v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-13 19:19:05    
ওলমার্টের ভাষণ সমস্যার সৃষ্টি করেছে(ছবি)

cri

    ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ইহুদ ওলমার্ট ১১ ডিসেম্বর সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে ইসরাইলকে পরমাণু অস্ত্রধারী দেশগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। গত অর্ধেক শতাব্দি ধরে তিনি ইসরাইলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী , যিনি প্রথম বারের মতো ইসরাইলের পরমাণু অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করেছেন । এই খবর প্রচারিত হওয়ার পর ইসরাইলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে । বিভিন্ন বড় সংবাদ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর এবারের বক্তব্য ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে । বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ ওলমার্টের পদত্যাগ দাবি করেছেন । ফলে ওলমার্ট আরেকবার রাজনৈতিক সংকটে পড়েছেন ।

    জার্মানীর উপগ্রহ এক নং টেলিভিশনে ওলমার্টের এই সাক্ষাত্কার প্রচার হওয়ার ফলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে । ইরানের পরমাণু সমস্যা প্রসঙ্গে ওলমার্ট ইংরেজীতে বলেছেন , ইসরাইল কখনো কোনো দেশকে নিশ্চিহ্ন করার হুমকী দেয় নি । কিন্তু ইরান স্পষ্টভাষায় ইসরাইলকে মানচিত্র থেকে মুছে দেয়ার হুমকী দিয়েছে । ইরান এত আগ্রহের সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র দখলের ইচ্ছা যে প্রকাশ করেছে , ফ্রান্স , যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইসরাইলের ওপর তা হুমকী নয় ?

    সাক্ষাত্কার প্রচারিত হওয়ার পর ওলমার্টের সহকারীরা তাঁর বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন । ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে , ওলমার্টের বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে বিকৃত করা হয়েছে । ১২ ডিসেম্বর জার্মানীর চ্যান্সেলার এঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক যুক্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে ইসরাইল প্রথমে মধ্যপ্রাচ্যে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে না বলে ওলমার্ট তিনবার জোরালোভাবে উল্লেখ করেছেন । তিনি আরো জোর দিয়ে বলেছেন , সাক্ষাত্কারে তার বক্তব্য পরমাণু অস্ত্রের ক্ষেত্রে ইসরাইলের অনুসৃত নীতি লংঘন করে নি ।

     কিন্তু বিভিন্ন বড় সংবাদ মাধ্যম মনে করে যে , ওলমার্টের বক্তব্য ইসরাইলের পরমাণু অস্ত্রথাকার ইঙ্গিত দিয়েছে । দীর্ঘকাল ধরে ইসরাইল পরমাণু অস্ত্র থাকার কথা অস্বীকার করার পাশাপাশি পরমাণু অস্ত্র না থাকার কথাও বলে নি । এর উদ্দেশ্য শত্রু দেশগুলোকে ভয় দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে এই অঞ্চলের অস্ত্র প্রতিযোগিতা ঠেকানো । যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্য দেশগুলোও ইসরাইলের এই নীতির স্বীকৃতি দিয়েছে । এ ব্যাপারে ইসরাইল যদি নীরবতা অবলম্বন করে , তাহলে এই সব দেশ পরমাণুর দিক থেকে ইসরাইলের ওপর শাস্তি প্রয়োগ করবে না । কিন্তু ইসরাইল সত্যি পরমাণু অস্ত্রাধারীএকটি দেশ হয়ে দাঁড়িয়েছে । বিশ্লেষকরা মনে করেন যে , গত শতাব্দির ষাটের দশক থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইল ৮০ থেকে ২ শো পরমাণু অস্ত্রের ওয়ার্হেড তৈরী করেছে । ওলমার্ট এবারের বক্তব্য প্রকাশ করার কয়েক দিন আগে নতুন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট গেটস্ মার্কিন কংগ্রেসের সিনেটেও অনুরূপ তথ্য প্রকাশ করেছেন । তিনি ইরানের পরমাণু অস্ত্র বিকাশের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে বলেছেন , ইরান ইসরাইলসহ পরমাণু দেশগুলো দ্বারা বেষ্টিত ।

    যদিও বেশির ভাগ সংবাদ মাধ্যম ও বিশ্লেষকরা মনে করেন যে , ওলমার্ট অসাবধানে এই বক্তব্য প্রকাশ করেছেন । কিন্তু কেউ কেউ মনে করেন যে , ওলমার্ট ইচ্ছাকৃতভাবে এই বক্তব্য প্রকাশ করেছেন । ইসরাইলের ইয়েদিউথ পত্রিকার একটি ভাষ্যে বলা হয়েছে যে , ওলমার্ট পাশ্চাত্য দেশগুলোর কাছে এই সতর্কতা পাঠিয়েছেন যে , যদি ইরানের পরমাণু অস্ত্র বিকাশের কর্মসূচী রোধ করার জন্য তারা ব্যবস্থা না নেয় , তাহলে ইসরাইল একতরফা ব্যবস্থা নেবে ।

    বেশ কয়েকটি আরব দেশ ওলমার্টের বক্তব্যের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া প্রদান করেছে । তারা যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব সম্প্রদায়কে ইসরাইলের ওপর শাস্তি প্রয়োগের আহবান জানিয়েছে । উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সহযোগিতা কমিটির মহাসচিব আবদুল রহমান আল-আতিয়াহ্ ১২ ডিসেম্বর বলেছেন , যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু বিষয়ে দ্বৈত মানদন্ড গ্রহণ করা উচিত নয় । তিনি আরো বলেছেন , বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত ওলমার্টের বক্তব্যকে বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর হুমকী স্বরূপ বলে মনে করা ।