v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-12 20:40:48    
লেখক ওয়াং শু চেং

cri
    ওয়াং শু চেং হলেন চীনের একজন খুব বিখ্যাত সামরিক বিষয়ক লেখক। ৬ বছরের চেষ্টার পর তিনি "লং মার্চ" নামে একটি বই লিখেছেন। আজকের অনুষ্ঠানে ওয়াং শু চেং এবং তার বই "লং মার্চ" সম্পর্কিত গল্প আপনাদের শোনাবো।

    ৫৪ বছর বয়স্ক ওয়াং শু চেং খুব লম্বা। তিনি সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর ধরে পরিসেবার কাজ করেছেন। তার লেখা নাট্য চীনের নাটক ক্ষেত্রের সর্বোচ্চ পুরষ্কার-     "ছাও ইয়ু" পুরষ্কার পেয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার লেখা "১৯০১" ও "দূর-প্রাচ্যের উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধ" বই দুটি পর্যবেক্ষকদের আন্তরিক দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে। তার লেখায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জীবন্ত হয়ে উঠেছে সত্যিকারের ইতিহাস। এসব লেখা পাঠকদের চোখের সামনে তুলে ধরেছে ঘটনাবহুল জীবন ধারাকে।

    সেনাবাহিনীতে পরিসেবার ফলে ওয়াং শু চেং আরো উদারপন্থী হয়েছেন। যাতে মন দিয়ে "লং মার্চ" লিখতে পারেন এ জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেছেন, সারা জীবনে তিনি শুধু দুটি কাজ করতে পারেন, তা হলো সেনাবাহিনীতে পরিসেবা করা এবং বই লেখা। এই দুটি কাজ সম্পর্কে তিনি বলেছেন:

    "সেনাবাহিনীতে পরিসেবার সময় আমি চীনের প্রায় সকল জায়গায় গিয়েছি। এর ফলে আমি চীনের সমাজ ও পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো বেশি জেনেছি এবং তার সঙ্গে আমার আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এই অভিজ্ঞতা আমার হৃদয়েও প্রভাব ফেলেছে। যেমন, বীরত্ব, মর্যাদা, দায়িত্ব ও আস্থার উপর আমার বিশ্বাস অনেক বেড়েছে। এসব আমার জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"

    ওয়াং শু চেং বলেছেন, তিনি দুইটি বিষয়ের ওপর বই লিখতে চান। একটি বিষয় হলো চীনের বিপ্লবের ইতিহাস। এর মধ্যে রয়েছে, "দূর-প্রাচ্য উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধ", "লং মার্চ" এবং "মুক্তি যুদ্ধ"। আরেকটি বিষয় হলো চীনের আধুনিক ইতিহাস। এর মধ্যে রয়েছে "১৯০১", "১৯১১" এবং "১৯২১" সালের ঘটনাবহুল ইতিহাস। তিনি বলেছেন, তাঁর আশা হলো যুবকরা তার বইগুলোর মাধ্যমে চীনের ইতিহাস জানবে। তিনি বলেছেন:

    "আধুনিক যুবকরা চীনের ইতিহাস সংক্রান্ত যথেষ্ট জ্ঞান আয়ত্ত করেনি। একটি জাতির উচিত ইতিহাসের মত মূল্যবান ধনকে হৃদয়ে লালন করা। ইতিহাস হলো একটি জাতির ভবিষ্যত পথের উজ্জ্বল আলোক বর্তিকা। এমন একটি পরিণত পৃথিবীতে নিজের আস্থা হারিয়ে যাবে না। চীনা জনগণ এমন একটি জাতি যাদের বেঁচে থাকার আস্থা সবচেয়ে দৃঢ় এবং শক্তিশালী।"

    ২০০০ সালে মার্কিন টাইমস প্রকাশনা সংস্থা একটি বই প্রকাশ করেছে। বইতে ১০০০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত মানব জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১০০টি ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয়। চীনের রেড ফৌজের লং মার্চ এর মধ্যে একটি। ওয়াং শু চেং মনে করেন চীনের যুবকযুবতীরা লং মার্চের উপর যথেষ্ট দৃষ্টি দেয়নি। পক্ষান্তরে, এই কয়েক বছরে কিছু বিদেশী ছাত্র নিজের প্রচেষ্টায় আবার লং মার্চের পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়েছে। এ নিয়ে ওয়াং শু চেং বলেছেন:

    "আমি বিশ্বাস করি তারা লং মার্চের পথে এক রকম মর্ম খোঁজার চেষ্টা করছে। তা হলো মানব জাতির একটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য কতটা চেষ্টা চালানো যায়। এটা মানব জাতি'র জন্য খুবই মূল্যবান ইতিহাস।"

    এই বই লেখার জন্য ওয়াং শু চেং অসংখ্য তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এই বইয়ে লং মার্চের কিছু অজানা গল্পও রয়েছে। ওয়াং শু চেং মনে করেন, এই বই লেখার প্রক্রিয়ায় তার নিজের চিন্তাধারাও অনেক উন্নত হয়েছে। চীনের রেড ফৌজের আদর্শ তাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেছেন:

    "চীনের কৃষক হলো বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র্য গ্রুপ। রেড ফৌজ তাদের গ্রামে এসে তাদের বলেছে, জীবনের শুরুতেই তোমরা ক্রীতদাস নয়। তোমরা মানুষ হিসেবে বাঁচতে পারো। তারা এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জীবন উত্সর্গ করেছে। কিন্তু এই স্বপ্ন পোষণ করে প্রাণ হারিয়ে গেলেও তারা আনন্দ বোধ করে।"

    ওয়াং শু চেংয়ের মতে লং মার্চ একটি বিরল ঘটনা। এ ইতিহাস সঠিকভাবে জানলে মানুষ মুগ্ধ হবে। এবং চীনের ভবিষ্য নিয়ে চিন্তা করা ও সুন্দর ও সফল চীন গড়ার ক্ষেত্রে নিজেদের উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হবে।