এশীয় গেমসের আয়োজন লোকসংখ্যা ৮লাখের কাতারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি হল আরব দেশে অনুষ্ঠিত প্রথম এশীয় গেমস। আরো গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল কাতার আশা করে দোহা এশীয় গেমসের মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে নিজস্ব পরিদর্শন করা এবং ২০১৬ সাল গ্রীষ্ম অলিম্পিক গেমসের আয়োজন আবেদনের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা। সাফলভাবে এশীয় গেমস আয়োজনের আবেদন করার পর কাতার সরকার বিভিন্ন প্রস্তুতি কাজ করতে থাকে। গত পাঁচ বছরে দোহা বহু পরিবর্তন ঘটেছে। দোহা এশীয় গেমস দোহা ও দোহার জনগণের জীবন যাত্রায় কি প্রভাব ফেলেছে?
কাতার পার্সিয়ান উপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম তীরের কাতার উপদ্বীপে অবস্থিত। কাতারের রাজধানী দোহা হল পার্সিয়ান উপসাগরের একটি বিখ্যাত্ বন্দর। আগে কাতার শুরু একটি ছোট নগর। কাতারের তেল শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দোহা একটি সমৃদ্ধি শহর পরিণত হয়েছে।
দোহা এশীয় গেমসের সাফল আয়োজনের মাধ্যমে দোহায় আরো গভীর পরিবর্তন ঘটেছে। হাস্সান আল-আলি একজন দোহার নাগরিক। যদিও গত কয়েক বছরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করেন, তবে প্রতি তিন মাস তিনি একবার দোহায় ফিরে যান। তিনি বলেছেন, যদিও শুরু প্রতি তিন মাস তিনি একবার দোহায় ফিরে যান, তবে প্রতিবার দোহায় পরিবর্তন দেয়া যায়। তিনি বলেছেন, 'আমি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে লেখাপড়ার পর, প্রতিবার দোহায় ফিরে গিয়ে আমি দোহার পরিবর্তন দেখতে পারি। যেমন, গত বার আমি দোহায় ভিয়াডাক্ট(visduct), টেনেল(tunnel) ও হাইওয়ে দেখেছি। এমনকি বিমান বন্দরেও বহু পরিবর্তন ঘটেছে। দোহা পরিবর্তন ঘটে থাকছে। সরকার দোহা অন্যান্য আন্তর্জাতিক শহরের মত নির্মাণের জন্য প্রতি বছরে অবকাঠামো নির্মাণে প্রচুর খরচ দেয়।'
তিনি বলেছেন, দোহা এশীয় গেমস দোহা নাগরিকদের জীবন যাত্রায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। দোহা এশীয় গেমসের সময়ে তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এশীয় গেমসের প্রতিযোগিতা দেখা এবং স্বদেশের খেলোয়াড়দেরকে সমর্থন করা। এশীয় গেমস কাতার নাগরিকদের জীবন যাত্রা সমৃদ্ধ করেছে। এখন দোহা নাগরিকরা নতুন ব্যাপক স্টেডিয়ামে বিয্যাম করতে পারেন। তিনি বলেছেন, 'এশীয় গেমস প্রতি দোহা নাগরিকের জীবন যাত্রায় প্রভাব ফেলেছে। এমনকি শিশু। এখন তারা পাজার ও সিনেমায় যায় না, তারা নতুন স্টেডিয়ামে খেলে। বহু যুবক নতুন স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা পছন্দ করে।'
দোহার লোকসংখ্যা শুধু ৬লাখ, একটি খুবই ছোট শহর। এর আগে কোনো মানুষ উদ্বেগ রয়েছে যে, এশীয় গেমসের সময়ে বাড়ানো লোকসংখ্যা দোহার পরিবহন ও পরিসেবার ওপর চাপ দেয়া হবে। কিন্তু হাস্সান আল-আলি মনে করেন, কোনো অসুবিধা হয় নি। তিনি বলেছেন, 'কাতারের লোকসংখ্যা শুধু ৮.৪লাখ। সেজন্য এশীয় গেমসের সময়ে বেশি বিদেশী লোক কাতারে আসা কষ্ট দেয় নি। দোহার পরিবহন পেইচিং ও সাংহাই'র মত বেশি জ্যাম নেয়। যদি সবসময় ছোট জ্যাম হয়, তবুও বেশি প্রভাব ফেলে না।'
এশীয় গেমস আয়োজনে দোহা নাগরিকরা গর্বিত লাগে। তাছাড়াও এশীয় গেমস তাঁদেরকে ধনসম্পদ এনে দিয়েছে। বিশেষ করে হোটেলের ব্যবসা খুবই ভাল। দোহার একটি হোটেলের একজন ওয়েটার সংবাদদাতাদের কাছে বলেছেন, এশীয় গেমসের সময়ে এ হোটেলের ব্যবসা খুবই ভাল। তিনি বলেছেন, 'এশীয় গেমসের আয়োজন আমার দেশের মার্যাদা এবং আমাদেরকে অসংখ্য সুযোগ এনে দিয়েছে। এশীয় গেমসের সময়ে আমাদের হোটেলের ব্যবসা খুবই ভাল, আয় আগের চেয়ে বিগুণ হয়েছে।'
এশীয় গেমসের আয়োজনের মাধ্যমে দোহা শহর আরো আন্তর্জাতিকমূলক হয়েছে। কিন্তু দোহা নাগরিকরা শুধু যে এবার সবচেয়ে ভাল এশীয় গেমস আয়োজন তা নয়, তাঁরা এবারের এশীয় গেমস একবার অনুশীলন হিসেবে ২০১৬ সাল অলিম্পিক গেমসের আয়োজন করতে চান। কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও দোহা এশীয় গেমসের সাংগঠনিক কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ বিন হামাদ আল-আত্তিয়া বলেছেন, কাতার দোহা এশীয় গেমসের মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে দেখায় যে, কাতার শুধু যে এশীয় গেমস আয়োজন করতে পারে তা নয়, কাতারের অলিম্পিক গেমস সাংগঠন ও আয়োজনের সামর্থ্য আছে। কাতার ২০১৬ সাল গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস আয়োজনের আবেদন করেছে।
|