v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-15 18:31:33    
জাতিসংঘের মহাসচিবের স্মরণীয় ক্ষণ

cri

  ৬১তম জাতিসংঘের সাধারণ সভা ১৩ ডিসেম্বর পূর্ণাংগ অধিবেশনের আয়োজন করেছে। অধিবেশনে হাততালির মাধ্যমে জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। তিনি কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর কার্যমেয়াদ শেষ করে বিদায় নেবেন। জাতিসংঘের সাধারণ সভার বর্তমান চেয়ারম্যান হায়া রশিদ আল খালিফার পরিচালনায় পরবর্তী মহাসচিব বান কি-মোনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 জাতিসংঘের সাধারণ সভা হলের সভাপতিমন্ডলীর মঞ্চে বান কি মোন তাঁর বাম হাত উপরে "জাতিসংঘের সনদে" রেখে, ডান হাত তুলে দৃঢ়কণ্ঠে শপথ গ্রহণ করেছেন। শপথ ভাষণে তিনি বলেছেন, আমি বান কি মোন দৃঢ়কণ্ঠে শপথ করি, সমস্ত প্রত্যয়, সযত্ন ও ন্যায়পরতা নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করবো। জাতিসংঘের স্বার্থ হচ্ছে আমার দায়িত্ব পালন ও কার্যকলাপে সিদ্ধান্ত নেয়ার মূলনীতি । দায়িত্ব পালনের সময় আমি কোনো সরকার বা জাতিসংঘের বাইরের কোনো কর্তৃপক্ষের নির্দেশ গ্রহণ করবো না।"

 বান কি মোন জাতিসংঘের মহাসচিব নিয়োগ প্রাপ্ত হওয়ার পর দুটি বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবেন। এক দিকে, সাবেক মহাসচিবের হাতের পুরোনো সমস্যাগুলো বহাল থাকবে, এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সমস্যা, মধ্য প্রাচ্য সমস্যা, কোরিয় উপদ্বীপের পারমাণবিক সমস্যা ও ইরানের পারমাণবিক সমস্যা ইত্যাদি। অন্য দিকে, জাতিসংঘের কাঠামোতে একজন নতুন মহাসচিবের পক্ষে কিভাবে যথা শীঘ্রই নেতৃত্বের খ্যাতি স্থাপন করা আরো গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এ বছরের অক্টোবরে জাতিসংঘের সাধারণ সভা আনুষ্ঠানিকভাবে বান কি মোনকে মহাসচিব পদে নিয়োগ অনুমোদনের পর তিনি নানা সুযোগে স্পষ্টভাবে বলেছেন, তিনি অব্যাহতভাবে জাতিসংঘের সচিবালয়ের সংস্কার ত্বরান্বিত করবেন, সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্কের পুনর্মিলন ঘটাবেন, পারস্পরিক আস্থা পুনর্বার প্রতিষ্ঠা করবেন এবং জাতিসংঘের কার্যকর দক্ষতা বাড়াবেন। এর মধ্যে তিনি জাতিসংঘের কাঠামোর সংস্কারকে অগ্রাধিকার দেবেন। শপথ গ্রহণের পর দেয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি বলেছেন, "আমি আপনাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করবো, জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের পেশাগত মান ও দায়িত্ববোধকে উন্নীত করবো। যাতে এভাবে জাতিসংঘ আরো ভালভাবে সদস্য দেশগুলোর জন্য পরিসেবা করা এবং জাতিসংঘের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা পুনরুদ্ধার করা যায়। "

 শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে জাতিসংঘের সাধারণ সভার চেয়ারম্যান আল-খালিফা ও এই সংস্থার বিভিন্ন অঞ্চলের চেয়ারম্যানগণ পরপর ভাষণ দিয়েছেন। তাঁরা আনানের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং বান কি মোনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করার কথা ঘোষণা করেছেন। ৭৭টি রাষ্ট্র গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান, জাতিসংঘস্থ দক্ষিণ আফ্রিকার স্থায়ী প্রতিনিধি দুমিসানি শাদরাক কুমালো৭৭টি রাষ্ট্র গোষ্ঠী ও চীনের পক্ষ থেকে ভাষণে বলেছেন, "কফি আনানের প্রচেষ্টায় বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার মানসিকতার উপর আরো বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তিনি দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার ফ্রন্টে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সবচেয়ে কষ্টকর সময় তিনি অবিচলিতভাবে বহুপক্ষীয়বাদী ব্যবস্থাকে রক্ষা করেছেন।"

 এর উত্তরে তাঁর ভাষণে আনান বলেছেন, গত দশ বছর জাতিসংঘ নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, কিন্তু অনেক গর্বিত সফলতাও অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, "বিদায় নেয়ার সময় আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বর্তমানে জাতিসংঘের কাজগুলো আগেকার যে কোনো সময়ের চেয়েও বেশি ও ভালো। কিন্তু জাতিসংঘের কাজ এখনো শেষ হয় নি, এবং কখনো শেষ হবে না।"

 আনান ভাষণ দেয়ার পর সম্মেলনে উপস্থিত ১৯২টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা সবাই দাঁড়িয়ে দীর্ঘকাল ধরে হাততালির মাধ্যমে আনানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছেন।

 পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর আনানের কার্যমেয়াদ শেষ হওয়ার পর অর্থাত্ ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারী থেকে বান কি মোন আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের মহাসচিবের পদের দায়িত্ব লাভ করবেন।