v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-26 16:44:44    
চীনের শহর রক্ষা বিশেষজ্ঞ রুয়ান ই সান

cri
    চীনে ভ্রমণ করার সময় কয়েকটি জায়গায় আপনাকে যেতেই হবে। যেমন উত্তর চীনের ফিং ইয়াও , দক্ষিণ চীনের চৌ চুয়াং। এই দুটি হলো চীনের পুরনো শহরের দৃষ্টান্ত। কিন্তু আপনি সম্ভবত জানেন না যে, এই দু'টি পুরনো শহর আগের মতো রয়েছে একজন পন্ডিতের অবদানে। তিনি হলেন "পুরনো শহরের সুরক্ষা সন্ত" রুয়ান ই সান।

    ৭২ বছর বয়স্ক রুয়ান ই সান হলেন থুংচি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, একই সঙ্গে তিনি চীনের ঐতিহাসিক সংস্কৃতি বিখ্যাত শহর গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান। তিনি চীনের সুবিখ্যাত "পৃথিবীর স্বর্গ" সুচৌ শহরে জন্ম গ্রহন করেন। এই শহরের উপর রুয়ান ই সানের ভালবাসা রয়েছে।

    রুয়ান ই সান ১৯৫৬ সালে শাংহাইয়ের থুং চি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ বিভাগে ভর্তি হন। পড়াশোনা শেষে তিনি স্কুলে থেকে গেছেন একজন শিক্ষক হিসেবে। বিংশ শতাব্দীর ষাট দশকে রুয়ান ই সান তার শিক্ষক তুং চিয়েন হুং'র সঙ্গে "চীনের শহরের নির্মান ইতিহাস" তৈরী করতে শুরু করেন। সরকারি তথ্য পাওয়ার জন্য তিনি প্রায় চীনের সকল শহরে গিয়েছিলেন। এসব সুন্দর শহর দেখে রুয়ান ই সান খুব মুগ্ধ হন। তিনি বলেছেন:

    "প্রতি বছর আমি ৩ ও ৪ মাস ধরে চীনের প্রায় সকল শহরে ঘুরে বেড়িয়েছি। আমি মনে করি চীনের শহর সত্যিই খুবই সুন্দর। শহরগুলো ঐতিহ্যিক এবং বৈশিষ্টময়। ষাট দশকে এসব শহরের অবস্থা খুব ভাল ছিলো।"

    কিন্তু আশির দশক থেকে চীনের সংস্কার ও উন্মুক্ত নীতি শুরু হয়। বিভিন্ন শহরের অবকাঠামো নির্মাণ বিরাট মাত্রায় চালু হয়। শহরের রূপ ও গঠন বিপুল পরিবর্তন ঘটে। পুরনো শহরের বৈশিষ্টতা আর দেখা যায় না। এই অবস্থা দেখে রুয়ান ই সানের খুব দুঃখ লাগে।

    এক দিন রুয়ান ই সান শান সি প্রদেশের ফিং ইয়াও পুরনো শহরে বেড়াতে যান। আগে তিনি অনেক বার সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই দিন তিনি দেখেছেন শহরের প্রাচীরের এক পাশে বিরাট একটি ছিদ্র হয়েছে। নতুন ভবন নির্মানের কারণে সারা শহর ধূলায় ভেসে যাচ্ছে। তখনকার অবস্থা স্মরণ করে তিনি বলেছেন:

    "তখন আশির দশকের প্রথম দিক। সারা শহরে নির্মান কাজ চলছিলো। ত্রিশটিরও বেশি মিং রাজবংশের ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে এবং একশ'টিরও বেশি ছিং রাজবংশের বাড়িঘর হাওয়া হয়ে গেছে।"

    তখন রুয়ান ই সান সিদ্ধান্ত নেন যে, পুরনো শহরগুলো সুরক্ষা করার জন্য কিছু কাজ করতেই হবে। তিনি কয়েক জন সহকর্মীর সঙ্গে ফিংইয়াও শহরের জন্য শহর পরিকল্পনার একটি প্রস্তাব তৈরী করেন। তার প্রস্তাবের মর্ম হলো: শহরটি নতুন ও পুরনো অংশে ভাগ করা, পুরনো অংশ রক্ষা করা এবং নতুন অংশ উন্নয়ন করা।

    ১৯৮৬ সালে ফিংইয়াও দেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক শহর হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে। ১৯৯৭ সালে তা বিশ্বের সংস্কৃতি পুরাকীর্তির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এই নিয়ে রুয়ান ই সান বলেছেন:

    "কিছু সুন্দর শহরের বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে আমার খুব দুঃখ লাগে। তাই আমি তাদের সুরক্ষা করার জন্য যাবতীয় প্রচেষ্টা শুরু করি। যে কোনো পদ্ধতিতে আমি দেশের মূল্যবান ঐতিহাসিক ধন রক্ষা করবো।"

    সম্প্রতি রুয়ান ই সান তার দৃষ্টি একটি অঞ্চল থেকে সারা দেশের উপর ফেলেছেন। কয়েক বছরের গবেষণা ভিত্তিতে তিনি পুরনো শহর সুরক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বই লিখেছেন। সাম্প্রতিক বছরের কাজ উপসংহার করে তিনি বলেছেন:

    "কয়েকটি জায়গার সুরক্ষা কাজের মধ্যে রয়েছে একটি জুদাহ অধ্যুষিত এলাকা। সেখানে প্রায় ৪০হাজার জন জুদা বসবাস করছিলেন। আমরা ওই জায়গার পাশে একটি পার্ক স্থাপন করেছি। পার্কে হত্যাকৃত জুদাদের স্মৃতি সৌঠ দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিন কেউ কেউ স্মৃতি সৌঠের সামনে ফুল রাখেন। এই জায়গা সুরক্ষা করলে আন্তর্জাতিক মৈত্রী রক্ষা করা যাবে।"