১৭ ডিসেম্বর থেকে ' মৈত্রী---২০০৬' নামে চীন-পাকিস্তান সন্ত্রাস দমন যৌথসামরিক মহড়া শুরু হয়েছে। এবারের যৌথ সামরিক মহড়ার শিরোনাম হল: " পহাড়ী এলাকায় সন্ত্রাস দমনে যৌথ লড়াই" । পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আবোটাবাদ এলাকায় এবারের যৌথ সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। দু' দেশের সামরিক সুত্র জানিয়েছে. মিলিতবাবে সন্ত্রাস দমন করা, অ-ঐতিহ্যিক নিরাপত্তা ক্ষেত্রে চীন আর পাকিস্তানের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করা, এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা এবারের যৌথ সামরিক মহড়ার প্রধান উদ্দেশ্য।
২০০৬ সালের শেষ দিকে , এক দল আন্তদের্শীয় সন্ত্রাসবাদী চীন-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় দু' দেশের সহযোগিতায় অনুসন্ধান প্রকল্প এবং প্রকৌশলীদের উপর সন্ত্রাসী তত্পরতা চালানোর অপচেষ্টা করেছে। এ উপলক্ষ্যে দু'দেশের সরকার সন্ত্রাস দমনের অবস্থান ও উদ্দেশ্য পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়।
সন্ত্রাসবাদীদের অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়ার জন্য দু'দেশ চার শোরও বেশী সদস্য নিয়ে একটি যৌথ সন্ত্রাস দমন বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যৌথ বাহিনীর কতর্ব্য হল , সিমান্ত অঞ্চলে সন্ত্রাস দমনের যৌথ সামরিক মহড়া চালানো এবং সন্ত্রাসবাদীদের নিমূর্ল করা । ১৭ ডিসেম্বর সকালে যৌথ বাহিনী একটি লড়াই পরিচালনা কেন্দ্র গঠন করেছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরিচালনা কেন্দ্রের পাঠানো এক শো সৈন্যকে সন্ত্রাসবাদীদের গোলাবারুদ, লজিসটিক সামগ্রী পাঠানোর প্রধান প্রধান রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা স্থাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পেইচিং সময় বিকাল ৫টায় চীন পক্ষের পরিচালকের নির্দেশে দু'পক্ষের সামরিক অফিসার ও সৈন্যরা যৌথভাবে চেক করার মহড়া শুরু করল।
এগারো বারো মিনিটের মধ্যে প্রতিবন্ধিকতা স্থাপিত হয়েছে। তার পর দু'দেশের সৈন্যরা চলাচলকারী মানুষ ও গাড়ীগুলো কড়াকড়িভাবে চেক করতে শুরু করল। কিছু ক্ষণ পর, স্থানীয় কাপড় পরা একজন মধ্য বয়সী পুরুষ সৈন্যদের হুঁশিয়ারী উপেক্ষা করে প্রতিবন্ধিকতা অতিক্রম করতে অপচেষ্টা করেছে। সৈন্যরা সঙ্গে সঙ্গে এই লোককে গুলি করে মেরে ফেলেছে।
চেক করার পর দেখা গেলো, এই লোকের গায়ে বিস্ফোরক ছিল। অবর্শেষে নিকটর্বতী মালভূমিতে এই বিস্ফোরক বিস্ফোরিত করে দেওয়া হয়েছে।
মহড়ার শেষে, কয়েক জন সন্ত্রাসবাদী একটি গাড়ী চালিয়ে প্রতিবন্ধিকতা অতিক্রম করার অপচেষ্টা করেছে। চীন আর পাকিস্তানের সৈন্যরা এ সব সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে তীব্র লড়াই করতে শুরু করল। অবশেষে সন্ত্রাসবাদীরা হয় ধরা পড়েছে নয় গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। সামরিক মহড়া ইতিমধ্যে শেষ হল।
জানা গেছে, ১১ ডিসেম্বর থেকে এ আট দিনব্যাপী সামরিক মহড়া শুরু হয়। এ মহড়া শুরু হওয়ার আগে, দু'পক্ষের মধ্যে অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শনী ও কৌশল প্রশিক্ষণের বিনিময় হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাস দমন যৌথ মহড়ার শেষ দিন হবে। দু'দেশের সেবাবাহিনীর মধ্যে যৌথভাবে অবরোধ স্থাপনের মহড়া চালানো হবে। এ প্রসঙ্গে মহড়ায় অংশ গ্রহণকারী পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান পরিচালক জেনারেল ওয়াজিড বলেছেন,
দু'দেশ ও দুই সেনাবাহিনীর মধ্যকার মৈত্রী ও সহযোগিতা সুসংবদ্ধ আর গভীররত করা এবং দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে পাহড়ী অঞ্চলে সন্ত্রাস দমন লড়াই সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা এবারের যৌথ সামরিক মহড়ার প্রধান উদ্দেশ্য।
জানা গেছে, চীন আর পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এবার যৌথ সামরিক মহড়া পালিত হয়। সন্ত্রাস দমন ক্ষেত্রে দু'দেশের সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার জন্যে এবারের যৌথ সামরিক মহড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
|