v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-22 19:36:52    
মোস্তাক আহমেদ গালিবের দেয়া সাক্ষাত্কার

cri
    প্রশ্নঃ আমরা জানতে পেরেছি প্রথম বিদেশী হিসেবে আপনি প্রথম চীনে গোল্ড মেডেল পেয়েছেন। কি জন্য পেয়েছেন?

    উঃ আমি যে পদকটি পেয়েছি তার নাম হচ্ছে শ্রেষ্ঠ যুবক পদক। এই পদকটি পাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। উল্লেখ্যযোগ্য কারণগুলো আমি আপনাকে বলছি। আমার একটা স্কুল আছে। এর নাম হচ্ছে ভালবাসার স্কুল। এই স্কুল থেকে লিউকোমিয়ার আক্রান্ত গরীব শিশুদের সাহায্য করা হয়। এছাড়া আমি কিছু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি এখানে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, চার তলা থেকে পড়ে যাওয়া একটি ইয়েমেনী শিশুর জীবন বাঁচিয়েছি। এছাড়া ইস্টলেকে আত্মহত্যা করতে যাওয়া এক মহিলার জীবন আমি বাঁচাই। আমার এই কর্মকান্ডে প্রাদেশিক সরকার খুব খুশি হয় এবং আমাকে পুরষ্কার দেয়ার উদ্যোগ নেয়। এরপর আমি লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত একটি চীনা শিশুর জীবন বাঁচাতে অর্থ সংগ্রহ করি এবং তাকে সুস্থ করে তুলি।

    প্রশ্নঃ আপনি যে বললেন, লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে সাহায্য করেছেন। আপনার এই প্রজেক্টর বর্তমান অবস্থা কি একটু বলবেন আমাদের?

    উঃ আমাদের ভালবাসার স্কুল চার বছরে পা দিয়েছে। এখানে এখন প্রায় দু'শ স্বেচ্ছাসেবী রয়েছে। আমাদের এই স্কুল পুরো উহান শহরে সাড়া জাগিয়েছে। শুধু উহানই নয়। সারা চীনে এই স্কুল খুব পরিচিত। যেখানে শুধুমাত্র লিউকোমিয়ায় আক্রান্তদের সাহায্য করা হয়।

    প্রশ্নঃ আপনি যে বলছেন, আপনার প্রায় দু'শ স্বেচ্ছাসেবী রয়েছে। এরা আসলে কারা?

    উঃ স্বেচ্ছাসেবীরা সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। তারা কোন অর্থের বিনিময়ে নয়, ভালবাসার কারণেই স্বেচ্ছাসেবী হয়েছেন।

    প্রশ্নঃ আপনার এই ভালোবাসা স্কুলের ফান্ড আসে কিভাবে?

    উঃ আমি শ্রেষ্ঠ যুবকের পদক পাওয়ার পর বিভিন্ন মিডিয়া আমার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে। তারা ইন্টারভিউ, ফিচার করতে চায়। তখন আমি তাদের শর্ত দেই যে, তাহলে লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত একটি শিশু নিয়েও রিপোর্ট করতে হবে। তখন তারা রাজি হয় এবং আমরা ফাণ্ড সংগ্রহ শুরু করি। শিশুটি ৩ বছর বয়স থেকে লিউকোমিয়া আক্রান্ত। এখন বয়স ১৫। ১২ বছর চিকিত্সা করতে গিয়ে শিশুটির পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তারা শিশুটির মৃত্যু প্রত্যাশা করে। তখন আমি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই। আমি শুরুর দিকে তেমন সাড়া পাই নি। পরে পুরো উহানের জনগণ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে এবং ৬০ হাজার ইউয়ান সংগ্রহ করি।

    প্রশ্নঃ এই শিশুটির এখন কী অবস্থা?

    উঃ শিশুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। প্রতিদিন সে ২ ঘন্টা করে টেনিস খেলে। আমার সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়।

    প্রশ্নঃ আপনিতো "ভালবাসার স্কুল" থেকে মাত্র একটি শিশুকে সাহায্য করেছেন। আপনাদের কী এমন কোন পরিকল্পনা আছে যে বিওবানদের সহায়তায় আরও অসহায় শিশুদের সাহায্য করা?

    উঃ শুধুমাত্র যারা নিরাশ, হতাশ তাদের আমরা সহযোগিতা করবো। এই একটি শিশুকে আমরা ভাল করে তুলেছি। এখন অন্য একটি শিশুকে সাহায্য শুরু করবো।

    প্রশ্নঃ এবার একটু অন্য প্রসঙ্গ। আপনিতো চীনে এসেছেন ৫ বছর। এই পাঁচ বছরে আপনি চীনে কী পরিবর্তন দেখেছেন? চীন সম্পর্কে আপনার অনুভুতি কী?

    উঃ পাঁচ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনীতি , শিক্ষা, সংস্কৃতি সবদিকেই চীনের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।

    প্রশ্নঃ চীনে আপনার কেমন লাগছে?

    উঃ বসবাসের জন্য চীন খুব চমত্কার জায়গা। শুধুমাত্র ঈদ, স্বাধীনতা দিবস বা অন্যান্য অনুষ্ঠানের সময় দেশের কথা খুব মনে পড়ে। এছাড়া অন্যান্য সময় দেশের মতোই মনে হয়।

    প্রশ্নঃ এখানে ইউনিভাসিটিগুলো সম্পর্কে আপনার ধারনা কী? পড়াশুনার মান কেমন?

    উঃ এখানের ইউনিভার্সিটির লেখাপড়ার মান খুব ভাল। শিক্ষাঙ্গনে কোন প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ। বাংলাদেশে যেসব সংঘর্ষ হয়, এখানে সেরকম কোন সুযোগ নেই। ছাত্ররা পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।

    প্রশ্নঃ চীনও একটি উন্নয়নশীল দেশ। এখানেও গরীব লোক আছে। তাদের উন্নয়নে কী আপনাদের কোন পরিকল্পনা আছে?

    উঃ দরিদ্র মানুষদের জন্য কিছু একটা করার পরিকল্পনা আমার আছে। কিছুদিন আগে আমি নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের সঙ্গে বেইজিংয়ে বৈঠক করি। তার সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। প্রথমে আমরা উহানের ভিক্ষুকদের নিয়ে কাজ করতে চাই। তাদের আমরা লোন দিব। এই লোন দিয়ে তারা যেখানে বসে তারা ভিক্ষা করে কিংবা সাবওয়েতে পত্রিকা বিক্রি করবে।

    প্রশ্নঃ এতবড় একটি জাতি। ১৩০ কোটি লোক। তারপরও তারা ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আপনি কী মনে করেন এই অনুপ্রেলনা নিয়ে আমরা ভাল কিছু করতে পারি।

    উঃ চীনাদের কাছে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। বলা হয়, বাংলাদেশে অনেক লোক। কিন্তু চীনের কাছে কিছু নয়। বাংলাদেশ যদি ঘুষ, দুর্নীতি দূর করে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে তাহলে আমার মনে বাংলাদেশও এগিয়ে যেতে পারবে।

    প্রশ্নঃ আপনাকে শেষ প্রশ্ন। বাংলাদেশ থেকে যেসব ছাত্রছাত্রী এখানে পড়তে আসে তাদের জন্য কোন সাজেশন আছে?

    উঃ যারা এখানে পড়তে আসে তাদের প্রথমত চীনের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। চীনে সভ্যতার বিকাশ হয়েছে বহুকাল আগে। এখানে আসলে ভাষা জানাটা জরুরী। ভাষা না জানলে যোগাযোগ করাটা কঠিন। বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে মনে রাখতে হবে।