চীন সরকার সম্প্রতি আগামী ৫ বছর আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কর্মসূচী প্রকাশ করেছে । কর্মসূচীতে বলা হয়েছে যে, বৈদেশিক উন্মুক্ততা সম্প্রসারণ করা হবে বলে উল্লেখ রয়েছে । ভিন্ন দেশ , ভিন্ন অঞ্চল এবং ভিন্ন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সংস্থার বৈশিষ্ট্য ও চাহিদা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার নতুন কাঠামো গঠন করা হবে এবং সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মানকে উন্নত করা হবে ।
চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্যু কুয়ানহুয়া বলেছেন , চীন ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র , জাপান , দক্ষিণ কোরিয়া সহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করবে । বুনিয়াদী গবেষণা , সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তব সাফল্য অর্জন করার চেষ্টা চালাবে । স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের কমনওয়েল্থ এবং ভারত ও ব্রাজিলসহ অন্যান্যদেশের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রসম্প্রসারিত করবে এবং পরস্পরের পরিপূরক হয়ে অভিন্নভাবে উন্নয়নের উদ্যোগ নেবে । এশিয়া , আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অনুন্নত দেশের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার উপর গুরত্ব দেবে । উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রযুক্তিগত সাহায্য ও প্রশিক্ষণের বিষয়টিকে জোরদার করবে । এর পাশাপাশি ই ইউ , আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা ও বিনিময় জোরদার করবে ।
আগামীকালের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার কর্মসূচী অনুযায়ী চীন সংশ্লিষ্ট দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা চালাবে । জ্বালানী শক্তি ও পানি সম্পদের উন্নয়ন ,পরিবেশ রক্ষা, খাবারের নিরাপত্তানিশ্চিত করা এবং গণ স্বাস্থ্যের মান উন্নয়ত করাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেবে ।
জানা গেছে , এখন চীন দেড়শ'টি দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে এবং প্রায় একশ'টি দেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে । জ্বালানী শক্তিতে চীন ইতালি ও নেদারল্যান্ডসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করছে । বায়ু ও সৌরশক্তির উন্নয়নে অগ্রগতি লাভ করেছে । গত ৫ বছর কৃষি ক্ষেত্রেচীন ১২০০টি সর্বাধুনিক প্রযুক্তিআমদানি করে খাদ্যের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করেছে । তাছাড়া , চীন সক্রিয়ভাবে মানবজাতির জিন পরিকল্পনা সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছে ।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায়পূর্ব চীনের সানতুং প্রদেশ অত্যন্ত তত্পর রয়েছে । সানতুং প্রদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মকর্তা মাদাম চাই লুনিং বলেছেন, গত ৫ বছরে সানতুং প্রদেশ ই ইউর ১২টি কাঠামোগত কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছে । এর মধ্যে রয়েছে জার্মানির এক গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতায় ৩ কোটি ইউরো বিনিয়োগ করে বার্ষিক ৫০ হাজার টন জৈব তেল ও শ্রেষ্ঠ গুণগতমানের ১০ হাজার টনের সিনথেটিক জৈব-ডিজেল প্রকল্প ।
তাছাড়া সানতুং প্রদেশ যুক্তরাষ্ট্র , জাপান ও আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে নানা ধরনের সহযোগিতা ও বিনিময় কার্যক্রম শুরু করেছে । এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে , গত ৫ বছরে চীন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় মোট ৮০০ কোটি রেনমিনপি বরাদ্দ করেছে ।পরবর্তী বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে যে অর্থ ব্যয় করা হবে তা বিপুলপরিমাণে বাড়ানো হবে । আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মান আরও উন্নত করা হবে । এ সম্পর্কে চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্যু কুয়াংহুয়া বলেছেন , চীন রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরিকল্পনার বৈদেশিক উন্মুক্ততার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করবে । রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগতপ্রকল্প সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিময়ে অংশ নেবে । মিলিতভাবে গবেষণা সংস্থা ও কেন্দ্রগড়ে তোলা , বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিকর্মীদের সফর বিনিময় সহ যৌথ গবেষণা সংস্থাপ্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে ।
|