v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-12 13:35:48    
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চীনকে ইতিবাচক মূল্যায়ন করে

cri

    পাঁচ বছর আগে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদান করেছে । গত পাঁচ বছর চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার একটি দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে সক্রিয়ভাবে যোগদানের সময় দেয়া প্রতিশ্রুতি পালন করেছে কি? আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গত পাঁচ বছরে চীনের অগ্রগতি কিভাবে মূল্যায়ন করে?

 সম্প্রতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মুখপাত্র আনুশ দার বোঘোসিয়ান জেনিভায় আমাদের সংবাদদাতাকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাত্কারে বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অন্তর্ভুক্তির পর চীন সংস্কার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উন্মুক্ত বাজারসহ নানা ক্ষেত্রে বিরাট প্রচেষ্টা চালিয়ে লক্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি বলেছেন, "২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের পর চীনের সংস্কার প্রক্রিয়া আরো দ্রুততর হয়েছে। চীন ধারাবাহিক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিজের আইন ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মকানুনের সঙ্গে সংগতিপুর্ণ করেছে। এর ফলে চীনের অর্থনীতি ও বাণিজ্যের উন্মুক্তকরণের মাত্রা আরো বেড়েছে। এখন চীন হচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আমদানী ও রপ্তানীকারক দেশ। ২০০৫ সালে চীনের রপ্তানীর মূল্য জাপানকে ছাড়িয়ে গেছে। "

 পাঁচ বছর আগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক নিয়ম মেনে চলা ও ধাপে ধাপে বাজার উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে চীন তার দেয়া নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি পালন করছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চীনের অনেক শিল্পের ভিত্তি তখন স্থিতিশীল ছিল না। ফলে কিছু কিছু বিদেশী ব্যক্তি চীনের প্রতিশ্রুতির ওপর সন্দেহ পোষণ করতেন। কিন্তু পাঁচ বছর পর চীন বাস্তব কার্যকলাপের মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে তার প্রতিশ্রুতি পালন করেছে। চীনের বাজার আরো উন্মুক্ত ও নিয়মমাফিক হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, চীন প্রতি বছর শুল্কের হার হ্রাস করেছে। চীন বিভিন্ন কার্যক্রমের পাশাপাশি মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের বিষয়টিকেও জোরদার করেছে। চীনের কাজকর্ম ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রশংসা পেয়েছে।

 মার্কিন ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌশল ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিষয়ক অধ্যাপক আনিল গুপ্তা মনে করেন, চীন বহু ক্ষেত্রে ভালভাবে নিজের প্রতিশ্রুতি পালন করেছে। তিনি বিশেষ করে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, "কিছু ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতি খুবই স্পষ্ট। যেমন চীন খুচরা-বিক্রি বাজার ও পাইকারী বিক্রি বাজার উন্মুক্ত করেছে। কিন্তু আমি মনে করি, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ ক্ষেত্রেও চীন গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিশেষ করে চলতি বছর চীন সরকার অত্যন্ত কড়াকড়িভাবে মেধাস্বত্ব আইন কার্যকর করেছে।"

 বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মুখপাত্র আনুশ দার বোঘোসিয়ান মনে করেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের অন্তর্ভুক্তি এই সংস্থার অন্যান্য সদস্যদের জন্য সুযোগ বয়ে এনেছে। চীন কেবল এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দেশ তাই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেছেন, "বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ও এই সংস্থার সদস্য সবাই মনে করে, পাঁচ বছর আগে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের অন্তর্ভুক্তি এই সংস্থার সকল সদস্যের জন্য বিরাট বাজার সৃষ্টি করেছে। চীনের বাজার বিশাল ও উন্মুক্ত। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিভিন্ন সদস্য এখানে নানা ধরনের সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমি বিশ্বাস করি, দোহা আলোচনায় চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।"

 ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্যিক সদস্যের তথ্য কর্মকর্তা স্টিফেন অ্যাডামস বলেছেন, "ই ইউ মনে করে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীনের অন্তর্ভুক্তি আমাদের উভয়ের জন্যেই বিরাট সফলতার দিক। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্যের মর্যাদা ও বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় এর বিনিময় হচ্ছে চীনের অর্থনীতির সমৃদ্ধি বজায় রাখার ভিত্তি। ইউরোপের দৃষ্টিতে , চীনের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগদান করা মানে ইউরোপের আরো নিরাপত্তার সঙ্গে আরো বেশি সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চীনের বাজারে প্রবেশ করা। কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের শুল্ক হ্রাসের ফলে ইউরোপের চীনের বাজারে প্রবেশ ত্বরান্বিত করেছে। "

 সেপ্টেম্বর মাসে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীনের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় অন্তর্ভুক্তির পর বিদেশী পুঁজি বিনিয়োগকারীরা চীন থেকে মোট ৫৭.৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মুনাফা পেয়েছেন। এর পাশাপাশি চীন প্রায় ২.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানী করেছে। চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য বিস্তৃত বাজার সরবরাহ করেছে, বিভিন্ন দেশের পুঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ বয়ে এনেছে এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রবল চালিকাশক্তির সৃষ্টি করেছে।