানের সংসদে গৃহীত বিলে বলা হয়েছে , জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে ইরানের পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার কার্যক্রম দ্রুততর করা এবং অবিলম্বে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সংগে ইরানের সহযোগিতার নীতি সংশোধন করার ব্যাপারে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে । বিলটি গৃহীত হওয়ার পর ইরানের স্পীকার গোলাম আলী হাদ্দাদ আদেল বলেছেন , ২০৩জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৬১জন বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন । এ বিল সরকারের কাছে এ ক্ষমতা দিয়েছে যে, সরকার যেমন পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে পারবে , তেমনি আলোচনা চালানোর জন্যে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার কাঠামোতে থেকে যেতে পারবে । এ বিল গৃহীত হওয়ার পর পরই ইরানের সংবিধান তত্ত্বাবধান কমিটির অনুমোদন লাভ করেছে । প্রেসিডেন্ট আহমেদিনেজাদের অনুমোদন পেলে বিলটি ১৫ দিন পর কার্যকর হবে ।

    ইউরোপের জনমত এই যে, ইরানের সংসদের এ পদক্ষেপ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি সম্পর্কে ইরান সরকারের অনমনীয় প্রতিক্রিয়ার প্রতি সমর্থনস্বরূপ ।

    পরমাণু সমস্যায় ইরান আপোষ না করা এবং পিছ পা না হওয়ার যে অনমনীয় মনোভাব পোষণ করছে , তার পেছনে কয়েকটি কারণ আছে । প্রথমত ইরান সবসময় জোর দিয়ে বলে আসছে যে, শান্তিপূর্ণ লক্ষ্য নিয়ে ইরান তার পরমাণু কার্যক্রম গ্রহণ করেছে । ইরান বলেছে , যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা করে বলেছে যে, ইরান পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের অজুহাতে পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়ন করছে , তা নিজের স্বার্থের বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের একপেশী মনোভাব ও কুতসা ছাড়া কিছুই নয় ।

    আরো গুরুত্বপূণ বিষয় হচ্ছে এই যে, ইরানের শাসকরা মনে করেন যে , বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ইরানকে একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে একটি সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছে । এখন জ্বালানীর ঘাটতি ক্রমেই বিভিন্ন দেশের টেকসই উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে । এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে তেল উত্পাদন ও রফতানির বৃহত শক্তি হিসেবে ইরানের বহুমুখী শক্তি ও ভূরাজনৈতিক কাঠামোর ওপর তার প্রভাব লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়েছে । ইরানে রাশিয়ারও অত্যন্ত গুরুত্বপূণ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে । ইরানের সংগে ইইউ'রও ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে । ইরানের বিরুদ্ধে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে এ দেশগুলোর সংকোচ থাকতে পারে । যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের সমস্যায় সবচেয়ে সক্রিয় হলেও ইরাকে তার বিব্রতর অবস্থায় পড়ায় অনিচ্ছা থাকা সত্বেও ইরাক সমস্যায় ইরানের কাছে সাহায্য চাওয়ার আশা প্রকাশ করেছে । এ কথা অনস্বীকার্য যে , ইরানের অনমনীয় মনোভাব পরমাণু সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানকে কঠিন করে তুলেছে ।

    তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন , ১৭৩৭ নম্বর প্রস্তাবের আলোচনা ও গ্রহণের প্রক্রিয়া থেকে দেখা গেছে , বেশ কিছু মতভেদ থাকা সত্বেও পারমাণবিক অবিস্তার কাঠামো রক্ষা করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংকল্প অত্যন্ত দৃঢ । তাই ইরানের পরমাণু সমস্যায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোভাবও মোটামুটি কাছাকাছি রয়েছে । প্রস্তাবটি ইরানের কাছে একটি স্পষ্ট ও কঠোর সংকেত দিয়েছে যে , ইরানের উচিত আণবিক সংস্থা ও নিরাপত্তা পরিষদের দাবির প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা । নইলে ইরান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হবে ।