v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-26 15:30:22    
এশিয় দেশগুলো ভারত মহাসাগরের সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের দ্বিতীয় বার্ষিকী পালন করেছে

cri
    ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত মহাসাগরের ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছিল । এতে ১১টি দেশের ২ লাখ ২০ হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে । আজ শতাব্দি কালের এ প্রলয়ংকরী বিপর্যয়ের দু' বছর পার হয়েছে । তবুও বিপর্যয়গ্রস্ত এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এখনো এ বিশেষ দিনটিকে ভুলতে পারে না । এ দুর্যোগের দ্বিতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে এসব দেশ পর পর নানা ধরণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে । এ দেশগুলো যেমন নিহতদের স্মরণ করার জন্যে , তেমনি বিপর্যয়ের পর পুনর্গঠনের প্রত্যয় স্থাপন করার জন্যে এসব কার্যক্রমের আয়োজন করেছে ।

    ইন্দোনেশিয়া হচ্ছে দু' বছর আগে সংঘটিত সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে সবচেয়ে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। এ ভয়ানক বিপর্যয়ে এ দেশের নিহতের সংখ্যা মোট নিহতদের সংখ্যার দুই তৃতীয়ংশ ছিল । নিহতদের স্মরণ করা এবং সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের ছোবল থেকে নিজেদের রক্ষা করার সামর্থ্য বাড়ানোর জন্যে ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন স্থানে স্মরণমূলক কার্যক্রম ও মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে । ভারত ও শ্রীলংকায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ বিশেষ দিন পালন করা হয়েছে । এ ধরণের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ দুটো দেশের জনগণ বিপর্যয়ে নিহতদের স্মরণ করেছেন এবং পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যয় ও আস্থা ব্যক্ত করেছেন ।

    এশিয়ার যেসব দেশ এ অভূতপূর্ব জলোচ্ছ্বাসে কবলিত হয়েছিল , সেসব দেশে পর্যটন শিল্প সবচেয়ে আগেই পুনপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে । যেমন থাইল্যান্ডে ২০০৪ সালের সেই ভয়ংকর বিপর্যয়ের পর বিখ্যাত দর্শনীয় জায়গা ফুকেটের পর্যটন শিল্পের গুরুতর ক্ষতি হয়েছিল । পর্যটকদের সংখ্যা অর্ধেক কমে যায় এবং পর্যটন শিল্প থেকে পাওয়া আয় দুই তৃতীয়াংশে নেমে যায় । এখন সেখানকার অবস্থা অনেক ভালো হয়েছে ।

    পর্যটন শিল্পের পুনপ্রতিষ্ঠা থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে , হোটেল , যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যটকদের জন্যে সুবিধাজনক ব্যবস্থা মোটামুটি জলোচ্ছ্বাস ঘটার আগের মানে পৌঁছেছে । এতে প্রতীয়মাণ হয় যে , বিপর্যয়গ্রস্ত দেশগুলোর অবকাঠামোর পুননির্মাণের কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে । নতুন জলোচ্ছ্বাস নিবারণের ক্ষেত্রেও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ গবেষণামূলক কাজ চালাচ্ছে এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা করছে । এ মাসের গোড়ার দিকে ভারত মহাসাগরের প্রথম জলোচ্ছ্বাস সংক্রান্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা থাইল্যান্ডের ফুকেট সৈকতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে । ইন্দোনেশিয়া ও অন্যান্য দেশও বিভিন্ন সৈকতে সতর্কতামূলক যন্ত্র ও দ্রুত ফিরে আসার জন্যে নির্দেশক সাইনবোর্ডও বসিয়েছে ।

    অর্থনীতির পুনপ্রতিষ্ঠা ও নতুন বিপর্যয় এড়ানো ছাড়াও , সেই প্রলয়ংকরী দুর্যোগ থেকে যারা বেঁচেছিলেন , তাদের পুনর্বাসন করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব । সেই জলোচ্ছ্বাসের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অভূতপূর্ব আকারে ত্রাণ কাজ চালিয়েছে । বিভিন্ন দেশের প্রতিশ্রুত চাঁদা ১৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে । অথচ অনেক চাঁদার প্রতিশ্রুতি হয় এখনো বাস্তবায়িত হয় নি , নয় চাঁদাগুলো অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়েছে । ফলে যারা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন , এখনো তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারছে না ।

    ২০০৪ সালের সেই বিপর্যয়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ২০ লাখ লোক গৃহহারা হয়েছেন । দুই বছর পর কোনো কোনো লোক বিভিন্ন দেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাহায্যে নতুন বাড়িতে ওঠেছেন । অথচ এখনো অনেক লোক অস্থায়ী সরল বাড়িতে বসবাস করছেন । তারা আজও আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্যে অপেক্ষা করছেন । সম্প্রতি থাইল্যান্ডের গণ মাধ্যম জানিয়েছে , সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের জন্যে সাহায্য বাবদ পাওয়া চাঁদা ও পুনগঠন পুঁজির ৬০ শতাংশই অন্য কাজে ব্যবহার করা হয়েছে অথবা অপচয় হয়েছে । এ জন্যে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত পুনগঠন কাজকে আরো ফলপ্রসূ করে তোলা ।