২০০৬ সালের বিশ্ব টেলিযোগাযোগ প্রদর্শনী ৩ ডিসেম্বর চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক এলাকায় শুরু হয়েছে । এবারের প্রদর্শনী ইতিহাসের বৃহত্তম প্রদর্শনী। ৬০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের প্রদর্শনীটিতে চল্লিশটিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের ৬০০রও বেশি টেলিযোগাযোগ শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রদর্শনীটিতে অংশ নিচ্ছে ।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ প্রদর্শনী আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের উদ্যোগে আয়োজিত টেলিযোগাযোগ প্রকৌশল ও সরঞ্জামের এক বৃহত্তমপ্রদর্শনী । ১৯৭১ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯টি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে । চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলসরকারের উদ্যোগে যে প্রদর্শনীআয়োজিত হয়েছে তা হল প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের সদরদপ্তর জেনিভার বাইরে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনী। ৫দিনব্যাপী প্রদর্শনীটিতে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রের নতুন উত্পাদক , নতুন কাজ, নতুন প্রকৌশল ও উন্নয়নের প্রবণতার বিষয়গুলো প্রদর্শিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো বিভিন্ন দেশের তথ্য শিল্পের আদানপ্রদান ও সহযোগিতা জোরদার করার নানা তত্পরতার আয়োজন করেছে । আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের ১৫০টি সদস্য দেশের সরকারী কর্মকর্তা ও টেলিযোগাযোগ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টব্যক্তিরা এই সব তত্পরতায় অংশ নেবেন এবং সহযোগিতা জোরদারের নতুন পদ্ধতি ও উপায় খুঁজে বের করবেন ।
আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের মহাসচিব ইয়োশিও ইউত্সুমি বলেছেন , আমরা এই সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রগতিশীলতারবীজ বপন করব । এখন আমাদের মিলিতভাবে চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করার সময় ঘনিয়ে এসেছে । আমরা শুধু টেলিযোগাযোগের প্রকৌশলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করব না বরং আরও বেশি মানুষের উপকার করার জন্যে মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালাব ।
চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান উ পাংকো ৩ ডিসেম্বরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন , বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ানো , আদানপ্রদান ও সহযোগিতা জোরদার , মিলিতভাবে টেলিযোগাযোগ শিল্পের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং মানবজাতির সভ্যতার উন্নয়নে টেলিযোগাযোগের প্রকৌশলের ইতিবাচক ভূমিকা পালনে প্রদর্শনীটিঅত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাত্পর্যসম্পন্ন ।
উ পাংকো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল দেশীবিদেশী অতিথিদেরকে চীনের টেলিযোগাযোগ শিল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেছেন । তিনি বলেছেন , টেলিযোগাযোগ শিল্প ইতোমধ্যে চীনের জাতীয় অর্থনীতির এক স্তম্ভশিল্প ও অগ্রগামী শিল্পে পরিনত হয়েছে । চীন এখন বিশ্বে বৃহত্তম , দ্রুততম বেড়ে যাওয়া টেলিযোগাযোগ বাজারে পরিণত হয়েছে । চীনে দেশব্যাপী , বিশ্বে ছড়ানো এবং প্রগতিশীল জাতীয় টেলিযোগাযোগের এক বুনিয়াদী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে । আকার এবং গ্রাহকের সংখ্যার দিক থেকে চীন বিশ্বে প্রথম স্থানের অধিকারী । তিনি বলেছেন , চীন সরকার ভবিষ্যতেও টেলিযোগাযোগ শিল্পের উন্নয়নে সমর্থন করতে থাকবে । তথ্য প্রকৌশলের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার জোরদার করবে এবং আঞ্চলিক , শহর ও গ্রামাঞ্চলের টেলিযোগাযোগ পরিসেবার সুষম উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে ।
উ পাংকো বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন , চীন বৈদেশিক উন্মুক্ততার মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতিতে অটল থেকে সমতা এবং পারস্পরিক উপকারিতার নীতি অনুসরণ করে টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করবে । যাতে বিশ্বের তথ্য ও টেলিযোগাযোগ ব্রতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায় । তিনি বলেছেন, আমরা আন্তরিকভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও বিভিন্ন অঞ্চলের শিল্পপতিদের চীনের বাজার উন্নয়নেঅর্থ বিনিয়োগ করতে আসাকে স্বাগত জানাই ।আন্তর্দেশীয় কোম্পানিকে চীনে এসে গবেষণা কেন্দ্রপ্রতিষ্ঠা করে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রকৌশল উন্নয়ন করার জন্যে স্বাগত জানাই । চীন সরকার আইন অনুযায়ী সকল বিদেশী অর্থবিনিয়োগকারীদের বৈধ অধিকার, বিভিন্ন দেশের মেধাস্বত্ত্ব ও অধিবাসীদের বৈধ স্বার্থকেরক্ষা করবে । দৃঢ়তার সঙ্গে অধিকার লংঘন ও নকল প্রকাশের আচরণ দমন করবে । আমরা চীনের শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক প্রকৌশল সহযোগিতা চালাতে উত্সাহ দেই ।
|