v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2006-12-11 17:50:47    
মার্কিন-ভারত পারমাণবিক সহযোগিতা সম্পর্কে চীনা বিশেষজ্ঞের মতামত

cri

    সম্প্রতি মার্কিন জাতীয় সংসদ ভারতকে পারমাণবিক জ্বালানি সম্পদ ও প্রযুক্তি বিক্রি করা সংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদন করেছে। একই সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্র কেন ইরান ও উত্তর কোরিয়াকে ভারতের মতো সমান সুযোগ দেবে না? যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকলাপ কি ধরনের বিপদ সৃষ্টি করবে? চীনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক রুন জোং জে ১১ ডিসেম্বর আমাদের সংবাদদাতাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, পারমাণবিক সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্রের দু'রকম মানদন্ড আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অবিস্তার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে একটি চ্যালেঞ্জ।

 রুন জোং জে মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে পারমাণবিক সহযোগিতার দুটি প্রধান কারণ রয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ মনে করে, ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করা দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সহায়ক হবে। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভারত ইতোমধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের দ্বারে পৌঁছে গেছে। এখন এ ধরনের সহযোগিতা ভারতের পারমাণবিক উন্নয়নকে এক নিয়মমাফিক কক্ষপথে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যও সহায়ক হবে। রুন জোং জে বলেছেন, "পৃথিবীতে আবির্ভুত নতুন শক্তির পরিবর্তনের মোকাবেলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা করছে। আরেকটি কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় তার প্রভাব ফেলতে চায়। আমরা জানি, দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক প্রযুক্তি অধিকারী দুটি দেশ আছে, তা হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। ফলে যুক্তরাষ্ট্র এক দিকে পাকিস্তানকে চাপ দেয়, অন্য দিকে ভারতকে সমর্থন করে। এ থেকে প্রতিপন্ন হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক নীতি পরিবর্তিত হয়েছে।"

 এর পাশাপাশি, কোরিয় উপদ্বীপের পারমাণবিক সমস্যা ও ইরানের পারমাণবিক সমস্যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। স্পষ্টতই, পারমাণবিক সমস্যায় ভারতের প্রতি এবং ইরান ও উত্তর কোরিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব ভিন্ন। ভারতের তথ্য মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিছার্ড বোছার ১১ সেপ্টেম্বর বালির্নে সংবাদদাতাদের বলেছেন, পারমাণবিক সমস্যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সত্যি ইরান ও ভারতের প্রতি দু'রকম মানদন্ড অনুসরণ করেছে। রুন জোং জে বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্র নিজেও স্বীকার করেছে যে, তারা দু'রকম মানদন্ড অনুসরণ করেছে। আমি মনে করি, এখন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মুখীন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নিজের কার্যকলাপের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে না পারা। কারণ ভারতের সঙ্গে পারমাণবিক সহযোগিতা করলে যুক্তরাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রেও বিরাট বাধার সম্মুখীন হবে। এই বাধা হচ্ছে ১৯৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত "আণবিক শক্তি আইন"। এই আইনটিকে সংশোধনের পর কেবল যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পারমাণবিক সহযোগিতা করতে পারে। কারণ এই আইনে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র "পারমাণবিক অবিস্তার রোধ চুক্তি" স্বাক্ষর করে নি এমন কোন দেশের সঙ্গে পারমাণবিক সহযোগিতা করতে পারবে না। "

 অর্থাত্ যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে পারমাণবিক সহযোগিতা করতে চাইলে প্রথমে আইনগত বাধা দূর করতে হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পারমাণবিক সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি মার্কিন জাতীয় সংসদে সুষ্ঠুভাবে গৃহীত হয়েছে, কিন্তু এখনো কিছু সাংসদ এর ওপর সন্দেহ ও বিরোধিতা করছেন। তাঁরা মনে করেন, এটা "পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি" লঙ্ঘন করবে। ভারতের একজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারত এক বছর আরো ৫০টি পারমাণবিক হ্যাড অতিরিক্ত উত্পাদন করতে পারবে। জনমত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তির অনুমোদন দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন দফা পারমাণবিক সমরসজ্জার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সৃষ্টি করবে।

 এখন পর্যন্ত ১৮০টিরও বেশি দেশ "পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি" স্বাক্ষর করেছে। পারমাণবিক অস্ত্র অবিস্তার ব্যবস্থা পৃথিবীতে ব্যাপক স্বীকৃতি পেয়েছে। ভারত, পাকিস্তান, ইস্রাইল হচ্ছে অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর না করা দেশের অন্যতম। রুন জোং জে মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের পারমাণবিক সহযোগিতা খুবই বিপদজনক।