v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-25 14:46:41    
ইরানের পরমাণু সমস্যা সংক্রান্ত লড়াই এক নতুন স্তরে প্রবেশ করেছে

cri
    গত শনিবার জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত ১৭৩৭ নম্বর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে । রাশিয়া , যুক্তরাষ্ট্র , চীন , ব্রিটেন , ফ্রান্স ও জার্মানী গত দুই মাস ধরে আলোচনা চালানোর পর এ প্রস্তাব গৃহীত হয় । ইরানের পারমাণবিক পরিকল্পনা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের এ সীমিত প্রস্তাবে ইরানের পরমাণু সমস্যায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিন্ন অভিমত ও দাবির প্রতিফলন ঘটেছে । প্রস্তাবটি ইরানকে একটি স্পষ্ট ও কঠোর সংকেত দিয়েছে । অথচ ইরান এ প্রস্তাবের প্রতি অনমনীয় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে । অপর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রও এ প্রস্তাবে এখনো সন্তুষ্ট হয় নি । এ অবস্থার প্রেক্ষাপটে ইরানের পরমাণু সমস্যায় বিভিন্ন পক্ষের লড়াই একটি নতুন স্তরে প্রবেশ করেছে । ইরানের পরমাণু সমস্যার ভবিষ্যত সম্ভাবনা কি হবে , কেউই বলতে পারেন না । এ সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান তো আরো সুদূরপরাহত ।

    গত ২৪ অক্টোবর ব্রিটেন , ফ্রান্স ও জার্মানী জাতি সংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এ প্রস্তাবের প্রথম অনানুষ্ঠানিক খসড়া উত্থাপন করে । এ খসড়া প্রস্তাব সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে বিরাট মতভেদ ছিল । যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে , নিষেধাজ্ঞা আরোপের সমস্যায় খসড়া প্রস্তাবটি তত কঠোর ছিল না । অপর পক্ষে রাশিয়া মনে করে যে , নিষেধাজ্ঞা ইরানের পরমাণু সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে অনুকূল ছিল না এবং খসড়া প্রস্তাবটি সংশোধনের জোর দাবি জানায় । তাই রাশিয়া , যুক্তরাষ্ট্র, চীন , ব্রিটেন , ফ্রান্স ও জার্মানী খসড়া প্রস্তাবটির বিষয়বস্তু নিয়ে ঘন ঘন আলোচনা করেছে । গত শনিবার প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার আগে চার চারবার সংশোধন করা হয়েছে । ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের তীব্রতা , বাণিজ্যিক অবরোধের পরিসর , রাশিয়ার সাহায্যে নির্মিত বুশের পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র ইরানের সংশ্লিষ্ট লোকজনের বিরুদ্ধে পর্যটনের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল প্রভৃতি সমস্যায় পশ্চিমা দেশগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন করেছে । তাছাড়া পশ্চিমা দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে ইরানের পরমাণু সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি প্রস্তাবটিতে লিপিবদ্ধ করার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে ।

    ইরান ১৭৩৭ নম্বর প্রস্তাবের প্রতি কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে । শনিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে , ইরানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব গ্রহণ একটি বেআইনী কার্যকলাপ । ইরান নিরাপত্তা পরিষদের এ অকার্যকর প্রস্তাব মেনে নেবে না । ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমেদিনেজাদ রোববার বলেছেন , ইরানী জনগণ নিরাপত্তা পরিষদের এ প্রস্তাবকে ভয় করেন না । ইরান তার পারমাণিবিক পরিকল্পনা সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে । তিনি আরো বলেন , পশ্চিমা দেশগুলো পারমাণবিক প্রযুক্তি আয়ত্তকারী ইরানের সংগে শান্তিপূর্ণভাবে সহঅবস্থান করতে শিখলে ভালো হয় । একই দিন ইরানের সংসদ সরকারের কাছে আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার সংগে সহযোগিতা এবং " পারমাণিবিক অস্ত্রের বিস্তার না করা সংক্রান্ত চুক্তি" থেকে সরে যাওয়ার বিষয় পুনরায় বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছে ।

    ইউরোপের জনমত মনে করে যে , ইরানের শাসকরা এখন তাদের আয়ত্ত করা পারমাণবিক প্রযুক্তিকে পশ্চিমা জগতের সামরিক হুমকী ও রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলার একটি কার্যকরী অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছেন । তারা মনে করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইরাকে যে বিব্রত অবস্থায় রয়েছে , তা ইরানের পারমাণবিক পরিকল্পনা উন্নয়নের জন্যে একটি সুবর্ণ সযোগ এনে দিয়েছে । বর্তমানে ইরানে রাজনৈতিক নেতা থেকে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সবাই পরমাণু সমস্যায় অভূতপূর্বভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন । এমন অবস্থায় ইরান কোনোমতেই পিছ পা হতে প্রস্তুত নয় ।

    যুক্তরাষ্ট্র ১৭৩৭ নম্বর প্রস্তাবে স্পষ্টতই সন্তুষ্ট নয় । যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিকোলাস বার্নস বলেছেন , ইরানীদের জানিয়ে দিতে হবে যে , পারমাণবিক পরিকল্পনায় অটল থাকলে তাদের বিরাট ত্যাগ স্বীকার করতে হবে । যুক্তরাষ্ট্র আশা করে যে , এ প্রস্তাব ইরানের বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পথ সুগম করবে ।

    ইউরোপের জনমত মনে করে যে, ১৭৩৭ নম্বর প্রস্তাব সবেমাত্র গৃহীত হয়েছে । ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন এক দফা লড়াই আবার শুরু হয়েছে । ইরান এখনো অনমনীয় মনোভাব পোষণ করছে । এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র খুব সম্ভবত ইরানের বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবরোধ আরোপের প্রচেষ্টা চালাবে । এমন ব্যবস্থা নেয়া হলে ইরান পুনরায় প্রতিরোধের তত্পরতা চালাবে । এতে ইরানের পরমাণু সমস্যায় বিভিন্ন পক্ষের মধ্যকার মতভেদ আরো প্রকট হয়ে ওঠবে ।